পালটা-পালটি দাবির পর অবশেষে হামাসের সঙ্গে দোহায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, এ নিয়ে শুক্রবার নিরাপত্তাসংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে চুক্তির ওপর ভোটাভুটি হবে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) হামাস ও ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তির কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার। তবে নেতানিয়াহু দাবি করেন, হামাস চুক্তির শর্ত পরিবর্তন করতে চাচ্ছে। আলোচনা শেষ মুহূর্তে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং কাতার চুক্তির ঘোষণা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর নেতানিয়াহুর এই বিবৃতি আসে। তিনি অভিযোগ করেন, মন্ত্রিসভা বৈঠক করবে না যতক্ষণ হামাস পিছু না হটে।
তবে নেতানিয়াহুর এই দাবি উড়িয়ে দেয় হামাস। তবে গোষ্ঠীটি নিশ্চিত করে, তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ইসরাইলি প্রত্যাহার না হলে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে না।
টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, হামাসের সঙ্গে সাক্ষরিত চুক্তি পাশ করতে আগামীকাল শনিবার রাতে মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ব্যাখ্যা করে বলেছেন, চুক্তি বিরোধীতাকারীদের হাইকোর্টে পিটিশন দাখিলের জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় দেওয়া জরুরি। আর শুক্রবার বিকেলে বৈঠক করলে, সাব্বাথ পালনকারী ধর্মীয় সদস্যরা পর্যাপ্ত সময় পাবেন না। তবে নেতানিয়াহু শুক্রবার এই বৈঠক করতে পারলে, শনিবার সরকারিভাবে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি পাশ হবে।
সাব্বাথ ইহুদি ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবস মনে করা হয়, যা প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পালন করা হয়। এই সময়ে ইহুদিরা কাজকর্ম থেকে বিরত থাকেন এবং বিশেষভাবে প্রার্থনা, বিশ্রাম ও পরিবারের সাথে সময় কাটানোর মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করেন। সাব্বাথ পালন করার সময়, ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে কোনও কাজ করা নিষিদ্ধ।
তবে এ ক্ষেত্রে জিম্মিদের জীবন রক্ষার্থে সাব্বাথ লঙ্ঘনের ধর্মীয় নিয়ম কেন প্রযোজ্য নয়, তা স্পষ্ট নয়। দোহা থেকে আলোচক দলের ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকলেও, শুক্রবার সন্ধ্যার আগে কেন নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা এবং পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার বৈঠক সম্ভব নয়, তা বলা হয়নি।
শনিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক হলে পিটিশন দাখিলের ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা রোববার পর্যন্ত বাড়বে। এর ফলে চুক্তি কার্যকর হতে সোমবার পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। যা মুক্তির জন্য নির্ধারিত প্রথম তিন জিম্মিকে অতিরিক্ত এক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
নেতানিয়াহুর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার খবর পেয়ে আলোচক দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অবশিষ্ট ৯৮ বন্দির পরিবারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। এছাড়া নেতানিয়াহু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, ইসরাইল রাষ্ট্র যুদ্ধের সমস্ত লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একইসঙ্গে আমাদের সকল বন্দির, জীবিত এবং মৃত— প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করাও অন্তর্ভুক্ত।
বাংলা৭১নিউজ/এবি