বিএনপি ও তাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে গত কয়েক দিন কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
বিএনপি ও তাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে গত কয়েক দিন কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘নির্বাচন কমিশনকে তার কার্য সম্পাদনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে।’ এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দিয়েছে, তা কিভাবে প্রয়োগ করে, সে বিষয়টির ওপর বিএনপি নজর দিয়েছে।
বিএনপির অভিজ্ঞ নেতারা মনে করেন, সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের বাধ্যবাধকতা অন্য কোনো বিধান বা কোনো আইনের ওপর নির্ভরশীল নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, তফসিল ঘোষণার পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তখন নির্বাহী বিভাগের ওপর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ থাকার পরও বিএনপির আন্দোলন দমানো এবং নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হলে তাতে ইসির ভূমিকা আরো প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা নিয়ে দেশে ও আন্তর্জাতিক মহল প্রশ্ন দেখা দেবে।
নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া নিয়েই বিএনপির আপত্তি ছিল। কমিশন গঠনের পর থেকে বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, সরকার তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি গঠন করেছে। বিভিন্ন সময়ে কমিশনের দেওয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে বিএনপি এবং তাদের ডাকে সংলাপেও অংশ নেয়নি।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘বিরোধী দলগুলোর মতামত উপেক্ষা করে একতরফা তফসিল ঘোষণা করা হলে প্রমাণ হবে সরকার ও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে আন্তরিক নয়। এমনিতেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। কমিশন তাদের বিতর্কের বাইরে রাখতে চাইলে তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকবে। নইলে আমাদের আন্দোলন আরো তীব্র হবে। আমরা আমাদের দাবি আদায় থেকে কোনোভাবে পিছু হটব না।’
আন্দোলনের তীব্রতা বাড়বে
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পর সর্বাত্মক আন্দোলনের জন্য যে ধরনের কর্মসূচি দেওয়া দরকার সবই দেওয়া হবে। দলের শীর্ষ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দুজন নেতা বলেন, দলের কর্মকৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাতে বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে নেতাদের বিশ্লেষণ হচ্ছে, ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করতে অবরোধ কার্যকর কর্মসূচি। জেলা পর্যায়ে মহাসড়কগুলোতে পিকেটিং বাড়াবে তারা। হরতাল-অবরোধের পাশাপাশি ঢাকাকেন্দ্রিক বিকল্প কর্মসূচি নিতে পারে দলটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন নীতিনির্ধারক বলেন, বিএনপি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তাই তফসিল ঘোষণার পর সব নেতা রাজপথে বের হয়ে আন্দোলনে যুক্ত হবেন। গ্রেপ্তার হলে রাজপথেই হবেন। তখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকেও যদি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আগের মতো আচরণ করে তাহলে ইসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তখন আন্তর্জাতিক মহল আরো সক্রিয় হতে পারে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী গতকাল সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সামনে আন্দোলনের তীব্রতা আরো বাড়বে।
বাংলা৭১নিউজ/এআরকে