মাসের শুরুতেই বইমেলায় যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে। নানা কাজে কিছুতেই সময় হয়ে উঠে না। শনিবারে (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি ছেলে-মেয়ে জামা কাপড় পরে বইমেলা যাওয়ার জন্য তৈরি। পরে তাদের নিয়ে মেলায় গেলাম। অনেক বই কিনে দিলাম। বই পেয়ে ছেলে-মেয়ে খুশি। তাদের এ আনন্দ দেখে আমারও খুব ভালো লাগছে। নিজের ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ছে।
শনিবার সকালে অমর একুশে বইমেলায় গিয়ে এমন অনুভূতি প্রকাশ করেন ধানমন্ডির বাসিন্দা রোকন উদ্দিন। তিনি বলেন, গত বছরও বই মেলায় যাওয়ার জন্য ছেলে মেয়ে আবদার করেছিল। কিন্তু ব্যবসার ব্যস্ততার কারণে সময় হয়নি। বাচ্চাদের মা তাদের নিয়ে গিয়েছিলেন। এবার নিজে গিয়ে যে আনন্দ বা ভালোলাগা কাজ করেছে, পরবর্তীতে আমি নিজেই ছেলেমেয়ে বই মেলায় নিয়ে যাবো।
বাবার কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেয়ে নাদিয়া ইসলাম বলেন, আমি ধানমন্ডি কামরুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ি। আমার সহপাঠীদের অনেকেই বই মেলা থেকে বিভিন্ন লেখকের বই কিনেছে। প্রতিদিনই তারা নতুন বই নিয়ে ক্লাসে সহপাঠীদের সঙ্গে আলাপ করে। এখন আমরাও বই মেলা থেকে অনেকগুলো বই কিনেছি। আমাদেরও খুব আনন্দ লাগছে।
লালবাগের কাজি রিয়াজ উদ্দিন রোড থেকে মেয়েকে নিয়ে বই মেলায় বই কিনতে গেছেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, তার মেয়ে আজিমপুর গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বই মেলার শুরুতেও তারা মেলায় বই কিনেছেন। এখন আবার কিনবেন। বিভিন্ন স্টল ঘুরে বই দেখছেন। কয়েকজন লেখকের বইও তারা কিনেছেন বলে জানান।
অমর একুশে বই মেলার তৃতীয় শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকাল থেকেই মেলা প্রাঙ্গণ ছিল পাঠকে সরগরম। এ দিন মেলার দ্বার খোলে বেলা ১১টায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জনসমাগম। তবে আজ মেলায় শিশুদের বইয়ের স্টলগুলোতে প্রচুর ভিড় রয়েছে।
এছাড়া মেলার বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নে পছন্দের লেখকদের বই কিনে তাদের অটোগ্রাফ সংগ্রহে ছিল ভক্তদের ভিড়। কেউ কেউ আবার সেলফি তুলতেও ছিলেন ব্যস্ত। কোথাও কোথাও আবার সিরিয়াল দিয়ে নিতে হয়েছে অটোগ্রাফ। আজ মেলা চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
শিশুদের বই বিকি করে বইবাড়ি প্রকাশন। এ প্রকাশনের বিক্রয় কর্মী নাহিদ হাসান বলেন, বইমেলার প্রথম ১০-১২ দিন তেমন বেচাকেনা ছিল না। গত কয়েকদিন ধরে ভালোই বেচাকেনা চলছে। বিশেষ করে বাচ্চাদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। আজ মেলায় খুদে পাঠকই বেশি দেখা যাচ্ছে।
বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাংশে বসছে বই মেলা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তর অংশে বড় প্রকাশনির স্টল বেশি। এসব স্টলেও সকাল থেকে পাঠকদের আনাগোনা বাড়ছে। তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয় কর্মী মশিউর রহমান বলেন, সাধারণত শুক্রবার ও শনিবার বই মেলায় পাঠক বেশি থাকে। আজ অন্যান্য ছুটির দিনের তুলনায় পাঠক অনেকটাই বেশি দেখা যাচ্ছে। বিকেলে আরও বাড়বে। তখন বই বিক্রি আরও বাড়বে বলে আশা করি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ