দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তারা কেউ ছাড় পাবে না। তাদের হয় কারাগারে থাকতে হবে নয়তো জামিনে থাকবেন।
শনিবার দুদক কার্যালয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থার মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহযোগিতা নিয়ে মাসুদকে বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ থেকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অবৈধভাবে প্রায় দুই কোটি টাকা অর্জনের অভিযোগের একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ আছে। রিমান্ডে এনে সেসব অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দুদকের এই কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এ পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। অনিয়ম দুর্নীতির মামলার যারা আসামি সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার ডিবি পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় তাকে সেগুনবাগচিায় দুদক কার্যালয়ে হাজির করা হয়। প্রায় দেড় ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপ পরিচালক) মো. আকতারুল ইসলাম জানান, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২ জানুয়ারি মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মাসুদ বিশ্বাস নিজ নামে এক কোটি ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ৬২২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করে; তা নিজ ভোগদখলে রেখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ ও অর্থপাচারের অভিযোগ পাওয়ার পর গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। অভিযোগ তদন্তে সংস্থাটির উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
বিএফআইইউয়ের সাবেক এই প্রধানের বিরুদ্ধে দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ কেনায় সন্দেহজনক অনিয়মের অভিযোগটি ঘুসের বিনিময়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে না পাঠিয়ে সেটির শেষ টানা, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান তমাল পারভেজের ব্যাংক থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা লুটপাটসহ আর্থিক অনিয়মের প্রতিবেদনকে গোয়েন্দা প্রতিবেদন হিসেবে না পাঠিয়ে ‘সাধারণ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন’ হিসেবে পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের আরও বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ