জয়পুরহাটের সন্ন্যাসতলীর মেলার মূল আকর্ষণ ঘুড়ি। প্রতিবছর দুইদিনের জন্য বসা এই মেলায় অন্য জেলা থেকেও লোকজন ঘুড়ি ওড়াতে আসেন।
মেলার সঠিক ইতিহাস কেউ বলতে না পারলেও সন্ন্যাসী পূজাকে ঘিরে ২০০ বছরের বেশি সময় আগে থেকে এ মেলার উৎপত্তি বলে জানা যায়। সেই থেকে প্রতিবছর বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্র ও শনিবার এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর-জিয়াপুর গ্রামের তুলসীগঙ্গা নদীর তীরবর্তী সন্ন্যাসতলায় মন্দিরের পাশে এই মেলা বসে।
মেলা ঘিরে প্রতিবছর এলাকার অর্ধশত গ্রামে বাড়ি বাড়ি জামাই-মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনদের আগমন ঘটে। নানা বয়সী হাজারো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে পুরো মেলাপ্রাঙ্গণ উৎসবের আমেজে ভরে ওঠে।
একদিন আগে থেকেই বিশাল এ মেলাকে কেন্দ্র করে দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন। এবার বসেছে হরেকরকম ঘুড়ি, বিভিন্ন মৌসুমি ফলমূল, মিষ্টির পসরা। এছাড়া বাঁশের তৈরি রঙিন নানা তৈজসপত্র এসেছে মেলায়।
মেলায় কোনো পুরস্কারের আয়োজন না থাকলেও সবাই মনের আনন্দে অংশ নেন ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসবে। কার ঘুড়ি কত উঁচুতে ওঠে আর কে কার ঘুড়ির সুতা কেটে দিতে পারে, দিনভর চলে সে প্রতিযোগিতা।
মামুদপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাপ-দাদারা এই মেলা করতেন, আমরাও এই মেলায় কেনাকাটা করতে আসি। সন্ন্যাসতলীর মেলা ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা থেকে মেলায় আসা রিপন কুমার মণ্ডল বলেন, প্রতিবছর এই সন্ন্যাসতলী মেলায় আমরা ঘুড়ি কিনতে আসি। তবে ঘুড়ি ছাড়াও এখানে সব ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। আমি ঘুরি কিনেছি, মাছ ধরার জালও কিনেছি।
সন্ন্যাসতলী মেলা কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও মেলা বসেছে। এই সন্ন্যাসতলী মেলার বয়স ২০০ বছর। এই মেলা হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে পরিচালনা করে থাকি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এই মেলায় আসেন।
মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই সন্ন্যাসতলী মেলার মূল আকর্ষণ ঘুড়ি। এ মেলাকে ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে বিপুল পরিমাণ মানুষের সমাগম ঘটে। এটি আদতে সব ধর্মের মানুষের মিলনমেলা হয়ে উঠেছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ