শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ডেঙ্গুতে আরও ৩ মৃত্যু, নতুন রোগী ৮২৯ জন ৪৩তম বিসিএস থেকে মাধ্যমিকে সহকারী শিক্ষক হলেন ১৪৩ জন ড. ইউনূসকে হত্যার হুমকি, আদালতে মামলা এ বছরও স্কুলে ভর্তি লটারিতে শহিদদের আত্মত্যাগ ভবিষ্যৎ আন্দোলন সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জোগাবে সুদানে কলেরার প্রাদুর্ভাবে মৃত্যু বেড়ে ৪৭৩ কৃষকদের মূল্যায়ন করতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা তাইওয়ান প্রণালীতে এই প্রথম যুদ্ধজাহাজ পাঠালো জাপান হত্যা মামলায় নাট্য নির্মাতা রিংকুর জামিন নগদ লভ্যাংশ দিলো রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি গণমানুষের কল্যাণই জামায়াতের রাজনীতির আদর্শ: শফিকুর রহমান ‘মানুষ আশা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেবে’ মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা ‘পূর্ণ শক্তি’ নিয়ে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নির্দেশ নেতানিয়াহুর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে, এএনআইকে ফখরুল নিহত লেফটেন্যান্ট তানজিমের বাবা-মায়ের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ শেখ হাসিনা ও রেহানাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় হত্যা মামলা প্রথম চালানে ভারতে গেল ৮ মেট্রিক টন ইলিশ অভ্যুত্থানে আহত ১৬০ রোগী দেখেছেন চীনা চিকিৎসকদল ক্রিকেটের দুই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা সাকিবের

আতঙ্কে ঘরছাড়া ৩ গ্রামের মানুষ, সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন রোহিঙ্গারা

বান্দরবান প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান সংঘাত। শনিবার থেকে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাত-সংঘর্ষ থামছেই না। দুই বাহিনীর গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিকট শব্দে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে সীমান্তজুড়ে।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া হচ্ছে গুলি ও মর্টার শেল। গুলির মুহুর্মুহু শব্দে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ঘর ছেড়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের তিন গ্রামের মানুষ। এরইমধ্যে দুপুরে মিয়ানমার থেকে ছুটে আসা একটি মর্টার শেলের আঘাতে নিহত হয়েছেন স্থানীয় জলপাইতলী গ্রামের গৃহবধূ ও এক রোহিঙ্গা। এসময় আহত হয় এক শিশুও।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান অস্থিরতায় টেকনাফের হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় এক রোহিঙ্গা পরিবারকে আটক করেছে বিজিবি। এরআগে মিয়ানমার বিদ্রোহীদের প্রচণ্ড গোলাগুলির মুখে টিকে থাকতে না পেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৯৫ জন মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য। তাদের মধ্যে আহত ৯ জনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

সূত্র বলছে, চলমান পরিস্থিতিতে সীমান্তের ওপারে বসবাস করা মিয়ানমারের চাকমা জাতি ও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় জড়ো হচ্ছেন। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন তারা।

এদিকে সীমান্তে মর্টার শেলে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবাদ জানানোর কথা জানিয়েছেন রিজিওয়ান কমন্ডার।

সোমবার মর্টার শেলের আঘাতে নিহতরা হলেন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম তুমব্রু জলপাইতলী এলাকার বাসিন্দা হোসনে আরা (৫৫) ও উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৮/ই এর ডি ব্লকের বাসিন্দা মৃত ধলু হোসেনের ছেলে নবী হোসেন (৬০)। আহত নুসরাত মনি (৬) স্থানীয় শহিদুল ইসলামের মেয়ে। নিহতরা চাষের জমিতে কাজ শেষে দুপুরের খাওয়ার জন্য বাড়িতে অবস্থান করছিলেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

সূত্র বলছে, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য স্বাধীনের নামে সরকারি বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে আসছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি। প্রতিদিন মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কোনো কোনো এলাকায় চলছে দুই বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ।

এরইমধ্যে আরাকান রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল দখলের দাবি করেছে আরাকান আর্মি। দুইপক্ষের চলমান সংঘর্ষে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন, উখিয়ার পালংখালী ও টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্তে বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সীমান্তে বসবাসকারীদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে গোলাগুলির আতঙ্কে ইউনিয়নের তিন গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। দুজন নিহত হওয়ার পর আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

মর্টার শেলের আঘাতে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান।

তিনি বলেন, সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি চললেও আমার দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সীমান্তে বসবাসকারীদের সরানোর বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন বলতে পারবে।

টেকনাফ হোয়াইক্যং উলুবনিয়া এলাকার জালাল আহমেদ বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিক থেকে মিয়ানমারের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ আমরা শুনতে পারছি। ভয়ে সীমান্ত থেকে লোকজন সরে যাচ্ছেন। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, ওপার থেকে রোহিঙ্গা ও বিজিপি সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারেন এমন আশঙ্কায় সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। সাগরে কোস্টগার্ড সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছেন। কোনো অবস্থাতেই আমরা রোহিঙ্গা কিংবা অন্য কাউকে ঢুকতে দেবো না।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির দুই সদস্যকে আহত অবস্থায় রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। আজ সকালে আরও সাতজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। আমরা তাদের সেবা দিচ্ছি।

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্তে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

৩৪ বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মাশরুকী বলেন, কোনো অবস্থাতেই মিয়ানমারের কোনো নাগরিককে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

বিজিবি কক্সবাজার রিজিওয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোরশেদ আলম বলেন, মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলা সংঘাতের কারণে আমরা সদর দপ্তরের অনুমতিক্রমে ৯৫ জন বিজিপি সদস্যকে আশ্রয় দিয়েছি। তাদের মিয়ানমার হস্তান্তর করার জন্য পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, জলপাইতলীতে দুজন সাধারণ নাগরিক নিহতের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে মিয়ানমার সরকারকে প্রতিবাদ জানিয়েছি।

কক্সবাজার রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচিত আরাকান রাজ্যে আটকে পড়া চাকমা ও রোহিঙ্গাদের সাহায্য করা। কিন্তু মিয়ানমারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা না করে বাংলাদেশে স্থান দেওয়ার কথা বলে। অনেক সময় বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এটি অবান্তর।

বাংলা৭১নিউজ/এসএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com