মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ০৪:০৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
রাষ্ট্রপতির কাছে তিন অনাবাসিক রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ আজিজ-বেনজীর কাদের সৃষ্টি, প্রশ্ন ফখরুলের মোবাইলের পাশাপাশি ল্যান্ডফোনে গুরুত্ব দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রাজধানীর ১৮ ওয়ার্ড ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা দূর করতে কাজ করছে ডিএমপি : জাইকা ট্রেনের ফিরতি যাত্রার আসন বিক্রি শুরু ১০ জুন অন্তরঙ্গ ছবি-ভিডিও ফাঁস, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন অভিনেত্রী রাজধানীতে ঝড়-বৃষ্টি-বাতাস, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ মৃত্যু ঝড়ের রাতে প্রবাসীর বাড়িতে দাদি-নাতিকে কুপিয়ে হত্যা বেনজীর, স্ত্রী ও মেয়ের বিও হিসাব অবরুদ্ধ এবি ব্যাংকের বোনাস লভ্যাংশ বিতরণে বিএসইসির সম্মতি খালেদা জিয়ার খনি দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি ৫ আগস্ট উপজেলা ভোট : আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৩০০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ঝড়ে উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ফায়ার ফাইটারের মৃত্যু গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, নিহত ছাড়াল ৩৬০০০ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত চাঁদপুরে, ঢাকায় ২২৪ মিলিমিটার দেড়লাখ মানুষ পানিবন্দি, ভেসে গেছে হরিণসহ দুই হাজারের বেশি পশু চট্টগ্রামে ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত রপ্তানি বাড়াতে অঞ্চলভিত্তিক আম প্যাকেজিং হাউজ তৈরিসহ ৮ দাবি

বড়পুকুরিয়া খনিতে দুর্নীতির আলামত পেয়েছে দুদক

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ২৩ জুলাই, ২০১৮
  • ১৫৫ বার পড়া হয়েছে
প্রাথমিক তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুদক দিনাজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

বাংলা৭১নিউজ, দিনাজপুর প্রতিনিধি:  দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় দুর্নীতির আলমত পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

প্রাথমিক তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের এমন কথা জানিয়েছে দুদকের কর্মকর্তারা।

কয়লা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে-সঠিক তদন্ত হলে কয়লা চুরির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে। এক্ষেত্রে খনির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে কয়লার অভাবে ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিনাজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত টিম সোমবার বেলা পৌনে ৩টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে প্রবেশ করেন।

দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তদন্ত শেষে উপপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানান, তারা কয়লা খনির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেন, খনির কোল ইয়ার্ডে এক লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা। কিন্তু কোল ইয়ার্ডে রয়েছে মাত্র দুই হাজার টন কয়লা। বাকি এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লার কোনো হদিস নেই।

তিনি জানান, বিপুল পরিমাণ কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ায় এখানে প্রাথমিক তদন্তে দুর্নীতির আলমত পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যেই তারা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় দুদক অফিসে জানিয়েছেন। খনির কয়লা গায়েবের ঘটনায় ইতিমধ্যে দুজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত, এমডিকে অপসারণ এবং একজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় দুদক অফিসের কর্মকর্তারা কথা বলবেন।

সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ করতে ৬০ দিন সময় লাগবে। কেন্দ্রীয় দুদক অফিসের তদন্ত শেষেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বেনজীর আহমেদ।

খনির কোল ইয়ার্ড থেকে কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কয়লা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, কয়লা বিক্রিতে অনিয়ম ও কয়লা চুরি এই খনিতে নিয়মে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে বেশকিছু কর্মকর্তা টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে।

কয়লা ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, এর আগেও ২০১৭ সালে ৩০০ টন কয়লা চুরি হয়, যা পরবর্তীতে ফাঁস হয়ে যায়। এরপর খনির কর্মকর্তারা রাতারাতি সেই ৩০০ টন কয়লার টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে সমন্বয় করেছে।

তিনি জানান, এরকম অনেক চুরির ঘটনা রয়েছে, যা প্রকাশ হয়নি। এবার ১ লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা অবশেষে কয়লা চুরির রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।

কয়লা ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে এখানে কয়লা বিক্রি করে আসছে কয়েক কর্মকর্তা। কয়লা খনির স্বার্থে জড়িত কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের সদ্য অপসারণ হওয়ায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিবউদ্দীন আহমদ জানান, ১ লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস।

তিনি দাবি করেন, গত ১১ বছরে এক কোটি ১০ লাখ টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে এর মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা সিস্টেম লস। কোল ইয়ার্ড কখনোই খালি না হওয়ায় তারা এই সিস্টেম লস আগে বুঝতে পারেননি।

এদিকে কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন। রোববার রাত ১০টা থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বন্ধ রয়েছে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ।

বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল হাকিম সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি. (বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি) কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় তারা তাপবিদুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।

তিনি জানান, কয়লা উৎপাদন বন্ধের ফলে উত্তরাঞ্চলে কোনো বিদ্যুৎ ঘাটতি হবে না। জাতীয় গ্রিড থেকে বিকল্প উপায়ে এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, একটি ফেস থেকে নতুন ফেসে যন্ত্রপাতি স্থানান্তরের জন্য গত ১৬ জুন থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পুনরায় কয়লা উত্তোলন শুরু হবে আগামী আগস্ট মাসের শেষের দিকে। এই সময়ের মধ্যে পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার মজুদ রয়েছে বলে গত ২০ জুন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবিকে নিশ্চিত করে খনি কর্তৃপক্ষ।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান, গত ২০ জুন খনি কর্তৃপক্ষ পিডিবিকে নিশ্চিত করে খনির কোল ইয়ার্ডে ১ লাখ ৮০ হাজার টন কয়লা মজুদ রয়েছে। মজুদকৃত এই কয়লা দিয়ে আগস্ট মাস পর্যন্ত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখা যাবে বলে নিশ্চিত করে খনি কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু জুলাই মাসের শুরু থেকেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে হঠাৎ কয়লার সরবরাহ কমিয়ে দেয় খনি কর্তৃপক্ষ। খনি কর্তৃপক্ষ গত ৪-৫ দিন আগে পিডিবিকে জানিয়ে দেয়, খনির কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুদ শেষপর্যায়ে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বেশি দিন কয়লা সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় গত রোববার থেকে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেয় খনি কর্তৃপক্ষ। ফলে কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় তার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হওয়ায় পেট্রোবাংলা ও খনি কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পেট্রোবাংলা এক অফিস আদেশে খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

এছাড়াও ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদকে অপসারণ করে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের দফতরে সংযুক্ত করা হয় এবং মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কোম্পানি সচিব) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড সিরাজগঞ্জে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়। বড়পুকুরিয়া খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খানকে। সূত্র: একরাম তালুকদার, যুগান্তর অনলাইন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com