শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল এবার পোশাকে নায়িকাদের নাম ফুটিয়ে হাজির ভাবনা সোনালী আঁশের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই: পাটমন্ত্রী অনিয়ম এড়াতে মোবাইল অ্যাপে চাল বিক্রি ৩০ দিনের মধ্যে শহীদ আনোয়ারা উদ্যান ফেরতের দাবি মাগুরায় রেলপথ শিগগিরই চালু হবে : রেলমন্ত্রী যিনি দেশ বিক্রি করতে চেয়েছিল আপনি তো ওনারই সন্তান হেফাজত নেতা মামুনুল হক ডিবিতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত: আইজিপি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে স্কুলসামগ্রী বিতরণ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের জাল ভোট পড়লেই কেন্দ্র বন্ধ: ইসি হাবিব ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাস্ট্রা এয়ারওয়েজের চুক্তি স্বাক্ষর ইসলামী ব্যাংকের মাসব্যাপী ক্যাম্পেইন শুরু ডেপুটি গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশে বাধা নেই বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে ভারত ভ্রমণে তিনদিনের নিষেধাজ্ঞা ঢাবিতে বিষমুক্ত ফল নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন গোপালগঞ্জের সেপটিক ট্যাংকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ২ শ্রমিক নিহত দিল্লির তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে ভোট বর্জনই বিএনপির আন্দোলন: এ্যানি আফগানিস্তানে বন্যায় ৫০ জনের মৃত্যু

ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় হতাশ তালার কৃষক

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১ মে, ২০১৮
  • ২৭১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, এম, এম হায়দার আলী তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: ইরি ধান আর করবো না। এক বিঘা জমি হারি নিয়ে ধান রোয়া থেকে শেষ পর্যন্ত বাড়ীতে আনতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ। অনেক কষ্টে ঋণ দেনা করে চার বিঘা জমিতে ধান লাগাইছিলাম, কিন্ত নতুন এক ধরনের শৃকনো রোগের কারনে ধানের বদলে হয়েছে সব চিটে। হাজার হাজার টাকার সার ঔষধ দিয়েও কোন লাভ হয়নি, ধান কেটে বিক্রি করে জন- মজুরীর টাকাটা হয়তো হতে পারে,এইবার সারা বছর চাল কিনে খেতে হবে তার ওপর লোকের দেনা  আর পরিবারের সুখ-অসুখ তো আছেই,বাড়ী থেকে  চলে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই, এভাবে জীবন চলে না।

গত শুক্রবার সকালে উপজেলার যুগীপুকুরিয়া গ্রামের একটি চা-য়ের দোকানে কথাগুলো বলছিলেন ওই গ্রামেই বসবাসকারী দরিদ্র চাষী মুক্তার আলি সরদার (৩০)।

সুত্র মতে, বন্যা কবলিত সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় বছরের একটি মাত্র  ফসল ইরি-বোরো ক্ষেতে চিটা ভর্তি শুকনো ধানের শীষে চাষীদের মারাতœক সর্বনাশ হয়ে গেছে। একই সাথে এ উপজেলায় এবার অর্জিত হলো না ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। ফলে বছরের খোরাকি ঘরে তোলার  আশায় নানান  প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে  ধান আবাদ করা শত শত প্রান্তিক চাষীরা রীতি মত হতাশ হয়ে পড়েছেন। কৃষি বান্ধব বর্তমান সরকারের সময়ে ধান-চালের মূল্য সন্তোষ জনক হওয়ায় চলতি বছর এখানকার হাজার হাজার কৃষক এচাষের প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হয়ে আশায় বুঁক বাধেন।

যারই ফলশ্রুতিতে গত বারের তুলনায় উপজেলায় এবার ২ হাজার হেক্টর বেশি  অর্থাৎ চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ১৯ হাজার ২৫  হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ  করা  হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে। যা সুষ্ঠু ভাবে উৎপাদন শেষে প্রতি বিঘা জমিতে গড় ২০ মণ হিসেবে ধান, চাষীরা তাদের বাড়ীতে তুলতে পারলে  প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবার কথা ছিল। কিন্ত বিধিবাম, নানান মূখী সংকটের কারনে কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই চিরন্তন এই প্রবাদটি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ সকল কৃষকের ক্ষেত্রে আজ যেন বাস্তবে রুপ নিয়েছে ।

চলতি মৌসুমের শুরুতেই প্রচ- শীতে বীজ তলা নষ্ট, শ্রমিক সংকট, গবাদি পশু বিক্রি, চড়া সুদে ঋণ নেয়া,বাকিতে অধিক দামে কৃষি পন্য কেনা  সহ নানান প্রতিকূলতা  উপেক্ষা করে জমিতে ধান রোপন কাজ সম্পন্ন করেন। যে সপ্নের ধান কাটার ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে কিন্ত আবাদকৃত ক্ষেতে চিটা ভর্তি সাদা ও কালো স্পট বর্ণের শুকনো ধান শীষে ভূক্তভোগী চাষীদের লালিত সপ্ন এখন দ্বারপ্রান্তে। ফলে আশা-নিরাশার দোলাচলে দোলা ঋণের বেড়া জালে আটকা পড়া ক্ষতিগ্রস্থ সাধারন চাষীরা  চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তা-ব্যক্তিরা অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি যদি প্রথম দিকে সঠিক ভাবে দেখভাল করতেন তা হলে প্রান্তিক চাষীরা অপূরণীয় এই ক্ষতির হাত থেকে হয়তো বা রেহাই পেত।

উপজেলার যুগীপুকুরিয়া  গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান সরদার (৩৭) ক্ষোভের সাথে জানান,এবছর  অনেক সমস্যার মধ্যেও প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে ইরি ধান লাগাইছিলাম কিন্ত এক ধরনের শুকনো রোগে ধানে অতিরিক্ত চিটা হয়ে গেছে। ৫শত মণ  ধান হবার কথা ছিল হয়েছে মাত্র ৯৬ মণ এবার ধান করতে যেয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা  লোকসান হয়ে গেছে। ধান ভাল করার জন্য দোকানদারদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রায় ৫০ হাজার টাকার ঔষধ ব্যবহার করেও শেষ রক্ষা হয়নি।

কারো কাছ থেকে যে সঠিক কোনো পরামর্শ নেবো সময় মত সেরকম কারো খুঁজে পাওয়া যায়নি। একই গ্রামের কৃষক আছাদুল সরদার (৫৫) জানান,ধান তো এবছর ভাল হয়নি তার ওপর সেই জমি চাষ-বাস থেকে শুরু করে ধান কেটে বাড়ী আনতে অতিরিক্ত টাকি দিলেও কাজের লোক মিলছে না। এবার বাজারে ধানের দামও কম। জন-মজুরির টাকা দেব বলে গতকাল কয়েক মণ ধান বাজারে নিয়ে গিয়েছিলাম। যা সাড়ে আট শত টাকা করে মণ বিক্রি করতে হয়েছে।এদিকে প্রত্যেক বছর এই সময় পাওনাদারদের হালখাতা শুরু হলেই তাদের ঋণ পরিশোধ করার জন্য বাধ্য হয়েই দাম যাই হোক ধান বিক্রি করতেই হবে। আর সেই সুবাদে এখানকার একশ্রেণীর সুযোগ সন্ধানী অতি মুনাফা লোভী পাইকারী ধান-চাল ক্রেতাদের বিরুদ্ধে কম মূল্যে কেনা সহ নানান অভিযোগ দীর্ঘ বছরের।

এ ধরনের অভিযোগ উপজেলার ইরি-বোরো আবাদকৃত শতকরা ৯০ জন  কৃষকের বলে জানা যায়। তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সামছুল আলম জানান,গত বছরও এই ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছিল। এই রোগের কারনেই ধানে চিটা হয়ে যায়। এ রোগের প্রতিকার হিসেবে আমরা টাটাভো, নাটিভো,ট্রুপার,ও ধুমকেতু সহ ৮-৯ প্রকারের ্্ঔষধ উল্লেখ পূর্বক লিফলেট তৈরি করে তা  বিভিন্ন উপায়ে কৃষকদের মাঝে বিতরন করেছি। এটা থোড় মুখে বা শীষ বের হওয়ার প্রাক্কালে ব্যবহার করলে ওই সমস্যা সমাধান  হয়ে যেত। তবে ধানের ফলন খুব বেশি খারাফ হয়নি।

সব মিলিয়ে কৃষি প্রধান এদেশের আপামর জনগনের রুটি রোজগারের একমাত্র অবলম্বন ধান উৎপাদন খাতকে আগামীতে আরো বেশি উন্নতিকল্পে বাস্তবমুখী  পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com