রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা: জেলেরা বলছেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো এনবিআরের ভুল সিদ্ধান্ত : ওবায়দুল কাদের ভাঙ্গায় চেয়ারম্যানপ্রার্থীর উঠান বৈঠকে হামলা-ভাঙচুর সিঙ্গাপুরে হঠাৎ মাথাচাড়া করোনার, আক্রান্ত প্রায় ২৬ হাজার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান, সম্পাদক আইনুল ওএমএস–এ গাফলতি হলে জেল-জরিমানার হুঁশিয়ারি খাদ্যমন্ত্রীর এসএমই মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী একদল কুকুরের আক্রমণে প্রাণ গেলো যুবকের উখিয়ায় অস্ত্রসহ ৪ আরসা সদস্য গ্রেপ্তার বিশ্ববাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে সোনা বৃষ্টি হতে পারে সারাদেশে সফলতার সঙ্গে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছি: মেয়র তাপস গবেষকদের দাবি: ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কোভ্যাক্সিনের টিকায় কানে নজর কাড়লেন কিয়ারা ঢাকায় আসছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং লোন নিয়ে রিকশা কিনছি, এখন কিস্তি দেবো কি করে ট্রাম্পের মস্তিষ্ক বিকৃত, গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বাইডেন মেসির ফেরার ম্যাচে শেষ মুহূর্তে জয় মিয়ামির ১১ বছর পর আরেক বাংলাদেশির এভারেস্ট জয় সৌদি গেলেন ২৮৭৬০ হজযাত্রী, আরও একজনের মৃত্যু

উদ্ধার অভিযানের প্রধান অন্তরায় কি ইনস্যুরেন্স সুবিধা!

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৮
  • ১৬৫ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি

বাংলা৭১নিউজ, জামাল হোসেন বাপ্পা, বাগেরহাট প্রতিনিধি: সুন্দরবনের অদূরে পশুর নদীর হারবাড়িয়া এলাকায় ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কার্গো জাহাজটি উদ্ধার কাজ আজও শুরু হয়নি। তীব্র স্রোত, গভীরতা ও উদ্ধারকারী জাহাজ না থাকা এ তিন কারণে কার্গো জাহাজটি উদ্ধারে বিলম্ব হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। অপর দিকে ডুবে যাওয়া কয়লা বোঝাই ‘এমভি বিলাস’-এর বিরুদ্ধে মোংলা থানায় আরো একটি (তৃতীয় বার) সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা কামরুল হাসান।

পরিবেশ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সিনিয়র কেমিস্ট মো. কামরুজ্জামান সরকার, নমুনা সংগ্রহকারী শেখ মো. মোস্তফা, পরিবেশ অধিদপ্তর বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. এমদাদুল হক ও আমি ঘটনাস্থল থেকে নমুনা হিসেবে পানি সংগ্রহ করেছি। পানি পরীক্ষার পর জানা যাবে এ কয়লা (সালফার) পরিবেশের জন্য কতোটা ক্ষতিকর। তবে নমুনা সংগ্রহ করার সময় নদীতে জোয়ারের কারনে জাহাজটি ১০-১২ ফুট পানির নিচে থাকা কয়লা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহামুদুল হাসান বলেন, আমি জাহাজ কর্তৃপক্ষ সাহারা এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা উদ্ধারকারী দলসহ আসতে চায়। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সাহারা এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে কেউ হারবাড়িয়ায় আসেনি। মঙ্গলবার যদি তারা উদ্ধার কাজ শুরু না করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একে এম ফারুক হাসান বলেন, ডুবে যাওয়া নৌযানটি উদ্ধারে মালিকপক্ষকে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা সম্পন্ন বার্জ ও অন্যান্য মালপত্র সংগ্রহ করে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। লাইটার কার্গোটির মালিকপক্ষ নির্দেশনা উপেক্ষা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ কার্গোটির মালিকানা বাতিল করে উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান দিয়ে ‘নো লস, নো প্রোফিট’ চুক্তির ভিত্তিতে এটি অপসারণ করা হবে। তবে লাইটার কার্গোটি বন্দরের মূল চ্যানেলের বাইরে ডোবায় নৌযান চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটছে না। এছাড়া জাহাজ থেকে যাতে কয়লা ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য বন্দরের নিজস্ব বর্জ্য অপসারণকারী জাহাজ পশুর ক্লিনার-১ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত এসব লাইটারেজ জাহাজ অনেক পুরনো, যন্ত্রপাতি বিকল; আবার এগুলোর ইনস্যুরেন্স সুবিধাও থাকে। এসব নৌযানে বহন করা পণ্যসামগ্রীও ইনস্যুরেন্সের আওতাভুক্ত হওয়ায় মালিকপক্ষ ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধারে কখনো কখনো ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করে। তাই এমভি বিলাস এবং এত বহনকারী কয়লায়ও ইনস্যুরেন্স সুবিধা আছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখার সময় হয়েছে।

গত তিন বছরে পশুর নদ ও সুন্দরবনের সংরক্ষিত এলাকায় কয়লা, সার, তেল ও জিপসাম নিয়ে একাধিক কার্গো জাহাজ ডুবেছে। ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ফার্নেস তেল নিয়ে ওটি সাউদার্ন স্টার-সাত নামে একটি ওয়েল ট্যাংকর ডুবে যায়। সেই ঘটনার পর সুন্দরবনের অভ্যন্তরের এ নৌপথটি বন্ধে জোর দাবি ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংষ্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দলও সুপারিশ করে বিশ্বের বিপন্ন প্রায় প্রজাতির ডলফিন ‘ইরাবতী’র অভয়ারণ্য শ্যালা নদীসহ সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বাণিজ্যিক নৌ চলাচল বন্ধের। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ শেলা নদীতে এক হাজার ২৩৫ টন কয়লা নিয়ে ডুবে যায় কার্গো জাহাজ এমভি জাবালে নূর। এর আগের বছর ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর ৫১০ মেট্রিক টন  কয়লা নিয়ে পশুর নদীর চিলা এলাকায় নবনির্মিত খাদ্যগুদামের (সাইলো) কাছে ডুবে যায় কার্গো জাহাজ এমভি জিয়ারাজ। এর আগে পশুর নদীর হারবাড়িয়া এলাকায় সিমেন্ট  তৈরির কাঁচামাল জিপসাম নিয়ে ডুবে গিয়েছিল এমভি সি হর্স। এই স্থানগুলোর সবই সংরক্ষিত সুন্দরবন এলাকায়।

এ ছাড়া সুন্দরবন এলাকার বাইরেও একাধিক কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। গত ৬ জানুয়ারি মোংলা থেকে এক হাজার ১০০ টন কয়লাবোঝাই এমভি ডায়মন্ড অব নারিশা খুলনার ফুলতলা এলাকার ভৈরব নদে ডুবে যায়। ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর খুলনার রূপসা নদীতে ৮০০ টন ক্লিংকারবাহী এমভি টুঙ্গিপাড়া ডুবে যায়। প্রকৃতপক্ষে ভৈরব-রূপসা-কাজীবাছা-পশুর একটি চ্যানেল; অবস্থানভেদে নাম ভিন্ন এই যা।

প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের হারবাড়িয়া এলাকার ৬ নম্বর অ্যাকরেজে থাকা লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি অভজারভার’ ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে। জাহাজটি থেকে রবিবার ভোরে কয়লা নেওয়া হয় ঢাকার ইস্টার্ন ক্যারিয়ার নেভিগেশনের মো. সোহেল আহম্মদের ‘এমভি বিলাস’ কার্গো জাহাজে। খুলনার দুলাল এন্টারপ্রাইজের জন্য ইট ভাটা ও সিরামিক কারখানাগুলোর জন্য আমদানি করা কয়লা নিয়ে তা রাজধানীর মিরপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিছু দূর এগোলেই ডুবোচরে ধাক্কা লেগে তলা ফেটে এটি ডুবে যায়। এ সময় কার্গোতে থাকা সাত কর্মচারী সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com