বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: বিমানবাহী রণতরীর বহর আমেরিকার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্ব হারাতে পারে। এমনকি যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় হামলার মুখে পড়তে হতে পারে মার্কিন নৌবাহিনীকে।
যেভাবে নতুন প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি করে যাচ্ছে চিন এবং রাশিয়াসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ, তাতে খুব সহজেই এসব রণতরীর ওপর হামলা চালাতে পারবে। সেন্টার ফর অ্যা নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির ‘দ্যা রেড অ্যালার্ট: গ্রোয়িং থ্রেট টু ইউ.এস. এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার্স’ নামের সমীক্ষা-প্রতিবেদনে এমনই চাঞ্চল্য তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
চাঞ্চল্যকর ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আমেরিকা এখনও রণতরী ব্যবহারের মতো মান্ধাতার আমলের কৌশলে আটকে রয়েছে। অথচ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে এককালে দুর্জেয় হিসেবে বিবেচিত মার্কিন রণতরীর বিরুদ্ধে এখন সহজেই হামলা চালানো হতে পারে। প্রযুক্তির উন্নয়নে এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে চিন।
মার্কিন নৌবাহিনীর জন্য মারাত্মক বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে ‘এরিয়া ডিনাইল’ নামের পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে যুদ্ধ এলাকায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। ফলে কার্যকরভাবে লড়াইয়ের জন্য মার্কিন বিমানবাহী জাহাজগুলো যুদ্ধ এলাকার কাছে ঘেঁষতে পারবে না। অথবা পারলেও এজন্য দিতে হবে চড়ামূল্য। এ কাজ করতে গিয়ে বিমানবাহী রণতরী ও তার বিমানগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এমনকি ধ্বংসের মুখে পড়তে পারে।
এরিয়া ডিনাইলের জন্য নতুন বিমান, ড্রোন প্রযুক্তি, সাবমেরিন এবং এমনকি বিমানবাহী রণতরী বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার হতে পারে। গত মাসে ইরানের ড্রোন নির্বিঘ্নে মার্কিন বিমানবাহী জাহাজ হ্যারি এস ট্রুম্যানের ওপর দিয়ে উড়ে ছবি ও ভিডিও তুলে এনেছিল।
চিন দ্রুত গতিতে মার্কিন নৌবহরের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। দেশটির হাতে বর্তমানে বিমানবাহী রণতরী বিধ্বংসী দু’রকমের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এগুলো হলো ডিএফ২১ডি এবং ডিএফ-২৬। এসব ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে চিনের উপকূল থেকে গুয়াম দ্বীপের উপকূলে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা সম্ভব হবে। চিন উপকূল থেকে দ্বীপটি প্রায় ২,০০০ মাইল দূরে অবস্থিত।
এছাড়া, বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চিন সাগরের কৃত্রিম দ্বীপে এইচকিউ-৯ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে বেজিং। ফলে এটি মার্কিন বিমানবাহী জাহাজের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। তুলনামূলকভাবে তাদেরকে এখন অনেক কাছাকাছি থেকে রণক্ষেত্র মোকাবেলা করতে হতে পারে। দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র দিয়ে হামলার বদলে এখন স্বল্পপাল্লার অস্ত্রের ঘন ঘন হামলার মুখে পড়তে হতে মার্কিন জাহাজগুলোকে।
প্রতিবেদনে আমেরিকার জন্য হুমকি হিসেবে রাশিয়ার নামও উল্লেখ করা হয়েছে। গত নভেম্বরে রাশিয়া উচ্চ প্রযুক্তির এসএ-২১ ‘গ্রোলার’ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে সিরিয়ায়। শুধু সিরিয়া নয় বরং পূর্ব ভূমধ্যসাগরের বেশিরভাগ এলাকায় এ দিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে হামলা চালাতে পারবে রাশিয়া।
ফলে প্রতিবেদনের আমেরিকার রণতরীগুলিকে যত দ্রুত সম্ভব আধুনিক করে তোলার জন্যে বলা হয়েছে। না হলে আগামিদিনে সমূহ বিপদ মার্কিন নৌসেনার কাছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি