নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনার মধ্যে অর্ধযুগেরও বেশি সময় পর বর্ধিত সভায় বসেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে এ সভা শুরু হয়। সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন।
এছাড়া সভায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মহানগর ও জেলার সব থানা, উপজেলা, পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবসহ প্রায় চার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত আছেন।
এর বাইরে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া এবং মনোনয়নের জন্য প্রাথমিক চিঠি পাওয়া নেতারাও সভায় উপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভায় তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য শুনবেন এবং নতুন বার্তা দেবেন।
দলের পক্ষ থেকে এটিকে ‘বিশেষ বর্ধিত সভা’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। তবে সভার সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা কী, সে সম্পর্কে খোদ দলের নেতাকর্মীরাই এখনো অন্ধকারে।
গুঞ্জন রয়েছে, বর্ধিত সভা থেকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সাংগঠনিক এবং আগামী নির্বাচনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এ সভার মধ্য দিয়ে বিএনপি নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু করবে বলেও মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, বিএনপি এখন অনেকটাই নির্বাচনমুখী। দলটির সব মনোযোগ এখন নির্বাচন ঘিরে। দলটি মনে করছে, অতিপ্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কার শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপেও রাখতে চায় তারা।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, দলের নেতাকর্মীদের বিশেষ বর্ধিত সভার সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে নেতাকর্মীদের অনুমান, চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপির সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল হয়তো না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দলের মহাসচিব, সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদলের সিদ্ধান্ত আসতে পারে বিশেষ বর্ধিত সভা থেকে।
এছাড়া বর্ধিত সভা থেকে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২২০ থেকে ২২৫টি আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সবুজ সংকেত দেওয়া হতে পারে। বাকি আসনগুলো বরাদ্দ রাখা হতে পারে জোটে বা যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোর জন্য। সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নতুন মুখ এবং ৮০ শতাংশ পুরোনো মুখ সবুজ সংকেত পেতে পারেন। এক্ষেত্রে ৫ শতাংশ আমলা, ৩০ শতাংশ ব্যবসায়ী এবং বাকি ৬৫ শতাংশ থাকতে পারেন রাজনীতিবিদ।
অহেতুক ভিড় না করার অনুরোধ রিজভীর
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্ধিত সভায় বহু সংখ্যক দলীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণের অদম্য ইচ্ছার প্রকাশ দেখে দল অভিভূত। তবে বর্ধিত সভায় পূর্ব নজির অনুযায়ী দলের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত নির্ধারিত নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সে কারণে নির্ধারিত নেতৃবৃন্দ ছাড়া অন্য কাউকে আমন্ত্রণ জানানো সম্ভব হচ্ছে না।
দলের নেতাকর্মীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, দলের যে সব নেতৃবৃন্দ, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা সভাস্থলে উপস্থিত থাকতে পারবেন না তাদের জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলের আশেপাশে অহেতুক ভিড় করে যানবাহনসহ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ