শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পর্দা উঠল অমর একুশে বইমেলার বিশ্ব ইজতেমায় যৌতুকবিহীন ৬৩ বিয়ে পাকিস্তানে রাতভর সংঘর্ষে ১৮ সেনাসহ নিহত ৪১ বই ছাপানোর আগে একাডেমি বা পুলিশকে পড়তে দেওয়া হাস্যকর তৌহিদুলকে সাদা পোশাকধারীরা নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে গণঅভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে এসেছে: প্রধান উপদেষ্টা পিচ্চি হেলাল-ইমনসহ শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কে কোথায় জানে না পুলিশ! প্রায় এক বছর পর খুললো রাফাহ ক্রসিং সিরাজগঞ্জে ফুলজোড় নদীতে ডুবে তিন কলেজছাত্র নিখোঁজ দেশের কোথাও দখল-চাঁদাবাজিতে জামায়াত জড়িত নয়: জামায়াত আমির আরাকান আর্মি থেকে মুক্তি পেয়ে টেকনাফে পৌঁছাল কার্গো বোট বাংলা একাডেমি পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা টাকা না দেওয়ায় লিবিয়ায় দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা শিল্পের মর্যাদা আসবে শিল্পীর মর্যাদার মাধ্যমে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা কথা বলবেন হিসাব করে, উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে সেলিমা রহমান বিশ্ববাজারে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলো সোনা ঢাকাকে হারিয়ে প্লে অফে খুলনা, রাজশাহীর বিদায় ঢাকায় মেক্সিকান দূতাবাস স্থাপনে গুরুত্বারোপ বই প্রকাশের আগে পান্ডুলিপি সংক্রান্ত সংবাদের বিষয়ে যা বলছে ডিএমপি ঠাকুরগাঁওয়ে রামদা হাতে ত্রাস সৃষ্টিকারী সেই জ্যোতি গ্রেফতার

বিদেশি সহায়তা বন্ধ করে নিজের পায়ে ‘কুড়াল মারছে’ আমেরিকা

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

বিদেশি সহায়তা নিয়ে সমালোচনা করা সহজ। অনেক সময় এই অর্থ অপচয় বা আত্মসাৎ হয়। এর উপকারিতা অনেকের দৃষ্টিতে স্পষ্ট নয়। তাছাড়া, বিদেশিদের সাহায্য করতে গিয়ে দেশের জনগণের জন্য কম অর্থ রাখা হয়—এই যুক্তিতে অনেকে এর বিরোধিতা করেন। এসব কারণেই ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির প্রবক্তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য এটি একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে।

তবে বিশ্বের বিপুল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য যখন রাতারাতি সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়, তখন এর নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। গত ২৪ জানুয়ারি আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তর প্রায় সব ধরনের সহায়তা বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরপরই বিভিন্ন দেশের বহু ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যায়, থেমে যায় এইচআইভি আক্রান্তদের ওষুধ সরবরাহসহ অন্যান্য ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের কাজ।

একইভাবে, স্থলমাইন অপসারণ, শরণার্থীদের সহায়তাও বন্ধ হয়ে যায়। সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের বন্দি রাখা আমেরিকা-সমর্থিত কারাগারগুলোকে দুই সপ্তাহের জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছে, এটি আপাতত স্বস্তিদায়ক হলেও তা খুবই ক্ষণস্থায়ী।

এই পরিস্থিতি চীনের জন্য একপ্রকার উপহার হয়ে এসেছে। কারণ তারা সুপারপাওয়ার হওয়ার লড়াইয়ে আমেরিকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

 

তাহলে কেন ট্রাম্প প্রশাসন নিজ দেশের স্বার্থকে এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে?

এর অন্যতম কারণ জনমত। বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী, আমেরিকানরা মনে করে, বিদেশি সহায়তা বাজেটের প্রায় ২৫ শতাংশ খেয়ে ফেলে। বাস্তবে এই অংকটা মাত্র ১ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে ছিল ৬৮ বিলিয়ন ডলার (ইউক্রেনকে দেওয়া অধিকাংশ সহায়তা বাদে)। এটি দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ০.২৫ শতাংশ।

নতুন প্রশাসনের জন্য ব্যয় পুনর্মূল্যায়ন করা স্বাভাবিক। তবে দায়িত্বশীল প্রশাসন প্রথমে ক্ষতি না করার নীতি অনুসরণ করতো। আমেরিকা বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তার ৪০ শতাংশ জোগান দেয়। তাই, তারা আগে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতো এবং পরে মূল্যায়ন করতো কী অব্যাহত রাখা হবে, পরিবর্তন করা হবে বা বাতিল করা হবে।

 

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন হেঁটেছে সম্পূর্ণ বিপরীত পথে—প্রথমে সহায়তা বন্ধ করেছে এবং তারপর ৯০ দিনের পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চারদিনের মাথায় পিছু হটতে বাধ্য হন এবং ‘জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তা’ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। যদিও তার এই কথার সুনির্দিষ্ট অর্থ এখনো স্পষ্ট নয়।

এই বিশৃঙ্খলার কয়েকটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা রয়েছে। একটি হলো, এটি অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটেছে। ট্রাম্প সাধারণত আনুগত্যের ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেন, দক্ষতার ভিত্তিতে নয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ এখনো শূন্য রয়েছে।

কিংবা তার কর্মকর্তারা হয়তো নিজেদের কড়া অবস্থান দেখাতে চেয়েছেন। ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে নতুন উন্নয়ন সহায়তা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু রুবিও আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে চলমান মানবিক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্পও বন্ধ করে দিয়েছেন।

এর পেছনে আদর্শগত কারণও থাকতে পারে। প্রশাসন ‘ওক’ ভাবধারাকে নির্মূল করতে এবং আমলাতন্ত্রকে দমন করতে একপ্রকার ধাক্কা দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। হয়তো তারা বোঝাতে চায়, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মানে সত্যিকার অর্থেই বিশ্বকে দ্বিতীয় স্থানে রাখা।

আবার, ট্রাম্প হয়তো সৃষ্ট বিশৃঙ্খলাকে উপভোগ করছেন। তার দৃষ্টিতে, অরাজক পরিবেশে শক্তিশালীরাই টিকে থাকে, আর বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ তো আমেরিকা।

এক্ষত্রে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত ব্যাখ্যা হলো, এসব কারণ মিলিয়েই এই নীতির জন্ম। আর তার ফলাফল হলো অনিয়মিত ও নির্মম পররাষ্ট্রনীতি। অভিবাসীদের প্রতি কঠোর নীতির মতোই বিদেশে নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করাটাই হয়তো নতুন প্রশাসনের উদ্দেশ্য।

মার্কো রুবিও চান, এটি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে প্রভাব ফেলুক। তার মতে, বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আমেরিকার নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার সুযোগ নিয়েছে এবং এতে আমেরিকার স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, প্রতিটি ব্যয়িত ডলার আমেরিকাকে নিরাপদ, শক্তিশালী বা আরও সমৃদ্ধ করতে হবে।

কিন্তু এ সপ্তাহে তিনি বুঝতে পেরেছেন, এর অনিচ্ছাকৃত পরিণতি কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। বিদেশি বন্দিশিবিরগুলো থেকে উগ্রবাদীদের পালানোর ঝুঁকি আমেরিকাকে নিরাপত্তাহীন করছে। মানবিক সহায়তা বন্ধ করে মিত্র ও সম্ভাব্য সহযোগীদের দূরে সরিয়ে দিয়েও আমেরিকা নিজেকে দুর্বল করছে। এভাবে দারিদ্র্যের বিস্তার শেষ পর্যন্ত আমেরিকাকেও দরিদ্র করবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com