দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৪ মার্চ। সে কারণে আবারও তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তার পরিবার। আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর এটি হবে সপ্তম আবেদন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক মুক্তির পর থেকে গত ৩ বছর ধরে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় থাকছেন খালেদা জিয়া। বাসায় অবস্থানকালে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ষষ্ঠবারের মতো বাড়ানো হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির শর্ত অনুযায়ী, মুক্ত থাকার সময়ে তাকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। এ সময় তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। এই শর্তগুলো মেনে এতদিন ধরে জীবনযাপন করছেন তিনি।
বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার বলেন, আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আছে। সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন পরিবার করা হয়। এটা গতানুগতিক বিষয়। তাই, এবারও উনার ভাই শামীম ইস্কান্দার আবেদন করবেন।
গত কিছুদিন ধরে খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে ফিরে আসা এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে তার অংশ নেওয়া নিয়ে নানামুখী বক্তব্য দিয়ে আসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা। কেউ বলছেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবে, কিন্তু দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, তাই দণ্ডিত ব্যক্তি হিসেবে তিনি নির্বাচনের অংশ নিতে পারবেন না।
এসব বিষয় নিয়ে বিএনপির নেতারা বলছেন, দলের পক্ষ থেকে বর্তমানে প্রথম চাওয়া হচ্ছে তার মুক্তি। এ মুহূর্তে তার মুক্তিই দলের কাছে প্রধান চাওয়া। তার মুক্তির ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যতে তার রাজনীতিতে ফিরে আসা। এরপর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার চিকিৎসকরা বলছেন, তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট সবগুলো পাওয়া গেছে। সেখানে তেমন খারাপ কিছু পাওয়া যায়নি। তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই। অর্থাৎ, মোটামুটি ভালো আছেন তিনি। নতুন করে শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি কিংবা নতুন কোনো রোগের উপসর্গ দেখা দেয়নি।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। উনার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই আছেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনি। গত বছরের নভেম্বরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। এরপর জুনে হাসপাতালেই ভর্তি হলে খালেদা জিয়ার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে এবং রিং বসানো হয়।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের নানা জটিলতার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। কিন্তু মুক্তির শর্তে কথা উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করে সরকার।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ