যমুনার বুক প্রায় পানিশূন্য। সেখানে জেগে উঠেছে অসংখ্য বালু ও ডুবোচর। এসব বালু ও ডুবোচরে রয়েছে আঁকাবাঁকা অসংখ্য পানিপথ। পথগুলোতে কোথাও ছিপছিপে, কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও কোমর পানির দেখা মেলে। এভাবে প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট কারণে যমুনার নৌপথগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। যার ফলে নৌ-পথে যাতায়াতকারী মানুষ জনের দুর্ভোগ দিনদিন বাড়ছে। কিন্তু এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই।
যমুনা নদীর বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীপথে নতুন চর জেগে ওঠায় পণ্যবাহী নৌকা ও জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অসংখ্য চরাঞ্চলের মানুষ বিকল্প পথে কষ্ট করে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। কেউ সাইকেলে, কেউবা কাঁধে বাঁশের তৈর বাঙের (স্থানীয় ভাষায়) দুই প্রান্তে মালপত্র ঝুলিয়ে যমুনার বুকে জেগে ওঠা বালুচর মারিয়ে হেঁটে যার যার গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। এদের মধ্যে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও রয়েছেন।
এদিকে যমুনার বুকে অসংখ্য বালুচর ও ডুবোচর জেগে ওঠায় এ অঞ্চলের সিংহভাগ সব খেয়াঘাট বন্ধ রয়েছে। আরও কয়েকটি বন্ধ হবার উপক্রম। এসব নৌপথ বন্ধ হওয়ায় চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে এ শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় কৃষকরা যমুনার বুক জুড়ে সরিষা, ভুট্টা, খেসারি কালাই ও চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসল চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
চৌহালী নৌকা ঘাটের ইজারাদার নূরুল ইসলাম বলেন, যেভাবে নদীর পানি কমছে, তাতে নৌকা চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এখন ড্রেজিং করে নৌপথ তৈরি করা না হলে যোগাযোগ একদম বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে জেলা সদরের সঙ্গে নৌপথের চৌহালীর যাবতীয় কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়বে। দ্রুত ড্রেজিং করে নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার দাবি জানান তিনি।
চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শওকত মেহেদী সেতু বলেন, বর্ষার শুরুতে যমুনা ফুলে ফেঁপে উঠে নদীর দু-পাড়ে ভাঙন দেখা দেয়। আর শুষ্ক মৌসুমে নৌপথের পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান গুলোকে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। এসব সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যমুনা নদীতে ড্রেজিং ও ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ