বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
কুইক রেন্টাল দায়মুক্তি অবৈধ ছিল: হাইকোর্ট ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তার নিয়োগ হয়েছে নভেম্বরে খেলার সময় ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারসেরা র‍্যাংকিংয়ে শান্ত আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, জেনেভার শ্রম কাউন্সেলরকে প্রত্যাহার জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় চাই নতুন এক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামো ৮ বছর পর ‘লাল গোলাপ’ নিয়ে ফিরছেন শফিক রেহমান বাংলাদেশে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা-অধিকার নিশ্চিত চায় যুক্তরাষ্ট্র জয়া আহসানের প্রশংসায় মজলেন মালয়ালম অভিনেত্রী গভীর রাতে গেলেন চার উপদেষ্টা, তারপর হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা হাজী সেলিমের ছেলে সোলাইমান সেলিম আটক শুধু গাছটা কাটতে পেরেছি, শেকড় এখনও উৎখাত করতে পারিনি অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ যতটা সম্ভব কম হওয়া উচিত: প্রধান উপদেষ্টা গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৪৭ ফিলিস্তিনি ইমন হত্যা মামলায় তাঁতী লীগ নেতা ইকবাল গ্রেপ্তার নুহাশপল্লীতে জ্বললো এক হাজার ৭৬টি মোমবাতি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে বইমেলা: সংস্কৃতি উপদেষ্টা যশোর সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ৩ বাংলাদেশি আটক শেরপুরে পিকআপ-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৩ সেলিনা হায়াৎ আইভীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দখলের মচ্ছব, বন বিভাগই জানে না বনের সীমানা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

কাগজে-কলমে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের আয়তন এক হাজার ২৫০ হেক্টর। কিন্তু বাস্তবে কতটুকু বনভূমি নিজেদের আওতায় রয়েছে তা জানে না খোদ বন বিভাগই। দীর্ঘদিন ধরে আয়তন পরিমাপ না হওয়ায় বনের চারপাশের জমি যে যেভাবে পেরেছেন দখলে নিয়ে সম্প্রসারণ করেছেন চা বাগান, তৈরি করা হয়েছে লেবু ও আনারস বাগান, কটেজ, বাড়িসহ নানান স্থাপনা।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানটি দখল-বেদখলে ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হয়ে প্রায় অর্ধেক আয়তনে এসে দাঁড়িয়েছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্রটির মতে, অনেকবার চেষ্টা করেও ডিমারগেশন (সীমানা নির্ধারণ) করা বা দখলদারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। দখলদারদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় এটা সম্ভব হয়নি।

তবে অনেক পরে হলেও দখলে থাকা লাউয়াছড়া বনের জমি উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদের ‘সাবারী টি প্ল্যান্টেশন’ নামের চা বাগানের দখলে থাকা প্রায় পাঁচ একর জমি উদ্ধার করা হয়।

সবশেষ ৩ নভেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে কমলগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর কমলগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য বদরুল আলম জেনারের দখলে থাকা প্রায় চার একর বনভূমি উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। উদ্ধার করা বনভূমিতে বন্যপ্রাণীদের খাবার উপযুক্ত ফলদ বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে।

বন বিভাগ যে চার একর বনভূমি উদ্ধার করেছে সে জমিতে লেবু চাষ করেন শাহ আলম নামের এক ব্যক্তি। তিনি জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৪ নম্বর সিন্দুরখান ইউনিয়নের বাসিন্দা।

শাহ আলম বলেন, বদরুল আলম জেনারের কাছ থেকে ওই জমি পাঁচ বছরের জন্য লিজ নিয়ে এখানে লেবু চাষ করছেন। অগ্রিম হিসেবে দুই বছরের জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। বাকিটা টাকা ধীরে ধীরে পরিশোধ করার কথা ছিল।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া বনটিকে ১৯৯৬ সালে ‘জাতীয় উদ্যান’ ঘোষণা করে অগ্রিম। ‘রেইন ফরেস্ট’ হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের জন্য বিখ্যাত।

উল্লুক ছাড়াও এ বনে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ জীবজন্তু। জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণার আগে থেকেই বনটিতে দখলের থাবা বসিয়েছেন এর আশপাশের কিছু বাসিন্দা। নিজেদের জমির সঙ্গে বনের ভূমি দখলে নিয়ে আশপাশের বাসিন্দারা বাড়িঘর তৈরি ও লেবু-আনারস বাগানের সীমানা বর্ধিত করেছেন।

তবে দখলের মচ্ছব শুরু হয়েছে মূলত ২০০৯ সাল থেকে। সদ্যসাবেক কৃষিমন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি মো. আব্দুস শহীদ ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করার পর ২০০৯ সালে সংসদের চিফ হুইপ মনোনীত হন।

সে সময়ে তিনি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের স্টুডেন্ট ডরমিটরির পাশে কিছু জমি স্বল্পমূল্যে কিনে ‘সাবারী টি প্ল্যান্টেশন’ নামে একটি চা-বাগান গড়ে তোলেন। সে সময়েই অভিযোগ ওঠে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আব্দুুস শহীদ নিজের কেনা স্বল্প জমির সঙ্গে লাউয়াছড়া উদ্যানের অনেকটা দখল করে ‘সাবারী টি প্ল্যান্টেশনে’ যুক্ত করেছেন।

সেসময় থেকেই বন বিভাগ বারবার বনের জমি পরিমাপের উদ্যোগ নিয়েও পরিমাপ করতে পারেনি। এরপর থেকেই মূলত লাউয়াছড়া বনভূমি লুটেপুটে খেতে শুরু করেন প্রভাবশালীরা।

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ঠিক কতটুকু জমি এখনো প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে তা অনুমান করা কঠিন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জমি দখলবাজদের চিহ্নিত করার কাজ চলমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লাউয়াছড়া বন ডিমারগেশন (পরিমাপ) করা হবে। ডিমারগেশন সম্পন্ন হলে প্রকৃত চিত্রটা জানা যাবে।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, গত ৩ নভেম্বর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আমরা প্রায় চার একর বনের জমি উদ্ধার করেছি। তবে উদ্ধারের সময় কাউকে পাইনি। কেউ এ জমির মালিকানা দাবি করতেও আসেনি।

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উদ্ধার করা বনের জায়গাগুলোতে বন্যপ্রাণীর উপযোগী গাছের চারা লাগানো হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com