ভারতে অবৈধ বসবাসের অভিযোগে পৃথক রাজ্য থেকে ১৮ বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে ১০ জন, পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে ছয় জন এবং ত্রিপুরার আগরতলা থেকে দুই বাংলাদেশি নাগরিক আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, ওড়িশা ক্রাইম ব্রাঞ্চের ‘স্পেশাল ট্রাস্ট ফোর্স’ এর সদস্যরা ভুবনেশ্বর রেল স্টেশনে অভিযান চালিয়ে ১০ জন বাংলাদেশিকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে ছয়জন পুরুষ, তিনজন নারী এবং এক শিশু রয়েছে।
আটকের পর তারা জানিয়েছেন, দালালের মাধ্যমে সীমান্ত অতিক্রম করে তারা আসামের ধুবরি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে ট্রেনে চড়ে ভুবনেশ্বরে পৌঁছেন স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় সাতটি মোবাইল ফোন, বেশ কিছু বাংলাদেশি টাকা এবং ভারতীয় রুপি। তারা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, বাগেরহাট, ফিরোজপুর এবং ঢাকার বাসিন্দা।
রবিবার (৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে এসটিএফ জানিয়েছে, ‘পাসপোর্ট, ভিসা বা বৈধ ট্রাভেল ডকুমেন্ট ছাড়া এই বাংলাদেশি নাগরিকররা ভুবনেশ্বরে এসেছিল এবং তারা তাদের আসল পরিচয় গোপন করেছিল। তাই এই বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ‘ফরেনার্স আইন-১৯৪৬’ এর ১৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (Judicial Custody) পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে আটক করা হয়েছে ছয় বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতদের মধ্যে পাঁচজন যুবক এবং একজন শিশু রয়েছে। তাদের সহযোগিতা করায় দুই ভারতীয় দালালকে আটক করেছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রবিবার (৯ মার্চ) বাগডোগরা পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশের ভদ্রগঞ্জ পুলিশ থানার অন্তর্গত বালুঘাটার বাসিন্দা সবুজ দাস প্রায় চার বছর আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং গোসাইপুর নতুন পাড়া এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন এবং রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন।
পরবর্তীকালে ভুয়া নথি সংগ্রহ করে ভারতীয় আধার কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি করেন সবুজ। সম্প্রতি গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে তার আরও পাঁচ আত্মীয়কে ভারতে নিয়ে আসেন সবুজ। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই সেখানে অবৈধভাবে তারা সকলে বসবাস শুরু করেন।
নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই এরপর পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ‘ফরেনার্স আইন-১৯৪৬’ এর ১৪ ধারায় মামলা করা হয় এবং ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে, ত্রিপুরার আগরতলা রেল স্টেশন থেকে আটক করা হয়েছে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে। তাদেরকে ভারতে প্রবেশের সহায়তা করার অভিযোগে আটক করা হয়েছে এক ভারতীয় দালালকেও।
আগরতলা রেলওয়ে পুলিশ ফোর্স, বিএসএফ, আগরতলা গভর্নমেন্ট রেল পুলিশ এবং গোয়েন্দা দপ্তরের কর্মকর্তারা যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। আটককৃত দুই বাংলাদেশি নাগরিক বাংলাদেশের হবিগঞ্জের বাসিন্দা।
অন্যদিকে, দালাল সন্দেহে আটক ভারতীয় নাগরিক ওড়িশার ভদ্রক জেলার বাসিন্দা। সোমবার অভিযুক্তদের স্থানীয় আদালতে প্রেরণ করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ