সামাজিক বিচারের মাধ্যমে মামলা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আগের দিনের মানুষ সামাজিক শালিস ও বিচারের মধ্য দিয়ে ঘটনা নিষ্পত্তি করতেন। সেজন্য সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে নাটোর জজ আদালত চত্বরে বিচার প্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশের সব মানুষের আইনের আশ্রয়ের অধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতের কথা ভেবেছেন। তিনি চান সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক। সেই অধিকার প্রয়োগ করতে মানুষ আদালতে আসেন। আদালতে এসে তাদের যেন কষ্ট না হয়, সেজন্য এ বিশ্রামাগার নির্মাণ করছেন।
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে ৬৪ জেলায় এই বিশ্রামাগার নির্মাণের প্রজেক্ট হাতে নেন প্রধানমন্ত্রী। দুই একটি ছাড়া প্রায় সবগুলো হয়ে গেছে। এ বিশ্রামাগারে বিচারপ্রার্থীরা এসে সময় কাটাতে পারবেন। আগে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্রামাগার ছিল না। বিচারপ্রার্থী এসে বাড়ি চলে যেত। কোথাও বসার জায়গা ছিল না। এখন তারা ইচ্ছা করলেই বসে বিশ্রাম নিতে পারবেন। অনেক সময় বিচার কাজ হতে দেরি হয়, সেক্ষেত্রে এ বিচারপ্রার্থীরা বিশ্রামাগারে বসে সময় কাটাবেন।
ওবায়দুল হাসান আরও বলেন, আমরা খুব চেষ্টা করছি মামলা শেষ করতে। সমাজে কিছু হলেই আমরা মামলা করতে চলে যাই। যদি এটা কমে যায়, তাহলে অনেকাংশে মামলা কমে যাবে। এতো মামলা শেষ করতে পারেন না বিচারকরা। প্রতি বছর ১০০ বিচারক নিয়োগ করা হয়। একজন বিচারক নিয়োগের পর মামলা বিষয়ে জানতে হয়, দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে সময় লাগে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আমাদের সারাদেশে যে সংখ্যক বিচারক আছেন তারা প্রতি বছর নতুন দায়ের করা মামলার ৮০ শতাংশ শেষ করতে পারেন। বাকি ২০ শতাংশ থেকেই যায়। যদি মামলা করার প্রবণতা না কমে, তাহলে মামলা কোনো দিনই শেষ হবে না।
সমাজে কোনো ঘটনা দ্রুত মামলা দায়ের না করে সামাজিক শালিস ও বিচারের মধ্য দিয়ে মীমাংসা করলে কমে যাবে। আগের দিনে মানুষ সমাজে বিচার-শালিসের মাধ্যমে ঘটনা নিম্পতি করতো। তুচ্ছ ও সাধারণ ঘটনা নিয়ে আমরা মামলা দায়ের করবো না। তাহলে কিন্তু মামলার সংখ্যা কমে আসবে। সেজন্য সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।
এ সময় নাটোর জেলা ও দায়রা জজ (বিচারক) অম্লান কুসুম জিষ্ণু, নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা, পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, নাটোর জজ কোর্টের পিপি মো. সিরাজুল ইসলাম, নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন টগর, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মশিউর রহমানসহ জেলার সব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিচারপতি আদালত চত্ত্বরে একটি বকুল গাছের চারা রোপণ করেন।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ