বাংলা৭১নিউজ,কক্সবাজার প্রতিনিধি : বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত, পরে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। স্বজনেরা কুলখানিও সেরে ফেলেছেন। অবশেষে ঘটনার ১৪ দিন পর বৃহস্পতিবার সকালে ‘নিহত’ আব্দুল খালেককে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে জীবিত উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারে, গত ১৯ এপ্রিল। ওইদিন কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও এলাকায় বস্তাবন্দি একটি লাশ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা এসে সনাক্ত করেন লাশটি সদর উপজেলার খরুলিয়া এলাকার আব্দুল খালেকের। তাছাড়া এ ঘটনায় আব্দুল খালেকের স্ত্রীসহ তিনজনকে আটকও করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে জানান, গত ১৯ এপ্রিল ঈদগাঁও বাস্টস্টেশনের পাশের ডোবা থেকে একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ওই লাশটি সদর উপজেলার খরুলিয়া ঘাটপাড়া এলাকা থেকে নিখোঁজ আব্দুল খালেকের বলে দাবি তার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন।
এক পর্যায়ে পরিবারের সনাক্ত অনুযায়ী পুলিশ ময়নাতদন্ত করে লাশটি দাফনের অনুমতি দেয়। একই সঙ্গে আব্দুল খালেকের স্ত্রী জোবাইদা বেগম, জোবাইদার বড় বোন মোবারেকা ও তার স্বামী ফারুককে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানান, ঈদগাঁও থেকে উদ্ধার লাশের রহস্য উদঘাটনে ছায়া তদন্তে নামে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। ডিবির পরিদর্শক মানস বড়ুয়াকে এ তদন্তভার দেয়া হয়। তদন্তে তিনি দেখতে পান, নিহত আব্দুল খালেকের ব্যবহৃত মোবাইল সচল রয়েছে। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার জীবিত এবং অবস্থান নিশ্চিত হয়। গত ২ মে রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে আব্দুল খালেককে জীবিত আটক করা হয়।
কক্সবাজার ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মানস বডুয়া জানান, আব্দুল খালেকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি তার ঘনিষ্ট আত্মীয় সরোয়ার ব্যবহার করতেন। সরোয়ারের সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। প্রথমে সরোয়ারকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে আব্দুল খালেকে সীতাকুণ্ড থেকে আটক করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল খালেক জানিয়েছেন, স্ত্রী জুবাইদা বেগমের সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল আত্মগোপনে যান তিনি।
পরে পরিবারের ভুল সনাক্তের কারণে গত ২০ এপ্রিল অন্য এক ব্যক্তির লাশ তার দাবি করে দাফন করা হয়।
পুলিশ সুপার একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আব্দুল খালেকের ছোট ভাই আব্দুল মান্নান ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভুলের কারণে এমনটি হয়েছে। পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপরাধ তিন ব্যক্তিকে আটক করে কারাগারেও পাঠানো হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন সব রহস্যের জট খুলে গেছে। আব্দুল খালেককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। আটকদের ছেড়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’
এদিকে, ঈদগাহ এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্ধি ওই লাশটি টেকনাফের সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবকের বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী।
তবে লাশের ডিএনএ টেস্ট করে নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
বাংলা৭১নিউজ/আর এইচ