শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সিলেটে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, একজনের মৃত্যু নিজেদের ট্যাংক থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংসদীয় কূটনীতি কার্যকর হাতিয়ার এআই ভিডিওর ফাঁদে ভারতের রাজনীতি কোরবানির চাহিদার চেয়ে ২২,৭৭,৯৭৩ অতিরিক্ত গবাদিপশু প্রস্তুত কক্সবাজারের আদলে সাজবে পতেঙ্গা ছিনতাই হতে যাওয়া ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করলেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ‌‘হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ কেস খেলবা আসো, নিপুণকে ডিপজল পর্যটন খাতে তুরস্ককে বিনিয়োগের আহ্বান মন্ত্রীর গাজায় ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত বিদেশি ঋণনির্ভর প্রকল্পের অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে পাপুলের শ্যালিকা ও দুই কর কর্মকর্তার বিরু‌দ্ধে দুদকের মামলা ‘কাক পোশাকে’ কানের লাল গালিচায় ভাবনা ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ আটক ৩ বুদ্ধ পূর্ণিমা ঘিরে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই : ডিএমপি কমিশনার ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ লাবনীসহ গ্রেপ্তার ৭ ‘ডো‌নাল্ড লু ঘুরে যাওয়ায় বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে’ রূপপুর-মেট্রোরেলসহ ১০ প্রকল্পেই বরাদ্দ ৫২ হাজার কোটি

এলোমেলো বিড়ি ফকিরের আস্তানা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
  • ৩৮৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি: ঝড়-ফুকের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা প্রদানের নামে প্রতারনা করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ বরিশালের গৌরনদীতে হাসি বেগম নামের এক ভন্ড ফকিরের (বিড়ি ফকির) আস্তানা গুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ভন্ড ফকির হাসি বেগম (৪৮) ও তার সহযোগেী মতিয়ার রহমান মতি (৬২)কে আটক করে। শুক্রবার রাতে উপজেলার উত্তর পালরদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গৌরনদী মডেল থানার চলতি দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আফজাল হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে প্রতারনার শিকার স্থানীয় বিক্ষুব্ধ লোকজন ভন্ড ফকিরের আস্তনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে আস্তনা গুড়িয়ে দিয়ে ফকিরকে মারধর করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আস্তনা থেকে তছবি, দুটি বাঘের মূর্তি, মরাগরুর হাড়গোড়সহ প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত উপকরণ উদ্ধার করে। এ সময় ভন্ড ফকির হাসি বেগম ওরফে বিড়ি ফকির (৪৮) ও তার সহযোগী মতিয়ার হোসেন মতি (৬২)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না পাওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় মো. জামাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, উপজেলার উত্তর পালরদী গ্রামের দিনমজুর জালাল মোল্লার স্ত্রী হাসি বেগম ওরফে বিড়ি ফকির ২০০৭ সালে গাজী-কালুর স্বপ্নাদেশ পাওয়ার কথা বলে তার কিছু দালাল বিভিন্ন প্রচারনা চালান য়ে, সে (হাসি) স্বপ্নে আদৃষ্ট ও ঐশ্বরিক শক্তির বলিয়ান হয়েছে এবং যে কোন মানুষের অতিত ও ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারে। এ ছাড়া মানুষের সব ধরনের রোগ মুক্তির জন্য ফকির হাসি প্রতিদিন ঝাড়-ফুক, তেল ও পানি পড়া এবং গোসলের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেয়ার প্রচারনা চালালে তার কাছে রোগী আসা শুরু করে। এ সুবাদে উত্তর পালরদী গ্রামে (দাস বাড়ির ব্রিজের গোড়ায়) গড়ে তোলেন আস্তনা। সার্বক্ষনিক দিনরাত ওই আস্তনায় বসে হাসি বেগম একের পর এক বিড়ি ফুকতে থাকেন বিধায় তার নাম দেওয়া হয়েছে ফকির হাসি বেগম ওরফে বিড়ি ফকির। প্রতিদিন তার ১০/১২ প্যাকেট বিড়ি লাগে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর বেশীর ভাগই নারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আস্তনা গড়ে তোলার পর সেখানে চিকিৎসার নামে প্রতারনার পাশাপাশি আস্তনায় গড়ে তোলেন নারীদের নিয়ে অসামাজিক কর্মকান্ড ও মাদকের আড্ডা। ভন্ড ফকির হাসি বেগম তার অবৈধ প্রতারনা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় উঠতি নেতাদের নিয়মিত মাসোহারা দেন। যে কারণে ওই সব নেতাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি কেউ।
প্রতারনার শিকার ভূক্তভোগী উজিরপুর উপজেলার বামরাইল গ্রামের গৃহবধূ আলেয়া বেগম (৩২) অভিযোগ করে বলেন, মেয়েলি কিছু সমস্যাজনিত রোগের কারণে আমি বিড়ি ফকিরের কাছে গেলে ১০১ টাকা দর্শন ফি দেই। এরপর সে তৈলপড়া, পানিপড়া দিয়ে ১ হাজার ১ শত টাকা হাতিয়ে নেন। এতে ভাল না হলে পুনরায় তার কাছে গেলে গোসল দেয়ার নামে আমার কাছ থেকে ৮ হাজার ৬ শত টাকা হাতিয়ে নেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলার রাংতা গ্রামের মফসের আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার পেটে ব্যাথা হওয়ায় বিড়ি ফকিরের কাছে যাই। ১০১ টাকা দিয়ে নাম অর্ন্তভূক্ত করি। এসময় আমাকে দেখে বলে এখন কোন চিকিৎসা হবে না। ফকিরের ধ্যানমুহুর্তে তোর আসতে হবে। ৩ দিন পরে গেলে আমাকে বলে তোকে মানুষ কুফরি দিয়ে ক্ষতি করেছে ও বান মেরেছে, তুই বাঁচবি না। চিকিৎসা দেয়ার নামে আমার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। একই অভিযোগ করেন গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর গ্রামের রাবেয়া বেগম, নলচিড়া গ্রামের মমতাজ বেগম, খাঞ্জাপুর গ্রামের সাফিযা বেগম।
গৌরনদীর সুন্দরদী গ্রামের মিজান সরদার, মোল্লা ফারুক হোসেন বলেন, আমরা গত শুক্রবার সকালে ভন্ড ফকিরের আস্তনায় গিয়ে ১০১ টাকা দিয়ে নাম তালিকাভূক্ত করি। ফকির আমাদের অতীত সম্পর্কে যা বললেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও মনগড়া। একই দিনে গৌরনদী থানার কনস্টেবল মোঃ মাইনুল চিকিৎসার জন্য ভন্ড ফকিরের আস্তনায় এসে প্রতারনার ধরন সম্পর্কে নিশ্চিত হন। ভন্ড ফকির প্রতারনা করে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছি বলে তারা জানান।
আস্তনার ফকির হাসি বেগম ওরফে বিড়ি ফকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি স্বপ্নে পেয়েছি ওই একজনের নির্দেশে চিকিৎসাসেবা দেই, এতে কোন প্রতারনা নেই।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com