পঞ্চগড়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে। একই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে পঞ্চগড় সদর থানায় বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন পঞ্চগড় জেলা যুবদলের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক শাহীন আলম আশিক।
রবিবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বাদী শাহীন আলম আশিক পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের যুগিভিটা এলাকার আবু আলম মুহাম্মদ আব্দুল হাই হেলালের ছেলে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মজাহারুল হক প্রধান, একই আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা, সহসভাপতি আবু তোয়বুর রহমান, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায়, জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন, পঞ্চগড় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পঞ্চগড় পৌর যুবলীগের সভাপতি ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর হাসানাত মো. হামিদুর রহমান, পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ূন কবীর উজ্জ্বল, জেলা আওয়ামী লীগের নেতা সুফিয়ার মাস্টার, জুলফিকার আলী, সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিষ চন্দ্র রায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার নির্দেশে লগি-বৈঠা, রামদা’, ধারালো ছড়া, লোহার রড, বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পঞ্চগড়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালান।
ওই দিন জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সমাবেশে হাফিজাবাদ ইউনিয়নের ঠেকর পাড়া বাজার থেকে যোগ দিতে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের শহরের জালাসী এলাকায় থামানো হয়। পরে পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মজাহারুল হক প্রধানের নেতৃত্বে অস্ত্রসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। এতে মামলার বাদীর বাবা আবু আলম মুহাম্মদ আব্দুল হাই হেলাল (৬৮), ভাই এহসানুল আলম বাদশা (৩০), এমরানুল আলম সম্রাটসহ (৩৩) বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনার পর তাদের উদ্ধার করতে অন্যরা এগিয়ে এলে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে আহতদের চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অনেকে রংপুরসহ ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা নেন। তবে রাজনৈতিক কারণে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেননি তারা। এখন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ায় দীর্ঘদিন পরে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ