বাংলা৭১নিউজ, মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর প্রতিনিধি: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবী জানিয়েছেন গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ।
বৃহস্পতিবার সকালে গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের সাংগঠনিক অনিয়ম ও অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী জানানো হয় ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ও পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা । এ সময় কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও সংগঠন পরিপন্থী কাজ করছেন। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করছেন।জেলার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিজে ও স্বজনদের মাধ্যমে করিয়ে বাড়তি সুবিধা ভোগ করছেন।
সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তিনি মিথ্যা মামলার মাধ্যমে হয়রানি করাচ্ছেন। বিগত স্থানীয় স্তানীয় সরকার নির্বাচনে যে সব সাংসদ ও মন্ত্রী নৈৗকার র্প্রাথীর বিরোধীতা করেছেন তাদের ভবিষ্যতে নৈৗকায় মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলে স্বিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কায্যনির্বাহী কমিটি ।
এই স্বিদ্ধান্তের আলোকে তারা নাটোর ৪ আসনের সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের ভূমিকা তুলে ধরার জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন বলে জানান ।
মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা অভিযোগ সাংসদ আব্দুল কুদ্দুস বড়াইগ্রামের গোপালপুর ও চান্দাই এবং গুরুদাসপুরে নাজির ইউপি নির্বাচনে নৈৗকার প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদন্ধিতা কারীপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন । তাদের প্রতিপক্ষ বিএনপি জামায়াতের র্প্রাথীদের পক্ষ হয়ে তিনি নির্বাচনী কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলেন । এমনকি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বাধ্য করেছেন । ফলে ঐ তিন প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে ।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সাংসদ ছেলে আশিফ ইকবাল ওরফে শোভনকে দিয়ে সোলার বাণিজ্য এবং মেয়ে কোহেলী কুদ্দুস মুক্তিকে দিয়ে নানা ধরনের নিয়োগ বাণিজ্য করছেন এমপি। সেখানে টাকার বিনিময়ে বিএনপি-জামায়াতের লোকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।তারা আগামী সংসদ নির্বাচনে আব্দুল কুদ্দুসকে দল থেকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নিকট দাবী জানান ।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম স¤পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক পৌরমেয়র শাহনেওয়াজ আলী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলাল শেখ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লেিগর সভানেত্রী শাহিদা আকতার মিতা , জেলা পরিষদ সদস্য সরকার মেহেদী হাসান, জেলা পরিষদ সদস্য আবুল কালাম জোয়ারদার্র ,জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এ বিষয়ে এমপি আব্দুল কুদ্দুস সাংবাদিকদের বলেন, এসব অভিযোগ অসত্য ও বানোয়াট জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দলের কতিপয় নেতা তার বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। আমি সংগঠন পরিপন্থী কোন কাজের সাথে জড়িত না । তিনি এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন এবং পাগলের পলাপ বলে আখ্যায়িত করে বলেন , আইন অনুযায়ী সাংসদেরা নির্বাচনী কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থাকতে পারেন না । তাই নির্বাচনকে প্রভাবিত করার কোন সুযোগ আমার ছিলনা। তাছাড়া যারা হেরেছেন তারা জনবিছিন্ন ও সমাজবিরোধী বলেই তারা হেরেছেন । বিষয়টি আমি নেত্রীকে জানিয়েছিলাম । তিনি দাবি করেন, আমার ছেলে-মেয়ে কোনো ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নেই। তারা ব্যবসা বাণিজ্য কোন কিছুর সাথেই জড়িত নয় ।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস