বাংলা৭১নিউজ, গোপালগঞ্জ:আবারো গুপ্ত হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার বলেছেন, তারা সরকার উৎখাত করতে ব্যর্থ হয়ে জঘণ্য কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট জনগণের উন্নয়ন চায় না। তারা পুড়িয়ে মানুষ মারা আর ধ্বংস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, সরকার উৎখাত করতে ব্যর্থ হয়ে তারা শিক্ষক ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করার পথ বেছে নিয়েছে। তারা বেছে বেছে শিক্ষক ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে।

প্রধানমন্ত্রী এখানে আজ সকালে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট উদ্বোধন এবং শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।

এছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন স্বাগত বক্তৃতা করেন। স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন । এসময় তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও রেল মন্ত্রী মজিবুল হক এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান স্থল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফলক উন্মোচন করে মধুমতি নদীর ওপর নবনির্মিত চাপাইল সেতু, টুঙ্গীপাড়া প্রধান ডাকঘর, গোপালগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমি কমপ্লেক্স ও জাতীয় মহিলা সংস্থা ভবন উদ্বোধন করেন।

এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ ১০ কিলোওয়াট এফএম রেডিও স্টেশন, গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানি-গোবরা রেল লাইন প্রকল্প এবং টুঙ্গীপাড়া ও মুকসুদপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মান কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকার সময়েও মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় হামলা চালিয়েছিল। তাদের শাসনামলে তারা বগুড়ায় একটি মসজিদের ভিতরে কৃষক লীগের একজন নেতাকে হত্যা করেছিল।

তিনি বলেন, যারা মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি এবং এতিমদের অর্থ আত্মসাৎ করতে পারে তারা সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না।
পদ্মা সেতু নির্মানের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের নিজস্ব অর্থে সেতুর নির্মান কাজ শুরু করার সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ ছিল।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক তাঁর সরকার ও জনগণকে খাটো করার হীন উদ্দেশ্য নিয়ে সেতু সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রের ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছিল। তবে, এসব অভিযোগ ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন স্থগিত না করলে সেতুর নির্মান কাজ আরো এগিয়ে যেতো।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, তিনি নিজের ভাগ্য নয় বরং সাধারণ জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোর জন্য রাজনীতি করছেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও গৃহায়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি খাদ্য ঘাটতির দেশের অবস্থান থেকে খাদ্য উদ্বৃত্ত দেশে পরিণত হয়েছে। এই সাফল্য রাতরাতি আসেনি। এটি হচ্ছে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও দৃঢ় অঙ্গীকারের ফল।

বিগত সাড়ে সাত বছরে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে এই সাফল্যকে বিস্ময়কর বলে অভিহিত করছেন। কিন্তু তা মোটেও বিস্ময়কর নয়। এই সাফল্য এসেছে সরকারের ওপর জনগণের এবং জনগণের ওপর সরকারের নিরঙ্কুশ আস্থার ভিত্তিতে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে গোপালগঞ্জ দীর্ঘ দিন ধরে উপেক্ষিত ছিল।
তিনি বলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এ অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়ন করেছে। কারণ, বর্তমান সরকার দেশের সকল অংশের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন নীতিতে বিশ্বাসী।

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে একটি গণমুখী স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়ন করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশের সকল বিভাগে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/পিকে