স্থবিরত্ব কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত এবি মাথুরকে নিয়োগ করায় স্বস্তি পেয়েছেন আলোচনাপন্থী আলফা নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, প্রথমাবস্থায় আলফা-সরকার শান্তি আলোচনার জন্য নিয়োজিত ছিলেন পিসি হালদার নামের দুঁদে কেন্দ্রীয় আমলা।প্রসঙ্গত র-এর প্রাক্তন কর্তা এবি মাথুর মণিপুর-ত্রিপুরা ক্যাডারের ১৯৭৫ সালের আইপিএস আধিকারিক। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলংকা এবং চীনের ওপর কাজ করে ইতিমধ্যে অভিজ্ঞ কূটনীতিক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, অসমকে একটি সার্বভৌম স্বাধীন দেশের দাবিতে ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল শিবসাগরের রংঘরে গঠন হয়েছিল ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (আলফা)-এর। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে ন্যাশনালিস্ট সোশালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড (এনএসসিএন) এবং ১৯৮৭ সালে মায়ানমার (বার্মা) ভিত্তিক কেআইএ-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে অসমে ব্যাপক নাশকতা সংঘটিত করতে থাকে এই সংগঠন। ১৯৯০ সালে আলফাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সেনা অভিযান চলে তাদের বিরুদ্ধে।
সিংহভাগ নেতা গিয়ে আশ্রয় নেন বাংলাদেশে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর উগ্রপন্থী সংগঠনটির চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া এবং ডেপুটি কমান্ডার-ইন চিফকে ভারতের হাতে প্রত্যর্পন করে বাংলাদেশ। সে থেকে আলফা বেশ নরম হয়ে যায়। ফাটল ধরে যায় আলফায়। আটক আলফা নেতারা সরকার ও মধ্যস্থকারী পিসি হালদারের চাপে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে নরম মনোভাব ব্যক্ত করে স্বাধীন দেশের দাবি থেকে সরে শান্তি আলোচনায় আসতে রাজি হন তাঁরা। ইতিমধ্যে ২০১১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র, রাজ্য এবং আলফা নেতাদের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় দিল্লিতে।
এর পর অনেক জল গড়ায়। পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে বন্দি বাংলাদেশের জনৈক নুর হোসেনকে ছাড়ার বিনিময়ে ঢাকা দিল্লির হাতে তুলে দেয় আলফার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেতিয়া ওরফে গোলাপ বরুয়াকে। জাল পাসপোর্ট মামলায় ১৯৯৭ সালে ঢাকায় গ্রেফতার হয়েছিলেন অনুপ চেতিয়া ওরফে গোলাপ বরুয়া। টানা সাত বছর তিনি ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। অবশেষে তাদের দুজনকেই দুই দেশ পরস্পর পরস্পরের হাতে তুলে দেয় ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর। এটা ভারতের এক সফল কূটনীতি বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে আলফা চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়ারারা শান্তি আলোচনায় আসতে রাজি হলেও বিগড়ে বসেন সংগঠনের সেনাধ্যক্ষ পরেশ বরুয়া। তিনি ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন সার্বভৌম দেশের দাবিতে অটল অবস্থান নিয়ে সংগঠনের পৃথক নাম দেন ‘আলফা স্বাধীন’। পরেশ বরুয়া অজ্ঞাতস্থানে আস্তানা গেঁড়ে ‘আলফা স্বাধীন’কে পরিচালনা করে চলেছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসই/সূত্র:যুগশঙ্খ অনলাইন