রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো এনবিআরের ভুল সিদ্ধান্ত : ওবায়দুল কাদের ভাঙ্গায় চেয়ারম্যানপ্রার্থীর উঠান বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর সিঙ্গাপুরে হঠাৎ মাথাচাড়া করোনার, আক্রান্ত প্রায় ২৬ হাজার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান, সম্পাদক আইনুল ওএমএস–এ গাফলতি হলে জেল-জরিমানার হুঁশিয়ারি খাদ্যমন্ত্রীর এসএমই মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী একদল কুকুরের আক্রমণে প্রাণ গেলো যুবকের উখিয়ায় অস্ত্রসহ ৪ আরসা সদস্য গ্রেপ্তার বিশ্ববাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে সোনা বৃষ্টি হতে পারে সারাদেশে সফলতার সঙ্গে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছি: মেয়র তাপস গবেষকদের দাবি: ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কোভ্যাক্সিনের টিকায় কানে নজর কাড়লেন কিয়ারা ঢাকায় আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং লোন নিয়ে রিকশা কিনছি, এখন কিস্তি দেবো কি করে ট্রাম্পের মস্তিষ্ক বিকৃত, গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বাইডেন মেসির ফেরার ম্যাচে শেষ মুহূর্তে জয় মিয়ামির ১১ বছর পর আরেক বাংলাদেশির এভারেস্ট জয় সৌদি গেলেন ২৮৭৬০ হজযাত্রী, আরও একজনের মৃত্যু ভিসা ছাড়াই রাশিয়ায় যেতে পারবেন ভারতীয়রা, চুক্তি চলতি বছরই

শত্রু থেকে মিত্র, নতুন মালয়েশিয়া গড়ার প্রত্যয় মাহাথির-ইব্রাহিমের

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৮ মে, ২০১৮
  • ১৩৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকি। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ৯২ বছর বয়সী ড. মাহাথির মোহাম্মদ যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন থেকে বেশ লড়াকু একটি নির্বাচনের আভাস মিলেছিল।

নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারলে মাহাথির মোহাম্মদ হবেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক সরকার প্রধান।

২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০০৩ সালে স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসেবে পরিচিত মাহাথির মোহাম্মদ। খবর বিবিসির।

মাহাথির মোহাম্মদ যদি নির্বাচনে অংশ না নিতেন, তাহলে এ নির্বাচন একপেশে হতো বলে অনেকের ধারণা।

তার সাবেক দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনকে এ নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন মাহাথির মোহাম্মদ ।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের কর্মকাণ্ডে হতাশ হয়ে ২০০৩ সালে এ দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ।

সেখান থেকে পদত্যাগের পর মাহাথির মোহাম্মদ নিজেই একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। সে দল সরকার বিরোধী জোটে যোগ দেয়।

নির্বাচনের প্রচারণার সময় মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে বৃদ্ধ হয়ে গেছি। আমার খুব বেশি সময় বাকি নেই। আমি দেশকে পুনরায় গঠনের জন্য কিছু কাজ করতে চাই। হতে পারে, অতীতে আমি যে ভুল করেছি সেগুলোর সংশোধন করতে চাই।’

মালয়েশিয়ার সরকার বিরোধী জোট প্রধানমন্ত্রী পদে লড়াইয়ের জন্য মাহাথির মোহম্মদকে নির্ধারণ করেছে।

সরকার বিরোধী এ জোটের নেতা ছিলেন আনোয়ার ইব্রাহিম।

মাহাথির মোহাম্মদ ক্ষমতায় থাকার সময় আনোয়ার ইব্রাহিম ছিলেন তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি।

আনোয়ার ইব্রাহিমকে রাজনৈতিকভাবে হুমকি বলেও মনে করতেন তিনি।

একসময় রাজনৈতিক মতপার্থক্যও তীব্র হয়ে উঠেছিল উভয়ের মধ্যে।

১৯৯৯ সালে আনোয়ার ইব্রাহিমকে সমকামিতার অভিযোগে কারাগারে পাঠান মাহাথির মোহাম্মদ।

২০০৩ সালে মাহাথির মোহাম্মদের বিদায়ের পর ২০০৪ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পান ইব্রাহিম।

২০১৩ সালের নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন নাজিব রাজাকের দলের বিরুদ্ধে লড়াই করেন।

সে নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিমের দল অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরেছিল এবং নাজিব রাজ্জাকের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেয়।

এরপর ২০১৫ সালে সেই সমকামিতার অভিযোগে আনোয়ার ইব্রাহিমকে আবারো জেলে পাঠানো হয়।

যে আনোয়ার ইব্রাহিমকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ, সেই আনোয়ার ইব্রাহিমকে এখন ক্ষমতায় বসানোর জন্য উদগ্রীব হয়েছেন তিনি।

এখন আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরোধী জোট থেকেই নির্বাচন করছেন মাহাথির মোহাম্মদ।

নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারলে কিছুদিন পর আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।

এমনটাই পরিকল্পনা রয়েছে বিরোধী জোটের।

মাহাথির মোহাম্মদ মনে করেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ক্ষমতা থেকে সরানোই হচ্ছে আসল উদ্দেশ্য।

আনোয়ার ইব্রাহিম যথেষ্ট শাস্তি পেয়েছে বলে মনে করেন মাহাথির মোহাম্মদ।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে সম্পদ পাচার, রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি এক নির্বাচনী প্রচারণায় মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, ‘আমি সবার কাছে ক্ষমা চাই। নাজিবকে আমিই তুলে এনেছিলাম। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। এখন আমি সে ভুল শোধরাতে চাই।’

সম্প্রতি নির্বাচনী আসনের সীমানা পরিবর্তনের কারণে ভোটের হিসেব-নিকেশে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক জোট বারিসান ন্যাশনাল কোয়ালিশন কিছু সুবিধা পাবে।

বিরোধী সমর্থকরা মনে করেন, নির্বাচনে এতো কারচুপি হয় যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কঠিন হয়ে উঠে।

বিরোধী রাজনৈতিক জোটের ছয়জন প্রার্থীকে এরই মধ্যে অযোগ্য ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ার কারণে অনেক ভোটার ভোট দিতে পারবেন না।

সম্প্রতি একটি আবাসন প্রকল্পের জন্য সরকারের এক মিলিয়ন রিঙ্গিত বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন নাজিব রাজাক। এর ফলে সেখানে তার ভোট বাড়বে।

তবে অর্থনৈতিক অবস্থা সরকারের জন্য একটি বড় দুশ্চিন্তার কারণ।

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার বিক্রয়ের উপর কর বসানো হয়েছে এবং জ্বালানী তেলের উপর ভর্তুকি কমানো হয়েছে।

ফলে মানুষের জীবন-যাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক দেশটির মালয় জনগোষ্ঠীকে আশ্বস্ত করতে পারে যে তার দল মালয় সম্প্রদায়ের জন্য এবং তাদের ধর্ম ইসলামের জন্য অনেক কিছু করতে পারে।

সরকার পক্ষ জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে বিরোধী জোটকে ভোট দিলে সেটি ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন পার্টিকে লাভবান করবে, যারা মূলত জাতিগত ভাবে চীনা রাজনৈতিক দল।

বিরোধী রাজনৈতিক জোটের মধ্যে এ দলটি সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে।

তবে মাহাথির মোহাম্মদের সমালোচনার বিষয়ে ক্ষমতাসীনরা বেশ সতর্ক।

কারণ যে ব্যক্তিকে আধুনিক মালয়েশিয়ার জনক হিসেবে মনে করা হয়, তার ব্যাপারে সমালোচনার ক্ষেত্রে স্বভাবতই সরকারপক্ষ বেশ সতর্ক।

নির্বাচনী এক ভাষণে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক অভিযোগ করেন, বিরোধী জোটের অন্তর্ভুক্ত ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন পার্টি ড. মাহাথির মোহাম্মদকে ব্যবহার করছে।

সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী বলেছেন, ‘ওনার (মাহাথির মোহাম্মদ) প্রভাবের বিষয়টিকে আমরা অস্বীকার করতে চাই না। মালয়েশিয়ানদের উপর তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। তিনি ২২ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু আমরা ভাবছি পরবর্তী ৩০ বছরের কথা। আমরা কি ঘড়ির কাঁটা উল্টো দিকে নিতে পারি? আমরা কি নির্যাতন এবং স্বজনপ্রীতির সে যুগে ফিরে যেতে পারি?’

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে তিনি ৭০০ মিলিয়ন ডলার নিজের অ্যাকাউন্টে সরিয়েছেন।

মরাজাক বলেছেন, এ অর্থ সৌদি সরকারের কাছ থেকে অনুদান হিসেবে পাওয়া গেছে।

নাজিব রাজাকের স্ত্রীর বিলাসী জীবন নিয়ে বেশ সমালোচনা করছেন মাহাথির মোহাম্মদ।

একই সাথে তিনি বলছেন যে মালয়েশিয়ার নাগরিকদের চাকরী হুমকির মুখে।

তিনি ভোটারদের বলছেন, একমাত্র তিনিই পারেন তাদের চাকরীর রক্ষা করতে।

মাহাথির মোহাম্মদ যেভাবে সরকার বিরোধীদের দলে ভিড়েছেন, তাতে বিরোধী জোটকে সরকারের চেয়ে তারা ভালো মনে করছেন না।

তারা হয়তো মাহাথির মোহাম্মদের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে মনে রাখবে, কিন্তু একই সাথে তারা সরকারকে অসন্তুষ্ট করতে চাইবে না।

মাহাথির মোহাম্মদ একসময় বলেছিলেন, ‘মালয়ানরা ভিতু মানুষ। তারা সরকারকে চ্যালেঞ্জ করতে চায় না।’

বিরোধী জোট যদি নির্বাচনে জয়লাভ করে তাহলে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের একাধিপত্যের অবসান হবে।

নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রী হলে মাহাথির মোহাম্মদ তার ৯৩তম জন্মদিনের দিকে এগুবেন।

কিন্তু এরপর সেই আনোয়ার ইব্রাহিমকে ক্ষমা করে জেল থেকে বের করে তার হাতেই ক্ষমতা তুলে দিবেন মাহাথির মোহাম্মদ।

অথচ এই আনোয়ার ইব্রাহিমকেই তিনি কারাগারে ঢুকিয়েছিলেন ২০ বছর আগে।

কিন্তু নির্বাচনে জয়লাভের পর মাহাথির মোহাম্মদ কি অবসরে যাবার জন্য সত্যিই তৈরি আছেন?

এ বিষয়ের উপর বাজি ধরতে মালয়েশিয়ায় এখন কেউ নেই। সূত্র : এরাবিয়ান জার্নাল।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com