বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিতের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে কর্মসূচি শুরুর পেছনে ‘অন্য কিছু’ আছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈরতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সভা শেষে এসব কথা সাবেক এই আমলা।
সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলনে ছিল শিক্ষার্থীরা।
‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’ ব্যানারে আন্দোলনে গত রবিবার শাহবাগ এলাকা পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। এরপর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। আর পরদিন ঢাকার পাশাপাশি সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। আর সেদিন বিকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে বসে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’ ২০ নেতা।
বৈঠকে কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার আশ্বাস দেন কাদের। এরপর ৭ মের অবধি আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আসে।
তবে সেদিনই আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিভক্তি আসে। কর্মসূচি স্থগিত করা নেতাদেরকেই অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পাল্টা কমিটির ঘোষণা দেয় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো।
সমঝোতার পরদিনই নতুন করে আন্দোলনের ঘোষণায় বিস্মিত এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, ‘গতকাল ছাত্রদের প্রতিনিধিদল আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে দেখা করেছেন। সেখানে একটি সুন্দর সমাধান হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে পর্যালোচনা করে নতুন কিছু করা হবে। এরপরে আর আন্দোলন করার কিছু নেই। এখানে অন্য কিছু আছে।’
‘কোটা ব্যবস্থা অবশ্যই পরিবর্তনযোগ্য উল্লেখ করে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘পরিবর্তনশীল জগতে আমাদের বিবর্তন হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার হার বাড়ছে, মেয়েরা শিক্ষায় অনেকেই এসেছে। এসবগুলো নিয়েই আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন যে কোটা ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখার জন্য।’
‘যুক্তিসঙ্গত আন্দোলন ছাত্ররা করতেই পারে। এর প্রতি আমাদের কোনো বিরূপ মনোভাব নেই। সরকারের তো একেবারেই নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কেবিনেট মিটিংয়ে গতকালই বলেছেন এ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার জন্য। এর আগে জনপ্রশাসন থেকে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় তা নিয়েও শিক্ষার্থীদের ভাবনা ঠিক নয়।’
এইচ টি ইমাম বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ কোটা বা কোটা থেকে যদি পূরণ না হয় তাহলে সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। যেখানে সবাই আসতে পারবে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এখানে যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি থাকে তাহলে অবশ্যই সংশোধন করা হবে। সেজন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার বিষয় উপদেষ্টা বলেন, ‘যে হামলা হয়েছে এটা অত্যন্ত নিকৃষ্ট। অবশ্যই ধিক্কার জানানোর মত।’
‘যারা উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে তাদের যদি সৎসাহস থাকে তাহলে তারা মুখোশ পরে যাবে কেন? অবশ্যই এর পেছনে বড় কোনো ষড়যন্ত্র আছে।’
বাংলা৭১নিউজ/জেএস