বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
‘পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে ইইউ : রিজওয়ানা হাসান সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে বিজিবি-বিএসএফ উত্তেজনা রাজধানীতে পঙ্গু হাসপাতালে আগুন পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে ইইউর সহায়তা চাইলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত পণ্যের শুল্কে পরিবর্তন আনবে না সরকার অংশীজনরা কী চান তার ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন কবে হবে ঢাকা ছাড়লেন খালেদা জিয়া ২ লাখ ৩৮ হাজার বেকারের কর্মসংস্থান করবে বেজা খালেদা জিয়াকে বার্তা পাঠিয়ে যা বললেন জিএম কাদের ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন এলএনজি ও চাল আমদানি, ব্যয় ১০২৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা নাঈমুল ইসলাম খান ও তার পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বিমসটেক সেক্রেটারি জেনারেলের সাক্ষাৎ প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা কবে নাগাদ সব শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে জানি না: শিক্ষা উপদেষ্টা ট্রাইব্যুনালের মূল ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধান বিচারপতি পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন জুলাই বিপ্লবে আহত ১০০ জন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় শুনানি মুলতবি সচিবালয়ের গেটে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: নানা রকম বার্তা ছড়াচ্ছে আশ্রয় শিবিরগুলোতে

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৮
  • ২০০ বার পড়া হয়েছে
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে ঘিরে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে জনমত গঠনের চেষ্টা চলছে।

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে ঘিরে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে জনমত গঠনের চেষ্টা চলছে। মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৮টি শর্ত পূরণের দাবিতে গত দুই মাসে ত্রাণ শিবিরে একাধিক বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে।

রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা পরিচয়ে নাগরিকত্ব প্রদান, নিজস্ব জমি বসত ভিটা ফেরত পাওয়া, মিয়ানমারে অন্যান্য গোষ্ঠীর মতো সমান মর্যাদা নিশ্চিত করা।

এছাড়া ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং হত্যা ধর্ষণের বিচারও চাইছেন তারা।

রোহিঙ্গারা দাবি তুলেছেন আগের ঘটনায় যেন তাদের না ফাঁসানো হয় এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং রোহিঙ্গা প্রতিনিধি নিযুক্ত করা। এছাড়া রোহিঙ্গারা এখন নিরাপত্তার জন্য রাখাইনে জাতিসংঘের অধীনে সেনা মোতায়েনেরও দাবি তুলছেন।

রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের জোবেদা খাতুন বলছিলেন, “অনেক কষ্ট করে আমরা এসেছি। এখন আর যেতে চাই না। রোহিঙ্গা কার্ড দিতে হবে। নিরাপত্তা দিতে হবে। জাতিসংঘের আর্মি দিতে হবে। বিচার করতে হবে।”

কুতুপালং লাম্বাসিয়ার রকিমা এবং সুরত আলমেরও স্পষ্ট বক্তব্য এখন তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে প্রস্তুত নন।

১৯শে জানুয়ারি কুতুপালংয়ে লিখিত ৬ দফা দাবিতে যারা মানবন্ধন করেছিলেন তাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চাশোর্ধ আব্দুল্লাহ। মানবন্ধনে ব্যবহৃত ব্যানারটিও তার জিম্মায় রাখা হয়েছে। নতুন আসা রোহিঙ্গাদের একজন তাকে এটি দিয়েছে জানালেও এর পেছনে কারা সেটি তিনি বলতে পারেননি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন অংশের এমন দাবি নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আলোচনার খবর জানেন পুরোনো রোহিঙ্গা জাফর আলম। ক্যাম্পে লিফলেট ছড়ানো এমনকি ছাপানো ফরমে স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনাও তার নজরে এসেছে।

কিন্তু এসবের নেপথ্যে ‘আরাকান রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস সোসাইটি’ নামে অনানুষ্ঠানিক একটি সংগঠন গড়ে ওঠার যে খবর বেরিয়েছে সেটি তিনি জানেন না।

জাফর আলম বলেন, “এখানে মায়ানমারে যাবে না এরকম বিভিন্ন ধরনের দাবি আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে। নয়াপাড়া গেলে দেখবেন দশ দফা দাবি, বালুখালী দেখবেন আটদফা আবার কুতুপালংয়ে দেখবেন ছয়দফা দাবি দিচ্ছে। তাদেরকে (সাধারণ রোহিঙ্গা) ভুল মোটিভেশন দেয়া হচ্ছে। স্বঘোষিত কমিটিগুলোই হয়তো ভুল মোটিভেশন দিচ্ছে।”

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

ক্যাম্পে ঘুরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, রোহিঙ্গারা নানা মাধ্যমে প্রত্যাবাসন বিষয়ে খবর পাচ্ছেন। ফেরত যাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে বৈঠক এবং নিয়মিত আলোচনাও হচ্ছে।

বালুখালী ক্যাম্প ইনচার্জ রোহিঙ্গা লালু জামাল হোসেন বলেন, “মাসে একবার করে আমরা বসি। গ্রামের মধ্যে মুরব্বি যারা আছে। মায়ানমারে তারা চেয়ারম্যান মেম্বার ছিল। তাদের নিয়েই আমরা বসি”।

রোহিঙ্গাদের মধ্যে গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং বয়স্ক যারা আছেন তারা সাধারণ রোহিঙ্গাদের কিভাবে বোঝাচ্ছেন সেটিও উঠে এল বয়োজ্যৈষ্ঠ এক রোহিঙ্গা মুয়াজ্জিনের বক্তব্যে।

“সবাইকে আমরা বুঝাচ্ছি। ব্লকে ব্লকে গিয়ে বুঝাই। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত করলে আমরা যাব। আমাদের দেশের জন্য আমাদের মায়া আছে। আমাদের যেতেও হবে। বার বার আমরা এই কষ্ট ভোগ করতে চাই না।”

রোহিঙ্গাদের বক্তব্য এবং কার্যক্রমে অনেকটা পরিষ্কার যে তারা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে বিভিন্ন দাবিতে সংগঠিত হতে চাইছেন। সাধারণ রোহিঙ্গাদের অনেকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে স্বেচ্ছায় ফেরার আগে তাদের দাবি কী হবে এবং তারা আসলে কী চান।

একনজরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলো।

একনজরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলো।

কুতুপালং ক্যাম্পের মাওলানা আনোয়ার সাদিক বলেন, “আমরা বোঝাচ্ছি যে রোহিঙ্গা পরিচয়পত্র না দিলে তোমরা যাবা না। তোমাদের কাছে জানতে চাইলে বলবে আমরা রোহিঙ্গা পরিচয়পত্র ছাড়া কোনভাবেই যাব না। সরকার যে চুক্তি করবে করুক। আমার বাংলাদেশে মাটি খেয়ে থাকলেও বাচঁবো নয়তো মরবো। একথা সারা দুনিয়া জানুক।”

এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, “একটা গ্রুপ চেষ্টা করছে প্রত্যাবাসন বিষয়টিকে অন্যদিকে মোড় দেয়ার জন্য। কিন্তু এ জিনিসটা যেন না হয় সেজন্য আমরা তৎপর আছি। রোহিঙ্গারা কিন্তু অর্গানাইজড না। অনেকেই চেষ্টা করছে এদেরকে ভুলপথে ধাবিত করার জন্য। দেখবেন হয়তো নেটের মাধ্যমে অনেক কিছু ভাইরাল হয়ে যায়। যেটার কিন্তু সত্যতা নাই। আমরা চেষ্টা করছি কোনোরকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য যেন প্রচার না পায়।”

এদিকে বাস্তবতা হলো কক্সাবাজারে ত্রাণ শিবিরে থাকা বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই এখনো প্রত্যাবাসন নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন।

রোহিঙ্গা ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম জানান প্রত্যাবাসনের আগে রোহিঙ্গাদেরকে কাউন্সিলিং করা হবে। মিয়ানমারে তাদের কী সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে সেটি পরিষ্কার জানাতে পারলে কোনো সমস্যা হবে না বলেও তিনি মনে করছেন।

২০১৬ সালের অক্টোবর এবং ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে আসা নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন অন্তত ৭ লাখ ৮০ হাজার। এই সব রোহিঙ্গাকেই ফেরত পাঠানোর কথা আগামী দুই বছরের মধ্যে।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি বাংলা/এসএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com