আওয়ামী লীগ থেকে সব আসনে মনোনয়ন দিলেও ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালেও আমরা জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করেছিলাম। তখনো কিন্তু প্রায় ৩০০ আসনে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল। পরে মহাজোটের মধ্যে সমন্বয় করা হয়। গতবারও প্রায় সব আসনে নমিনেশন দিয়ে পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল। এখনো ২৯৮ সিটে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথমেই বলেছি জোটবদ্ধ নির্বাচন করবো। সেটি আমাদের দলের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। নমিনেশন দিলেও জোটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কোন জায়গায় কীভাবে করা হবে সেটি যেহেতু ঠিক করা হয়নি, সেজন্য সব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পরে জোটের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবে নির্বাচন করবো। এছাড়া অন্যান্যদের সঙ্গে যদি সমন্বয় করতে হয় তাও করা হবে।
এর আগে রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুটি আসন ফাঁকা রেখে ২৯৮টি আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। ফাঁকা রাখা দুই আসন হলো কুষ্টিয়া-২ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫। এদিকে ১৪ দলীয় জোটের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা তথ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান- মেননের আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে কি না। এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই নয়। প্রায় সব আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জোটের নেতারা কোথায় নির্বাচন করবে এবং তাদের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা, সমন্বয় হবে তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ৭১-৭২ জন বাদ পড়েছে, প্রতি নির্বাচনেই কিছু প্রার্থী বাদ পড়ে। এবার আগে থেকেই বলা হয়েছিল যারা জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে গেছে, বা যে কোনো কারণে বিতর্কিত হয়েছে তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। সে কারণে এবার অনেক বেশি প্রার্থী বাদ পড়েছে। বাদ পড়াটা স্বাভাবিক।
সেখানে কে মন্ত্রী বা বড় নেতা এটি বিষয় নয়। জনপ্রিয়তা যার নেই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। শেখ হাসিনা মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান। এর বাইরে দুই বছরের বেশি সময় ধরে দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নানাভাবে তদন্ত করাচ্ছিলেন। সেই রিপোর্টগুলো সংগ্রহ করে জনপ্রিয়তা ও দলের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বিবেচনা করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বহু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বহু বিএনপি নেতা তৃণমূল বিএনপির নেতৃত্বে বা অন্যান্যভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ভোটে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ হবে বলে আমরা আশা করছি।
২০১৪ সালে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের জরিমানা দিতে হয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এবার সেই কথা মনে করিয়ে দিতে গিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, সেটি আমাদের দলের জন্য বলেননি।
কেউ যদি প্রার্থী হতে চান নানাভাবে, কোনো ছোটখাটো দল থেকে এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি হতে চান সেটি নিরুৎসাহিত না করার কথা বলেছেন। তার মানে এই নয় যে আমাদের দলকে বলেছেন। এবার বহু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এতে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ হবে বলে আমরা আশা করছি। কোন দল অংশগ্রহণ করলো তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, জনগণের অংশগ্রহণ আছে কি না।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি