বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: তাঁর কথা বলার মধ্যে একধরনের আকর্ষণ আছে। খুব শান্ত, ধীরস্থির হয়ে প্রতিটি শব্দ আলাদা করে উচ্চারণ করেন। যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কোনো জটিল বিষয় বোঝাচ্ছেন। কে জানে, এ কারণেই কিনা ব্রাজিল কোচ তিতেকে তাঁর খেলোয়াড়েরা ‘প্রফেসর’ নামে ডাকেন।
তো, প্রফেসরের কাছে কাল জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ‘পাহাড়’ টপকানো নিয়ে। সার্বিয়ান খেলোয়াড়দের বেশির ভাগই লম্বা। তাঁদের উচ্চতা ব্রাজিলের জন্য একটা বড় সমস্যা হতে পারে বলে অনেক কথাবার্তা হয়েছে গত কয়েক দিনে। সার্বিয়ান খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা প্রায় ১৮৬ সেন্টিমিটার, যা এই বিশ্বকাপের সব দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
অন্যদিকে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা প্রায় ১৭৯ সেন্টিমিটার। বাতাসে ভেসে আসা বলে তাই ব্রাজিলিয়ানদের চেয়ে একটু বেশি সুবিধা পেতে পারে সার্বিয়া। এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত একমাত্র যে গোলটা খেয়েছে ব্রাজিল (সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে), সেটাও কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেডে। তো এটা নিয়ে কী পরিকল্পনা ব্রাজিলের?
কোচের আগেই উত্তর দিয়েছেন ব্রাজিল ডিফেন্ডার মিরান্দা, ‘এটা আমাদের মাথায় আছে। আমরা জানি, ওরা সেটপিসে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। আর এ রকম সেটপিস থেকে পাওয়া একটা গোলই ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। আমরা এটা মাথায় রেখেই অনুশীলন করেছি।’ সঙ্গে তিতে যোগ করেছেন, ‘নিজের দক্ষতা দিয়ে উচ্চতার বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’
কাল সংবাদ সম্মেলনে তিতেকে পাওয়া গেছে চিরচেনা মেজাজে। নইলে মেজাজ হারানোর মতো প্রশ্ন তো আর কম হয়নি! ব্রাজিলের খেলোয়াড়েরা এত কাঁদেন কেন, ফ্যাবিও ক্যাপেলো যে নেইমারকে ভাইভার বলেছেন—এ বিষয়ে আপনার কী মত? এমন আরও অনেক কিছু। কিন্তু ব্রাজিল কোচ মাথা গরম করলেন না একটিবারের জন্যও।
কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচের পর নেইমারের কান্না নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কালও যেমন তিতেকে জিজ্ঞেস করা হলো, এর মানে কি ব্রাজিল খেলোয়াড়েরা মানসিকভাবে যথেষ্ট শক্ত নন? তিতে হেসে হেসে বললেন, ‘কান্না মানেই কিন্তু সব সময় এটা বোঝায় না যে আপনি মানসিকভাবে দুর্বল। এর মানে আপনি ব্যাপারটার সঙ্গে খুব ভালোভাবে জড়িত।
বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ইকুয়েডরের বিপক্ষে একটা ম্যাচের পর আমি নিজেও কেঁদেছি। সেই কান্না ছিল খুশির। খেলোয়াড়দের ওইভাবে পারফর্ম করতে দেখার আনন্দে। যখন আপনার ওপর প্রত্যাশার বিশাল চাপ থাকবে এবং আপনি সেটা পূরণ করবেন, আবেগপ্রবণ হতেই পারেন। এ কারণেই তো আমরা ব্রাজিলিয়ান। আমি যেটা খেলোয়াড়দের বলি, আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে যাতে নিয়ন্ত্রণটা থাকে।’
কোস্টারিকার বিপক্ষে ওই ম্যাচের পরই ইতালিয়ান কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলো দাবি করেছেন, নেইমার অভিনয় করেন মাঠে। তাঁকে ‘ডাইভার’ও বলে দিয়েছিলেন সাবেক ইংল্যান্ড কোচ। এ বিষয়ে তিতের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে ব্রাজিল কোচ খুব শান্ত কণ্ঠে বলেছেন, ‘ক্যাপেলো, আপনি যেটাকে ডাইভ বলছেন, আমি তো বলব ওটা ব্রাজিলের পক্ষে একটা পেনাল্টি ছিল।’
ভাববেন না আবার সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে কোনো কথাই হয়নি, সব শুধু কান্নাকাটি আর আগের ম্যাচ নিয়েই হয়েছে। মোটেই তা নয়। তবে সার্বিয়ার বিপক্ষে তিতে যে আগের ম্যাচের একাদশই খেলাবেন, সেটি নিশ্চিত করে দিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শুরুতেই। শুধু অধিনায়ক বদলাচ্ছে। প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের অধিনায়ক ছিলেন মার্সেলো, পরের ম্যাচে থিয়াগো সিলভা। আজ অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরবেন মিরান্দা।
বাংলা৭১নিউজ/প্রথম আলো/বিকে