বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: রাজধানীতে আজ তপ্ত ও গুমোট আবহাওয়ায় দুর্বিষহ জনজীবন। সেইসাথে রয়েছে গ্যাস সঙ্কট, বিদ্যুৎবিভ্রাট এবং পানির সমস্যা। এমন পরিস্থিতিতে রোজাদারদের দূর্ভেোগটা সবচেয়ে বেশি।
তেজগাঁওয়ে প্রচন্ড গরমে ঘামে গোসল করে উঠার মত অবস্থার মুখোমুখি হয়ে আবুল কালাম জানান, গরম নয়; এ যেন আগুনের কড়াই। এই গরমে তারমত অনেকের আকুতি ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে ছায়া দে’। মানুষ ছাড়াও সবখানেই প্রাণিকুল হাঁসফাঁস করছে। বাতাসে যেন আগুনের হল্কা। রাস্তায় পিচ গলতে শুরু করেছে। তীর্যক সূর্যের দহনে দিনমান অতিবাহিত হচ্ছে।
ক্যালেন্ডারের পাতার হিসেবে জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রখর খরতাপ থাকার কথা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে এবার বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে আগাম বৃষ্টিপাতে নগরবাসী তেমন গরম অনুভব করেননি। তবে গত দু’দিন বৃষ্টিপাত কম হওয়ার পাশাপাশি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান আজ দুপুরে জানান, জ্যৈষ্ঠ মাসে খরতাপূর্ণ আবহাওয়া থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে এ বছর বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা কম ছিল। গত দুইদিন যাবত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় গরম বেশি অনুভব হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আগামী তিন-চারদিন পর বৃষ্টিপাত না হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি। তখন গরম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সময় দিন দীর্ঘ থাকে ও সূর্যের গতিপথ মাথার উপরের কাছাকছি থাকায় উত্তাপের মাত্রা অত্যাধিক থাকে
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অফিস বলছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দম্কা অথবা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আজ সাকল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল শতকরা ৯৩ ভাগ।
পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
অপরদিকে, ঘরে-বাইরে বাতাসে আগুনের হল্কা বইতে থাকার কারণে এই সময়ে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া, ডিহাইড্রেশন (মাত্রাতিরিক্ত ঘামে দেহে পানিশূণ্যতা), পেটের পীড়া, ভাইরাস জ্বরে ভোগার আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের রোগ-ব্যাধি এড়াতে তীব্র রোদে চলাফেরা এড়িয়ে চলার এবং ঘন ঘন বিশুদ্ধ পানি, লেবুর শরবত, ওরস্যালাইন, ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ডা: সাদিয়া হোসেন জানান, হিটস্ট্রোকে সাধারণত ১০৪-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর এসে এক পর্যায়ে কিডনি অথবা লিভার ফেইলইউর হয়ে রোগী মারাও যেতে পারে। এ ধরনের রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে বা ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে বিশ্রাম দিতে হবে। তিনি বলেন, এ সময়ে কোনোমতেই কারোর খোলা জায়গার শরবত, পানীয় ইত্যাদি দূষিত খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করা নিরাপদ নয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস