প্রতারণার মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে তিন কোটি টাকা মূল্যের চারটি গাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন– জারাক আহমেদ (৩৮), আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮), জামির হোসেন (৩৬), সজল আহম্মেদ (৩০) ও আব্দুর রহমান রুবেল (৫৬)। এসময় তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চারটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশ।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।
তিনি বলেন, ইমদাদুল হক খান ওরফে নওশাদ (৪২) একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। তেজগাঁওয়ের ২৪০, আজিজ কোর্ট গ্রাউন্ড ফ্লোরে তার একটি গাড়ি বিক্রির শো-রুম রয়েছে। এবি ড্রাইভ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ (৩৮) ও চেয়ারম্যান জামির হোসেন (৩৬) গত ২৬ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিক্রির উদ্দেশে চারটি গাড়ি ডেলিভারি চালান মূলে ভাটারা থানাধীন নর্দ্দা প্রগতি সরণি এলাকায় এবি ড্রাইভ লিমিটেডের শো-রুমে নিয়ে যায়।
গাড়ি চারটির মধ্যে ২০২৩ মডেলের একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি, ২০১৮ মডেলের একটি টয়োটা ভেলফেয়ার জিপ গাড়ি, ২০১৮ মডেলের একটি টয়োটা এসকোয়্যার মাইক্রোবাস ও ২০১৯ মডেলের একটি টয়োটা এক্সিও প্রাইভেটকার।
গাড়ি চারটির সর্বমোট বাজার মূল্য তিন কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা গাড়িগুলো ফেরত দেবেন না বলে জানান এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন। ইমদাদুল হক খান খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তারা গাড়িগুলো প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের উদ্দেশে এবি ড্রাইভ লিমিটেডের নর্দ্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকার শো-রুম থেকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছেন।
এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি ইমদাদুল হক খান জারাক আহমেদ ও জামির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
তদন্তাধীন এ মামলায় থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত ২টার দিকে গুলশান লিংক রোড এলাকা থেকে এবি ড্রাইভ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও কাশিমপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এজাহারনামীয় জামির হোসেনের সহযোগী আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮)কে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি ইবনে মিজান আরও জানান, আটক আবুল কালাম রিফতিয়ার জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জানান তার বস জামির হোসেন তাকে একটি টয়োটা এসকোয়্যার মাইক্রোবাস গাড়ি এবং একটি টয়োটা এক্সজিও প্রাইভেটকার তার জিম্মায় এক আত্মীয়ের বাসায় রাখতে বলেন।
ওই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মহানগর আফতাব নগর এলাকা থেকে ওই গাড়ি দুটি উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে আরও দুটি গাড়ির কথা জিজ্ঞাসাবাদ করলে সজল আহম্মেদ (৩০) অবগত রয়েছেন বলে জানান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সজল আহম্মেদ ও আব্দুর রহমান রুবেলকে আটক করা হয়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ভূইগড় এলাকা থেকে সাইদুর রহমানের হেফাজত থেকে একটি টয়োটা ভেলফেয়ার জিপ গাড়ি ও একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা চারটি গাড়ি আটকরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেন ডিসি ইবনে মিজান। তদন্তাধীন মামলায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ