এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দায়ের হওয়া মামলায় মো. কামরুল হুদা নামে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালত এ আদেশ দেন।
অভিযুক্ত মো. কামরুল হুদা দুদক কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম পরিমল ধর। তিনি নগরের হাজারী গলি এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত দুদক কর্মকর্তা কামরুল হুদা কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পরিমলের দোকানে যান। সেখানে কামরুল নিজেকে দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পরিমলের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমে কালো টাকা উপার্জন করার অভিযোগ তুলেন।
একই সঙ্গে তিনি দুদকের একটি চিঠিও দেন। এরপর একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে কামরুল দোকান ত্যাগ করেন। বিষয়টি ভুক্তভোগী তার ভাতিজার সঙ্গে শেয়ার করেন। ভাতিজা বিষয়টি নিয়ে কামরুলের দেওয়া নম্বরে বিভিন্ন সময় যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় কামরুলকে ২০ লাখ টাকা দিলে তিনি বিষয়টির সমাধান করবেন।
এ নিয়ে গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যায় টাকা রিসিভ করতে দুদক কর্মকর্তা কামরুল চকবাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে আসেন। অন্যদিকে বিষয়টি আগেই পাঁচলাইশ থানা পুলিশকে অবহিত করে রাখেন ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ী। সন্ধ্যায় উভয়ের মধ্যে বৈঠক চলাকালেও পুলিশ অভিযান চালিয়ে কামরুলকে গ্রেপ্তার করে। তাকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার রাতে মামলা রুজু করে পুলিশ। মামলায় দুদক কর্মকর্তা কামরুল এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২ থেকে ৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, শনিবার রাতে মামলা দায়েরের পর রোববার সকালে অভিযুক্ত কামরুল হুদাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ২০১৩ সালে অভিযুক্ত কামরুল এক কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন। যদিও ওইসময় দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে কামরুলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুদক বিভাগীয় কোনো তদন্ত কিংবা ব্যবস্থা নেয়নি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দুদক কর্মকর্তা কামরুলকে শনিবার গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হলে সংস্থাটির চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত এবং সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন সেখানে পৌঁছান। এরপর তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। একপর্যায়ে পুলিশ মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ