বাংলা৭১নিউজ, কুমিল্লা উত্তর সংবাদদাতা ঃ বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) এবং কুমিল্লা-২(হোমনা-তিতাস) নির্বাচনী এলাকা। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বছরখানেক সময় বাকি থাকলেও ভোটের রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে এরই মধ্যে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে কুমিল্লা-১ আসনের পাশপাশি কুমিল্লা-২ সংসদীয় আসন (হোমনা-তিতাস) থেকেও বিএনপি দলীয় প্রার্থী করার দাবি উঠেছে নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে। গত ২৩ অক্টোবর সোমবার দিবাগত রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী এমকে আনোয়ার বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। ফলে কুমিল্লা-২ আসনে (হোমনা ও তিতাস) বিএনপি নেতৃত্ব ও অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ে। এর পর বুধবার হোমনা ও তিতাসে এমকে আনোয়ারের জানাযায় লক্ষ্য মানুষের উপস্থিতিতে ড. মোশররফ হোসেনের বক্তব্যে শোকাহত নেতাকর্মীরা আশাম্বিত হয়, প্রান ফিরে পায়। তিনি তাঁর বক্তব্যে এমকে আানোয়ারকে গনতন্ত্রের মহানায়ক আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তিনি ছিলেন এই অঞ্চলের উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় আকাশচুম্বি নেতা। তাঁকে হারিয়ে এ অঞ্চলের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তাঁর মৃত্যুতে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সমগ্র কুমিল্লার মানুষ শোকে মূহ্যমান। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আপনাদের পাশের আসন দাউদকান্দি ও মেঘনার নেতৃত্ব দিচ্ছি। দলের সাংগঠনিক সমুদয় কাজে ডাকলে আমাকে পাশে পাবেন। আপনাদের যে কোন সমস্যায় আমি হাজির থাকব। আপনারা হতাশ হবেন না। ড. মোশাররফের মূল্যবান বক্তব্যের পর স্থানীয় নেতাকর্মীরা শোকের মাঝেও যেন একটু সুখ খুঁজে পেল, একজন মহান নেতাকে হারিয়ে আরেকজন মহান নেতাকে অভিভাবক হিসেবে পেল। নেতাকর্মীরা আশাবাদি আগামী নির্বাচনে ড. মোশাররফ এ আসন থেকেও বিএনপির প্রার্থী হয়ে দলের হাল ধরবেন এবং অভিভাবকের দায়িত্ব নেবেন। এরপর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ড. মোশাররফকে নিযে এলাকায় বেশ আলোচনা ও প্রচারনা শুরু হয়েছে। আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ড. মোশাররফ হোসেন দাউদকান্দি সংসদীয় আসনের পাশাপাশি হোমনা আসন থেকে প্রার্থী হওযার জন্য জোর দাবি তুলেন নেতাকর্মীরা। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, ড. মোশাররফ সমগ্র কুমিল্লা বিএনপির অভিভাবক। বিশেষ করে তিনি দীর্ঘ আড়াইযুগ ধরে তিতাসের অভিভাবক হিসেবে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিতাস উপজেলা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এদিকে ওয়ান ইলেভেন সরকার আসন বিন্যাসে তিতাস উপজেলাকে হোমনার সাথে অন্তর্ভূক্ত করে কুমিল্লা-২ আসন নাম করণ করেন আর মেঘনা উপজেলাকে দাউদকান্দির সাথে অন্তর্ভূক্ত করে কুমিল্লা-১ আসন নাম করণ করেন। এরপর থেকে তিতাসের অভিভাবক হিসেবে দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন মরহুম এমকে আনোয়ার। দাউদকান্দি-মেঘনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এমকে আনোয়ারের মৃত্যুর পর নেতাকর্মীরা চাইছেন এই আসনেও উন্নয়নের আরেক মহানায়ক ড. মোশাররফ অভিভাবক হিসেবে দলের নেতৃত্বে আসুক। তাহলেই হোমনায় এমকে আনোয়ারের উন্ন্য়নের ধারাবহিকতা রক্ষা পাবে। কারণ ড. মোশাররফ একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান এবং প্রভাবশালী জাদরেল নেতা। দেশ-বিদেশেও বিখ্যাত ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছে তাঁর নাম। ড. মোশাররফ দাউদকান্দি, মেঘনা ও তিতাসের উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নের একজন স্বাপ্নিক পুরুষ এবং অবহেলিত পশ্চাতপদ তিতাসের উন্নয়নে তিনিই প্রথম সূচনা করেন। তিতাসে আরো বেশী উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এবং একাবাসীর প্রানের দাবি পূরন করতে ”তিতাস উপজেলা প্রতিষ্ঠা” করেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালিন তিনি দাউদকান্দি ও তিতাসে ৫শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছেন। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই আঞ্চলের উন্নয়নের স্থপতি। তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য পদে অধিষ্ঠিত আছেন। ড. মোশাররফ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রথিতযশা ভূ-বিজ্ঞানী, খ্যাতিমান লেকক ও গবেষক। এই আলোকিত রাজনীতিক ’৭১-এ বিলাত প্রবাসীদের সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বিশ^ জনমত গড়ে তুলেন এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক হিসেবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেন। আগামীতে তাঁকে নিয়েই স্বপ্ন লালন করছে এই অঞ্চলের নেতাকর্মীরা। কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ¦ খোরশেদ আলম ইনকিলাবকে বলেছেন, বিএনপি’র দু’জন স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম এমকে আনোয়ার ও ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লা উত্তরসহ সমগ্র কুমিল্লা বিএনপি’র আভিভাবক ও দলে সাংগঠনিকসহ সমুদয় নেতৃত্ব দিয়েছেন। দুই আলোকিত নক্ষত্রের মধ্যে প্রানপ্রিয় অভিভাবক এমকে আনোয়ার আমাদেরকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। এখন দলের নীতি নির্ধারণী ফোরামের সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশররফ হোসেনই আমাদের এই অঞ্চলের বিএনপির অভিভাবক, নেতৃত্বদানকারী ও পথ নির্দেশক। বর্তমানে নেতুত্ব ও অভিভাবক শূন্য হোমনা ও তিতাস বিএনপির দায়িত্ব নেয়ার জন্য ড. মোশাররফ স্যারের প্রতি দাবি জানান জেলার এই শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, এ দাবি শুধু আমার নয়, নেতাকর্মীদেরও প্রানের দাবি। জেলা সেক্রেটারী মোঃ আক্তরুজ্জামান সরকার বলেন, হোমনা ও তিতাস বিএনপির অভিভাবক উন্নয়নের স্থপতি এমকে আনোয়ারকে হারিয়ে আমরা শোকে কাতর হয়ে গেছি। আমাদের আরেক জাতীয় বর্ষিয়ান নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দেশ-বিদেশে পরিচিত এই জ্যোর্তিময় নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. মোমাররফ এর আগে প্রায় দুইযুগ ধরে তিতাসের অভিভাবক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি অবহেলিত এই অঞ্চলের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এলাকাবাসীর চাহিদা পূরনে তিতাস উপজেলা প্রতিষ্ঠা করেছেন। আবারো তিনি আমাদের অভিভাবক হয়ে এখানকার বিএনপির দায়িত্ব নিবেন এমনটি আশা করছেন নেতাকর্মীরা। হোমনা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক বিএনপি নেতা জহিরুল ইসলাম জহর বলেছেন, মরহুম এমকে আনোয়ার স্যার বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা এবং এলকায় ছিল তাঁর আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা। প্রার্থী হিসেবেও তিনি ছিলেন জাদরেল। তার মৃত্যুতে যেন সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে যেন-তেন প্রার্থী দিলে আসনটি হাতছাড়া হবে এতে কোন রকম সন্দেহ নেই। তিনি আরেক জাদরেল প্রার্থীর কথা উল্লেখ করে বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ স্যারকে যদি এ আসনে প্রার্থী করা যায় তবে আসনটি রক্ষা পাবে আমি অশাবাদি। অভিন্ন সুরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোমনা বিএনপির দু’জন দ্বিতীয় সারির নেতা বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে তুমুল প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ। এ আসনে দল শক্ত প্রার্থী না দিলে আসনটি হাতছাড়া হবার সমূহ সম্ভবনা দেখছি। কারণ ২০০৮ সালের নির্বাচনের এখানকার ফলাফল দেখলেই বুঝা যায় আগামীতে নির্বাচন অনেক কঠিন হবে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে খেলার এখানে কোন শক্ত প্রার্থী নেই। একমাত্র বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ স্যারই পারবে আসনটি ধরে রাখতে। কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ সাদেক হোসেন বলেন, এই অঞ্চলকে দিন-রাত গ্রাম থেকে গ্রামান্তর ঘুরে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তিল তিল করে বিএনপির ঘাটিতে পরিনত করেছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির মাঠ সাজিয়েছেন। ৯১ সাল থেকে তিনি সমগ্র কুমিল্লার নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি কুমিল্লা-২ আসন হোমনা ও তিতাসের অভিভাবক হয়ে আগামী নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়ে নেতাকর্মীদের নেতৃত্ব দিলে এটা হবে আমাদের সুভাগ্যের ফসল। জেলা বিএনপি’র সাবেক নেতা মফিজুর রহমান লিলু বলেন, ড. মোশাররফ হলেন অত্র অঞ্চলের উন্নয়ন-আধুনিকায়ন ও রাজনীতির এক ক্ষনজন্মা প্রান পুরুষ। দাউদকান্দি ও তিতাসের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের তিনিই প্রথম সূচনা করেন এবং এই অঞ্চলকে উন্নয়নসহ নানা দিক থেকে মহা সোপানে পরিনত করেছেন যা আমরা এলাকাবাসী ভোগ করছি। জেলা বিএনপি নেতা মাজহারুলহক মাহফুজ বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে কুমিল্লা-১ আসনের পাশাপাশি কুমিল্লা-২ আসন (হোমনা-তিতাস) থেকেও আমরা জাতীয় নেতা বিএনপির নীতি নির্ধারক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে প্রার্থী হিসেবে চাই। তাঁকে ছাড়া এসনটি ধরে রাখা কঠিন হবে। নেতা তিতাস উপজেলা বিএনপি সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সরকার বলেন, শুরু থেকেই ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে রাজনীতি করেছি, তিনি সবসময় আমাদের অভিভাবক, ্এখনো আমাদের দিকনির্দেশক। তিতাস উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারী ওসমান গনি ভূইয়া বলেন, আমাদের নেতা এমকে আনোয়ারকে হারিয়েছি মানে একজন উন্নয়নের দিকপাল ও জনপ্রিয় নেতাকে হারিয়েছি যা পূরণ হবার নয়। আমরা শোকে শোকাতুর। তবে আমরা নেতৃত্ব ও অভিভাবক শূন্য হইনি। আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির আরেক নীতি নির্ধারক উন্নয়নের কারিগর সাবেক মন্ত্রী ড. থন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি তিতাস বিএনপিরও অভিভাবক ছিলেন। আবারো তিনি আমাদের নেতৃত্ব দিবেন, অভিভাবক হবেন এমনই দাবি ও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের। তবে আগামী জতীয় নির্বাচনে হোমনা ও তিতাসে ড. খন্দকার মোশাররফ প্রার্থী হয়ে মরহুম এমকে আনোয়ারের বিগত দিনের যুগান্তকারী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবেন-এমনটি আশা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তিতাস উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মেহেদি হাসান সেলিম ভূইয়া বলেন, এখন আমাদের একটাই প্রানের দাবি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান নেতা উন্নয়নের স্বাপ্নিক পুরুষ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আমাদের অভিভাবক হয়ে এখানকার বিএনপির হাল ধরবেন এবং একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমাদের আসন থেকে প্রার্থী হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখের সাথি হয়ে পাশে থাকবেন। তিনি বলেন ড. মোশাররফের জন্ম না হলে দীর্ঘ অবহেলিত ও নানা দিক থেকে বঞ্চিত আমরা তিতাত উপজেলা পেতাম না। তিনি তিতাস উপজেলার প্রতিষ্ঠাতা। দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান ভুলু সিকদার বলেন, আসন্ন একাদশ নির্বাচনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্যার ব্যতীত কুমিল্লা-২ আসন ধরে রাখা অসম্ভব। ছাত্রদল সাবেক সভাপতি মনির হোসেন ভূইয়া বলেন, হোমনা ও তিতাস এখন আর অভিভাবক ও নেতৃত্ব শূন্য নেই। কুমিল্লার জনপ্রিয় নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. মোশাররফ স্যার আমাদের হাল ধরেছেন আমরা অভিভাবক পেয়েছি, নেতা পেয়েছি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস