আগামীকাল বুধবার থেকে দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক নিয়মে চলবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এই তথ্য জানান হাসপাতালের রেসিডেন্ট চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ।
এদিকে দুই দিন পর ঢাকা মেডিক্যালের বহির্বিভাগ সেবা চালু হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে এই সেবা স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে, সকাল ৮টা থেকে দুই ঘণ্টা চলে চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচি। এরপর চিকিৎসকেরা বহির্বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগে কাজে যোগ দেন। এতে স্বাভাবিক সময়ের মতো সেবা পাচ্ছেন রোগীরা। টিকিটের জন্য দেখা গেছে দীর্ঘ সারি।
প্রতিদিন ঢামেক বহির্বিভাগে সেবা নেন চার থেকে পাঁচ হাজার রোগী। চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় কর্মবিরতির কারণে দুই দিন বন্ধ ছিল বহির্বিভাগ।
ঢামেকে সম্প্রতি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রথম ঘটনার সূত্রপাত। অবহেলায় তার মৃত্যু হয় অভিযোগ তুলে দীপ্তর ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা ঢামেকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারপিট করেন।
এ সময় আহত হন নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান, মাশরাফি ও জুবায়ের। একই দিন রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভেতরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এক গ্রুপের ওপর আরেক গ্রুপের হামলায় একজন মারা যান। এ ঘটনায় চাপাতিসহ চার জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে রাতে এক রোগী ভর্তি হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনেরা চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করেন। এরপর রাতে হাসপাতালে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়, উত্তেজিত হয়ে ওঠেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।
এসব ঘটনায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তার এবং নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতিতে যান ঢাকা মেডিক্যালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। একই দাবিতে সারা দেশে চিকিৎসা না দিতে কর্মবিরতির ঘোষণাও দেন তারা। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে দুর্ভোগে পড়েন শত শত রোগী।
পরে রোববার আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত হয়েছে।
তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রত্যেক চিকিৎসকের জন্য একজন করে নিরাপত্তাকর্মী নিশ্চিত করার শর্তে শুধু জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেবেন তারা। বহির্বিভাগ ও রুটিন সেবা বন্ধ থাকবে। আগামী সাত দিন এভাবেই চলবে। এর মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার ও কর্মস্থলে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে আবারও কর্মসূচি দেওয়া হবে।
আন্দোলনকারীদের এ ঘোষণার পর সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। আর চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় হাসপাতালে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীসহ বিপুল আনসার সদস্যকে।
ঢামেকে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় এরই মধ্যে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। এতে বিইউবিটির এক শিক্ষকসহ তিন শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও আসামি করা হয়েছে আরও ৪০-৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ