দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে নিজেই অনিয়ম ও দূর্নীতিতে ডুবে ছিলেন। নাম তার জাহিদ ফারুক। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। পিওন বদলী করতে হলেও তার অনুমোদন লাগতো। পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধিনস্থ সকল প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ, বদলী ও পদোন্নতির তালিকা অনুমোদন করতেন তিনি। মূলত তাকে ঘিরেই পানি ভবণে গড়ে উঠেছিল একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি সবকিছু করতেন।
এছাড়াও পানি ভবণে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বিশ^স্ত হিসাবে একচ্ছত্র প্রভাব খাটিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন এস এম অজিয়র রহমান। এস এম অজিয়র রহমানের প্রতি সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর ছিল বিশেষ দৃষ্টি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অজিয়র রহমান বরিশালের জেলা প্রশাসক থাকাকালীন জাহিদ ফারুককে নির্বাচনে পাশ করাতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। এরপর পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা স্বরূপ অজিয়র রহমানকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন এর দায়িত্বে আনেন। পানি ভবণের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এই অজিয়রের বিরুদ্ধে এতটাই ক্ষুদ্ধ যে, ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর তারা অজিয়রের কক্ষ ভাংচূর করেন। পানি ভবণে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ শাসনামলে টানা সাড়ে ৫ বছর জাহিদ ফারুক পানি উন্নয়ন র্বোডের টেন্ডার, নিয়োগ, বদলি সবকিছু নিয়ন্ত্রন করতেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডে সবচেয়ে বেশি দূর্নীতি হয়েছে টেন্ডার ও ডিপিএম এর মাধ্যমে দেওয়া কাজ নিয়ে। এসব কাজ তার সিন্ডেকেটের বাইরে কেউ পাননি। পানি ভবণে সাবেক এই পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর একটি অফিস রয়েছে। তিনি সেখানে অফিস করতে গেলেই কানাঘোষা চলতো মিস্টার টেন পার্সেন্ট আসছেন। পানি ভবণের সমস্ত কর্মকর্তারা তার ভয়ে তটস্থ থাকতেন।
এদিকে সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এতটাই দাপট খাটিয়েছেন যে, পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিচালনার জন্য একটি ম্যানুয়েল থাকলেও তা তিনি কখনোই আমলে নেননি। তিনি বলে বেড়াতেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড চলবে আমার কথায়। এখানে কোন ম্যানুয়েল খাটবে না। এতে করে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক যেই হতেন তার নিজস্ব কোন ক্ষমতা থাকতো না। প্রতিমন্ত্রী যে তালিকা পাঠাতেন সেটাই চূড়ান্ত করতে হতো। আওয়ামী সরকারের পতনের পর সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী পালিয়ে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত আগষ্ট পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের বাসভবনে হামলা হয়। এসময় তার বাসভবনের সামনে ও আশপাশে থাকা কমপক্ষে ২০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বরিশাল নগরের বটতলা এলাকার করিম কুটিরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ