ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশাল বহর নিয়ে জনগণের টাকায় দেশ-বিদেশে ঘুরছেন বলে দাবি করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, কিন্তু তাতে মানুষের কি লাভ হয়েছে। সরকার যতই তালবাহানা করুক, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।
শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন মান্না। বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, চাল, ডাল, তেল, কৃষি ও শিক্ষা উপকরণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনসহ যুগপৎ আন্দোলনের ১৪ দফা দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
গণতন্ত্র মঞ্চসহ যুগপৎ আন্দোলনে যারা আছে তারা কেউ এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না— উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক সময় অনেক ওয়াদা করেছেন কিন্তু কখনোই কথা রাখেন না। তার কথায় কারও আস্থা নেই। উনাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতেই হবে।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংগঠক মাসুদ রানাকে গত রাতে আশুলিয়ায় হামলা করে আহত করা হয়েছে। সারা দেশে মানুষকে হামলা-মামলা করে আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে চায়। কিন্তু মানুষের সামনে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করা ছাড়া উপায় নেই।
মানুষের কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই— দাবি করে তিনি বলেন, দেশের মানুষকে গ্যাস চেম্বারে তুলে রেখেছে। এই সরকার সারা দেশের মানুষকে বন্ধক রেখে তাদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে চায়। এদের পতন নিশ্চিত করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ক্ষমতার সুষ্ঠু বণ্টন নেই। গণতন্ত্র মঞ্চ স্পষ্ট করেছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা কার কাছে কতটা থাকবে কীভাবে বণ্টন হবে তার কাঠামো ঠিক করতে হবে। রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার না করলে আমাদের সংকটের সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সিস্টেম লস ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও নিত্যপণ্যের দাম অনেক সহনীয় পর্যায়ে থাকত। কিন্তু সরকার এই নিয়ন্ত্রণ করে না, কারণ সিস্টেম লসের নামে লুটপাট করে।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে, পাচার করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এমন পর্যায়ে গেছে সাধারণ মানুষের সংসার চালানো মুশকিল হয়ে গেছে। বিরোধী দলের আন্দোলন সংগ্রাম ব্যাহত করার জন্য সরকার সারাদেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি তৈরি করছে।
অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে আওয়ামী লীগকে আহ্বান জানান নুর।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়ছার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল পাটোয়ারী, জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন মন্টু, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এবি