কিছুটা অতিরিক্ত উপার্জনের আশায় রস সংগ্রহের জন্য শীতের শুরুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌসুমী খেঁজুর গাছিরা। সারা বছর নানা কাজে জড়ালেও বছরের এই ৩/৪ মাস তারা খেঁজুরের রস বিক্রি করে কিছুটা ভালো লাভবান হওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতি লিটার ১০০ টাকা দাম ধরে দিনে ১/২ হাজার টাকা রস বিক্রির টার্গেট রাখেন অনেকে।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে মতলব উত্তরের খেঁজুর গাছিদের সঙ্গে কথা হলে তারা রস সংগ্রহের প্রস্তুতির কথা জানান।
ষাটনলের খেঁজুর গাছি মনিরুল ইসলাম বলেন, খেঁজুর গাছ পরিষ্কার শুরু করে দিয়েছি। এক সপ্তাহ পর গাছে কলস বাঁধব। শীতের প্রকোপ যত বাড়বে, তত বেশি রস বের হবে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে রস সংগ্রহ শুরু করবো। এখন পর্যন্ত আমি ১৪টি গাছ পরিষ্কারের কাজ শেষ করেছি। এই মৌসুমে আশা করছি এক একটি গাছ থেকে দিনে ১/২ হাজার টাকার রস বিক্রি করতে পারবো।
গাছি নাছির উদ্দীন বলেন, এবার খেঁজুরের রসের চাহিদা ব্যাপক এবং আবহাওয়াও অনুকূলে। কিন্তু এখনো গাছ প্রস্তুত না হওয়ায় রসের যোগান দিতে পারছি না। দুই কলস রস থেকে ১ কেজি গুড় হয় এবং ১ গ্লাস রস ২০ টাকা করে বিক্রি করা যায়। আমরা লিটার প্রতি রসের দাম কমপক্ষে ১০০ টাকা নির্ধারণ করেছি। আর প্রতি কেজি গুড়ের দাম ২৫০-২৭০ টাকা নির্ধারণ করেছি।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, খেঁজুরের রস সংগ্রহে খরচ নেই। শুধু গাছ প্রস্তুতে গাছিদের পরিশ্রম ও সতর্কতা। খেঁজুর গাছের চারা রোপণে কেউ আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ সহায়তা দিয়ে থাকি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমাদের এই চাঁদপুরে যেহেতু অনেক খেজুর গাছ রয়েছে। কাজেই এখানে বাদুড়ের মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। তাই রস সংগ্রহকারী গাছি ভাইদের পরিষ্কার পরিছন্ন হয়ে খেঁজুরের রস সংগ্রহ করতে হবে।
কোনোভাবেই কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া যাবে না। গাছে রস পড়ার সময় কলসটি ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। বাদুড় যাতে রসের ওপর বসতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ