২০১২ এবং ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে নায়কোচিত ইনিংস খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শিরোপা উপহার দিয়েছেলেন মারলন স্যামুয়েলস। এবার তিনি নায়ক থেকে হয়ে গেলেন ভিলেন। কয়েক মাস আগে দুর্নীতি বিরোধী কোড ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তাকে ছয় বছরের জন্য সকল ধরণের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে।

বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটারের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে চলতি বছরের ১১ নভেম্বর থেকে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের একাধিক আসরে দূরন্ত রাজশাহী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে এই ক্রিকেটারের।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আইসিসির মনোনীত দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা এই ক্যারিবীয় তারকাকে অভিযুক্ত করেছিল। চলতি বছরের আগস্টে স্যামুয়েলসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হলে তাকে দোষি সাব্যস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে মোট চারটি অভিযোগ আনা হয়েছিল যা ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত আবু ধাবি টি-টেন লিগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি সেই লিগের দল কর্নাটক টাস্কারের সদস্য থাকলেও কোনো ম্যাচ খেলেননি।

স্যামুয়েলসকে যে চারটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, সেগুলো হলো –

আইসিসির অনুচ্ছেদ ২.৪.২ অনুযায়ী, দুর্নীতি দমন কর্মকর্তার কাছে কোন পরিস্থিতে উপহার, অর্থপ্রদান, আতিথেয়তা বা অন্যান্য সুবিধা নিয়েছিল তা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হওয়া।

অনুচ্ছেদ ২.৪.৬ অনুযায়ী, দুর্নীতি দমন কর্মকর্তার তদন্তে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হওয়া।

অনুচ্ছেদ ২.৪.৭ অনুযায়ী, তদন্তের সাথে প্রাসঙ্গিক হতে পারে এমন তথ্য গোপন করার মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কর্মকর্তার তদন্তে বাধা বা বিলম্ব করা।

আইসিসির এইচআর অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটির মহাব্যবস্থাপক অ্যালেক্স মার্শাল বলেন , ‘স্যামুয়েলস প্রায় দুই দশক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন, এই সময়ে সে অসংখ্য দুর্নীতি বিরোধী সেশনে অংশ নিয়েছেন এবং দুর্নীতি বিরোধী কোডে তার কোথায় কোথায় বাধ্যবাধকতা মানার তা ভালোভাবেই জানা আছে।’

আইসিসির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যদিও তিনি অবসর নিয়ে ফেলেছেন, মিস্টার স্যামুয়েলস যখন এই অপরাধ করেছেন তখন তিনি অংশগ্রহণকারী ছিলেন। ছয় বছরের নিষেধাজ্ঞা যে কোনো অংশগ্রহণকারীর জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে কাজ করবে যারা নিয়ম ভঙ্গ করতে চায়।’

দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পাওয়া স্যামুয়েলসের জন্য নতুন নয়। ২০০৮ সালে এমন অপরাধে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের ওয়ানডে ম্যাচের তথ্য বাইরে পাচার করতে গিয়ে ভারতীয় পুলিশের টেপে ধরা পড়েন তিনি।

২০১৮ সালে তিনি শেষবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে খেলেন এবং ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। সব ফরম্যাট মিলিয়ে তার নামের পাশে ১১ হাজার রান আছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ