ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি স্থায়ী দারিদ্র্যের দিকে ধাবিত হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন।
আজ সোমবার বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অসবর্ন রাজস্ব বিভাগের করা এক গবেষণার উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, ইইউতে থাকলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ২০৩০ সাল নাগাদ যে আকারে উন্নীত হবে, ইইউ ছাড়লে সেই আকার ৬ শতাংশ কম হবে। এর ফলে যুক্তরাজ্যের প্রতিটি পরিবার বছরে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ পাউন্ডের (প্রায় পাঁচ লাখ টাকা) ক্ষতির শিকার হবে। ফলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ইইউর অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়বে।
ইইউতে থাকা না থাকা প্রশ্নে আগামী ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে গণভোট হবে। সেই গণভোট সামনে রেখে গতকাল রোববার ওই গবেষণা তথ্য প্রকাশ করে রাজস্ব বিভাগ। গণভোট সামনে রেখে ইইউর পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল প্রচারে নেমেছেন দেশটির রাজনীতিকেরা। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ সরকারের মন্ত্রী ও এমপিদের বিভক্ত অবস্থান এ বিতর্ককে তীব্র করেছে। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সরকার ইইউতে থাকার পক্ষে প্রচার চালালেও সরকারের সাতজন মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের দেড় শতাধিক এমপি ইইউতে থাকার বিপক্ষে প্রচারে নেমেছেন।
রাজস্ব বিভাগ ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের সম্ভাব্য নানা চিত্র তুলে ধরে ২০০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদন উল্লেখ করে, ইইউ ছাড়লে যুক্তরাজ্য ২০৩০ সাল নাগাদ প্রায় ৩৬ বিলিয়ন পাউন্ডের সমপরিমাণ ক্ষতির শিকার হবে। রাজস্ব বিভাগের এসব তথ্যকে অযৌক্তিক ও মূল্যহীন বলে মন্তব্য করেছেন সরকারদলীয় একজন এমপি। কনজারভেটিভ পার্টির এমপি জন রেডউড বিবিসিকে বলেন, এই রাজস্ব বিভাগই ইউরোপীয় মূল্য বিনিময় কৌশলের (ইউরোপিয়ান এক্সচেঞ্জ রেট মেকানিজম) সদস্য হওয়ার ক্ষতি নিরূপণে ব্যর্থ হয়েছে এবং ২০১১ সালে ঘটে যাওয়া ইউরোজোন সংকটে যুক্তরাজ্যের ক্ষতির পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
অসবর্ন বলছেন, ইইউ ত্যাগ করলে যুক্তরাজ্যে ঘরে ঘরে মানুষ চাকরি হারাবে, ঘরবাড়ির দাম পড়ে যাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ।
দেশটির কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল রোববার বলেন, ইইউতে থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আর অভিবাসনের কারণে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কল্যাণ ভাতার ওপর চাপ পড়ছে। তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসন ৩ লাখ ৩৬ হাজার বৃদ্ধি করা হলেও আসনসংকটের কোনো উন্নতি হয়নি। ইইউ ছেড়ে আসাকে উত্তম বিকল্প হিসেবে দেখছেন তিনি।