মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৫০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
২ লাখ ৩৮ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করবে বেজা খালেদা জিয়াকে বার্তা পাঠিয়ে যা বললেন জিএম কাদের ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন এলএনজি ও চাল আমদানি, ব্যয় ১০২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে আহত ১০০ জন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় শুনানি মুলতবি সচিবালয়ের গেটে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ পাঁচ মাসে আর্থিক স্থিতিশীলতায় খুব বেশি খুশি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে ৮ পরিচালক নির্বাচিত রংপুরের বিপক্ষে এবার ঢাকা অলআউট ১১১ রানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিব্বতে নিহত বেড়ে ৯৫ স্ত্রী-ছেলেসহ নাফিজ সরাফতের বাড়ি, জমি ও ১৮ ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৫ যাত্রী নিহত জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ১০০ জনের কর্মসংস্থানের প্রস্তাব

হারিয়ে গেছে কৃষ্ণচূড়ার রঙ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১৮
  • ৩০৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর প্রতিনিধি: কৃষ্ণচূড়ার রঙ হারিয়ে নাটোর শহর যেন হয়ে পড়েছে বর্ণহীন। অথচ বিগত এক দশক ধওে রাস্তার দু’ধাওে শতশত কৃষ্ণচূড়ার গাছে ফুলের সমারোহ রঙ ছড়িয়ে শহরকে করে তুলতো বর্ণময়। গ্রীষ্মের প্রচন্ড খরতাপে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের পাশাপাশি এসব গাছ দিয়ে আসছিল ক্লান্ত দেহে ছায়া আর মনে প্রশান্তির পরশ।

চলন বিলের শস্যরাজি, রাণীভবানীর রাজত্ব, বনলতা সেনের কবিতার শব্দ, কাঁচাগোল্লার স্বাদেই শুধু নাটোরের পরিচিতি নয়। এক সময় নাটোরের পরিচিতি ছিলো দু®প্রাপ্য ফুলের শহর হিসেবেও। নাটোরের সৌখিন রাজন্যবর্গ তাদেও রাজবাড়ী চত্বরকে সাজাতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসেন অসংখ্য ফুলগাছ। গড়ে তোলেন পুষ্প রাজত্ব। নাটোরের রাণীভবানী রাজবাড়ী আর উত্তরা গণভবনে এখনো শোভা বর্ধন করছে নাগালিঙ্গম, ম্যাগনোলিয়া, হৈমন্তি, সুরভিকা, এগপ্লান্ট, কর্পূর, পারিজাতের মত বিলুপ্ত প্রায় ফুলের গাছ। রাজাদের দেখাদেখি প্রজারাও ফুলচাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। দু’দশক আগেও নাটোর শহরের অসংখ্য বাড়ীকে শোভা বর্ধন করতো ফুলের বাগান। জীবনের জটিলতায় শহরে ফুলের বাগান কমে গেছে।

অতীত ঐতিহ্যকে বহমান রাখতে ২০০২ সালে স্বজন সমাবেশ নামে একটি সামাজিক সংগঠন ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ গ্রহন করে। নাটোর পৌরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান এডভোকেট কামরুল ইসলামের সহযোগিতায় সারা শহরে রাস্তার দু’ধারে রোপন করা হয় দু’হাজার স্থায়ী ফুলের গাছ। এর বেশীরভাগ ছিলো কৃষ্ণচূড়া, পাশাপাশি কাঞ্চন, সোনালু, কদম ইত্যাদি। নাটোর স্বজন সমাবেশের তৎকালীন সভাপতি ডাঃ আব্দুল হামিদ বলেন, পুষ্পিত নাটোর কর্মসূচী বাস্তবায়নের ফলে মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে গাছের ফুল রঙ ছড়াতে শুরু করে, যথার্থই নাটোর হয়ে ওঠে পুষ্পিত নাটোর। সংগঠনের ঐ সময়ের সাধারন সম্পাদক ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন বলেন, কর্মসূচীর উদ্দেশ্য ছিলো বসন্তে কাঞ্চন, গ্রীষ্মে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু আর বর্ষায় কদম শহরকে সুশোভিত করবে, সুরভিত করবে।

গ্রীষ্মের তাপদাহে গাছের ছায়া রাস্তার দু’ধারে থাকা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে স্বন্তি এনে দিয়েছিল। আর এর ছায়ায় বসতো চায়ের দোকান, পিয়াজু-বেগুনীর দোকান, কাপড়ের দোকান আর সাইকেল গ্যারেজ। গাছগুলোর ছায়া শ্রমজীবীদের জন্যে ছিল পরম স্বস্তির। শহরের মূল সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হলে সম্প্রতি “পুষ্পিত নাটোর” এর প্রায় সব ফুলের গাছই কাটা পড়ে। গত এক দশক ধরে কৃষ্ণচূড়ার রঙ ছড়ানো শহর হিসেবে পরিচিতি পাওয়া নাটোর এখন বিবর্ণ। নাটোর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি আর গীতি সিনেমা হলের সামনে বেঁচে যাওয়া দুইটি কৃষ্ণচূড়া গাছ এখনো রঙ ছড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পাঁচ কিলোমিটার সড়কের অন্য কোথাও কৃষ্ণচূড়ার গাছ নেই, নেই রঙের বর্ণচ্ছটা। শহরময় কৃষ্ণচূড়ার শূণ্যতা যেন ছন্দময় শহরকে গদ্যময় করে দিয়েছে, বললেন কলেজ শিক্ষক ও সঙ্গিত প্রশিক্ষক মাসুমা সুলতানা রুপা। সংগঠক জুলফিকুল হায়দার বাবু বলেন, গাছগুলো ছিল আমাদের সন্তানের মত। আগে গাছ আর ফুলের দিকে তাকালে চোখ জুড়িয়ে যেত। আর এখন হাহাকারে বুক ভরে যায়।

নাটোর সদর উপজেলায় সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে বেড়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ফারজানা খানম বলেন, গ্রীষ্মের খর তাপে দু’দন্ড শান্তির পরশ হয়েছিল শহরের কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো। এত রঙের বর্ণচ্ছটা অন্য শহরে আছে বলে আমার জানা নেই। গাছগুলো কাটা পড়ার শূণ্যতা পূরণে “পুষ্পিত নাটোর” কর্মসূচীর মত নতুন কর্মসূচী বাস্তবায়নে কোন সামাজিক সংগঠন এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন এই কর্মকর্তা।

নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেন, শহরে নির্মিতব্য রাস্তার মাঝে চারফুট প্রশস্ত মিডিয়ানের মধ্যে ফুলের গাছ লাগিয়ে শহরকে পুষ্পিত করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এছাড়া কিছু ফুলের চারা তৈরী করা হয়েছে যা শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যে পরিকল্পিতভাবে রোপন করা হবে।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com