যশোরের শার্শা সীমান্ত থেকে জাহাঙ্গীর আলম (৫০) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া সাবু হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তির সীমান্ত থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফিরে মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিবারের অভিযোগ, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের নির্যাতনে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে শার্শা উপজেলার পাঁচভুলাট এলাকা ও পুটখালী সীমান্তের ইছামতী নদীর কাছ থেকে বিজিবির সহায়তায় মরদেহ দুটি উদ্ধার করে শার্শা ও বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ।
নিহত সাবু হোসেন বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘীরপাড় গ্রামের মৃত আরিফ হোসেনের ছেলে ও জাহাঙ্গীর আলম একই থানার কাগজপুর গ্রামের মৃত ইউনুচ আলী মোড়লের ছেলে।
পুলিশ জানায়, সকালে খুলনা বিজিবির পাঁচভুলাট বিওপি দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মেইন পিলার ১৭/৭এস এর ১০২ আর পিলার থেকে আনুমানিক ১০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্ত শূন্যলাইন থেকে ৩০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইছামতি নদীর পাড়ে ভান্ডারীর মোড় এলাকায় জাহাঙ্গীর আলমের মরদেহ বিবস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশের সীমান্তে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে শার্শা থানার এসআই আওয়াল হোসেন ও এসআই কামরুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে বিজিবির উপস্থিতিতে মরদেহ নদীর তীর থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। মরদেহের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহতের পরিবার থেকে জানিয়েছে, তিনি গত রাতে চোরাচালানের উদ্দেশ্যে ভারত সীমান্তে যান। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক আটক হয়ে মারধরের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসার সময় মারা গেছেন।
অপরদিকে রাত দেড়টার দিকে বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘীরপাড় গ্রামের মৃত আরিফ হোসেনের ছেলে সাবু হোসেন বেনাপোলের পুটখালী সীমান্তের ইছামতি নদী সাঁতরে ভারতীয় গরু পারাপারের জন্য ভারত সীমান্তে গেলে বিএসএফের হাতে আটক হন। বিএসএফ তাকে মারধর করে বিবস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশ সীমান্তে রেখে চলে যায়।
আহত অবস্থায় নাসিরের আম বাগানে গেলে স্থানীয় লোকজন তার বাড়িতে ফোন করে খবর দিলে তার মা এবং স্ত্রী গিয়ে তাকে ভোর ৪টার সময় নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
সহকারী পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে আমরা তদন্ত করছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে মৃত্যুর কারণ জানাতে পারবো।
খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শার্শার সীমান্তের ইছামতি নদীর পাড় থেকে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের পরিচয়ও পাওয়া গেছে। তাদের গায়ে একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শার্শা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ