বিলুপ্ত জাতীয় সংসদ সদস্যদের বাসায় হাজার হাজার কোটি টাকা রয়েছে উল্লেখ করে অবিলম্বে সেখানে অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এই দাবি তুলে ধরেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যেসব সংসদ সদস্য অনির্বাচিত, যারা হাজার কোটি টাকা লুট করে বাংলাদেশে বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি করেছে, সড়ক-জনপথ বিভাগে দুর্নীতি করেছে, যারা বিচার বিভাগে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ দেয়নি, সেসব অনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের কিছু আনাগোনা জনগণ দেখতে পাচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে একজন নির্যাতিত রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দাবি করব, আইন নিজের হাতে আমরা তুলে নেবো না। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করুন। ৭ জানুয়ারির ভোটারবিহীন ডামি নির্বাচনে তিনশ এমপির বাসায় হাজার কোটি টাকার ডলার পাবেন। তল্লাশি করেন, তদন্ত শুরু করেন, সব বেরিয়ে পড়বে। আপনাকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা প্রস্তুত।
আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নির্মমভাবে নিজের নির্যাতিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, জীবনের বিনিময় হলেও ১৬ বছর অত্যাচারী হয়েছি। আর অত্যাচারী হতে চাই না। একটি গণতান্ত্রিক দেশে আমার ভোট আমি দেবো এই অধিকারের ভিত্তিতে একটি নির্বাচন দেশে হোক। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে আর কাউকে রাস্তায় আসতে হবে না।
তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের উদ্যোগে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।
ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ মইনুল সড়কে খালেদা জিয়ার জন্য বরাদ্দ করা বাড়িতে ভবন নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের নামে হোস্টেল নির্মাণের দাবি জানিয়ে সাবেক বিরোধী দলের এই প্রধান হুইপ বলেন, আমরা বলতে চাই, খালেদা জিয়াকে সরকার বাড়ি দিয়েছিলো ক্যান্টনমেন্টে।
সেদিন আমাদের ঢুকতে দেয়নি, ম্যাডামকে খালি হাতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বের করে দিয়েছিলেন। আজকে বাংলাদেশে এখন জনগণের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনতার দাবি, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটি ১০তলা ভবন তৈরি করে ঢাকা কলেজের হোস্টেল তৈরি করে আবু সাঈদের নামে নামকরণ করা হোক।
ফারুক বলেন, শেখ হাসিনা ইতিহাস পড়ে দেখেননি। তিনি বলেছিলেন পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই তাকে সরাতে পারে। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিহাস। আবু সাঈদ, মুগ্ধের রক্তের বিনিময়ে যে আন্দোলন ঢাকার বুকে হয়েছে, সেই আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা চুরি করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। অহংকার আল্লাহর চোখে শোভা পায় না।
তিনি বলেন, এই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড আপনি (শেখ হাসিনা) করেছেন, হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশ আপনি দিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর গুলির নির্দেশ আপনার কাছ থেকে এসেছে। যারা জীবন দিয়েছে, তারা আজকে আমাদের মাঝে নেই, তাদের রক্তের গন্ধ এখনো শুকায়নি, তাদের আত্মহুতির কথা মানুষ ভুলে নাই। আজকে শেখ হাসিনা কোথায়? আজকে কোথায় সালমান, কোথায় আনিসুল হক? মুখ ব্যাঙিয়ে কথা বলতেন আনিসুল হক, আপনি এখন জেলে আর খালেদা জিয়া মুক্ত আকাশের নিচে। সবই আল্লাহর ইচ্ছা, সবই আল্লাহর রহমত।
তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে এই অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির নির্বাহী কমিটির বিলকিস ইসলাম, মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হকসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ