শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মাগুরায় রেলপথ শিগগিরই চালু হবে : রেলমন্ত্রী যিনি দেশ বিক্রি করতে চেয়েছিল আপনি তো ওনারই সন্তান হেফাজত নেতা মামুনুল হক ডিবিতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত: আইজিপি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে স্কুলসামগ্রী বিতরণ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের জাল ভোট পড়লেই কেন্দ্র বন্ধ: ইসি হাবিব ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাস্ট্রা এয়ারওয়েজের চুক্তি স্বাক্ষর ইসলামী ব্যাংকের মাসব্যাপী ক্যাম্পেইন শুরু ডেপুটি গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশে বাধা নেই বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে ভারত ভ্রমণে তিনদিনের নিষেধাজ্ঞা ঢাবিতে বিষমুক্ত ফল নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন গোপালগঞ্জের সেপটিক ট্যাংকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ২ শ্রমিক নিহত দিল্লির তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে ভোট বর্জনই বিএনপির আন্দোলন: এ্যানি আফগানিস্তানে বন্যায় ৫০ জনের মৃত্যু করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১১ পশুর জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে বললেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাধীন সত্তা হারিয়েছে: ড. ফাহমিদা ৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের জুজুৎসু অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিউটন গ্রেপ্তার

আরও ৫ দিন থাকবে মাঝারি থেকে তীব্র শীত

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক
  • আপলোড সময় শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

চলমান শীত পরিস্থিতি নিয়ে কোনো সুখবর নেই। আরও অন্তত ৫ দিন মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকবে। যদিও ব্যারোমিটারে দেশের কোথাও মাঝারি বা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ নেই। শুধু তাই নয়, আগের দিন দেশের ৮ অঞ্চলে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও তা শুক্রবার ৫ অঞ্চলে নেমে আসে।

এদিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ছিল নওগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায়। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতে বিপর্যস্ত শ্রমজীবী মানুষ। গরম কাপড়ের অভাবে তারা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ছড়িয়ে পড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগব্যাধি।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) তথ্য অনুযায়ী, শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও আগামী ৫ দিন মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকবে দেশের উত্তর বা রাজশাহী-রংপুর বিভাগ, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল বা খুলনা বিভাগ এবং মধ্যাঞ্চল বা ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে। সিলেট-চট্টগ্রাম বিভাগে তাপমাত্রা তুলনামূলক ভালো থাকবে। বরিশাল বিভাগেও তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকবে।

বিএমডির আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও আবহাওয়ার কয়েকটি পরিস্থিতি মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। এরমধ্যে প্রথমেই আসে শীতল বাতাসের প্রবাহ। দেশের ভেতরে উত্তর বা উত্তর-পশ্চিমা বায়ু প্রবাহ বেশ। হিমালয় বা সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে আসা এই বায়ু প্রবাহ, যা শুক্রবার ঢাকায় ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার ছিল। দ্বিতীয় বড় কারণ হচ্ছে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়া। সাধারণত দিনের তাপমাত্রাকে সর্বোচ্চ বা রাতের তাপমাত্রাকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলা হয়। দিনে সূর্য কিরণ দিলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তখন রাতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের প্রকোপ যে বাড়ে, তা (শীত) দিনে সূর্যকিরণে কমে আসে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে হয় সূর্য আলো দিতে পারছে না, কিংবা খুবই কম সময়ের জন্য সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে। ফলে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শীতের অনুভূতি বেড়েই চলেছে। এছাড়া কুয়াশার প্রকোপ এবং বাতাসের আর্দ্রতাও শীত বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

এদিকে শীতের সঙ্গে প্রায় সারা দেশে কুয়াশার প্রকোপও অব্যাহত আছে। দুপুরের পর ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় সূর্যের মুখ দেখা যায়। কিন্তু রাত নামতেই দৃশ্যপট পালটাতে থাকে। সারা দেশে মাঝারি বা ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিএমডি। সংস্থাটি আরও বলছে, এই কুয়াশা দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সড়ক ও নৌপথের যানবাহন সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। কেননা, কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কম থাকে।

শুক্রবার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি, যা আগে ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর তা বুধবার ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে শুক্রবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার ছিল ১৭ ডিগ্রি। অর্থাৎ, ঢাকায় সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য দাঁড়ায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাধারণত ১০ ডিগ্রির কম পার্থক্য শীতের অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঢাকায় শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শীতের অনুভূতি ছিল অনেক বেশি।

প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

গাইবান্ধা : সকাল থেকে কুয়াশা না থাকলেও ছিল হিমেল ঠান্ডা বাতাস। শীত নিবারণে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিতে দেখা গেছে মানুষজনকে। সকাল সাড়ে ৯টায় গাইবান্ধার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনেরপাড়া গ্রামের জনি মিয়া কাজ করেন শহরের একটি প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, ভোরে বাড়ি থেকে সাইকেলে শহরের কর্মস্থলে আসতে হাত ও পা ঠান্ডায় অবশ হয়ে যায়।

টেকেরহাট (মাদারীপুর) : শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি গ্রামের কৃষক সফিক বেপারি বলেন, প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও কাজে নামতে হয়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, প্রচণ্ড শীতে মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাই তালিকা করে অসহায় মানুষদের মধ্যে কম্বল দেওয়া হচ্ছে।

চান্দিনা (কুমিল্লা) : উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখে গেছে শ্রমজীবী মানুষকে। পৌরসভার কচুয়ারপাড় গ্রামের কৃষক আনোয়ার বলেন, ঠান্ডা বেশি। কৃষি জমিতে কাজ করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) : ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কিরণ রায় নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের চলাইরপাড় গ্রামের কৃজ্ঞ কান্ত রায়ের ছেলে। বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কনকনে শীতের মধ্যে তিনি ক্ষেতে ইরি-বোরো ধান রোপণ করে ছিলেন।

রাজবাড়ী : দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় দৌলতদিয়া বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।

কচুয়া (চাঁদপুর) : অটোরিকশাচালক বাবুল হোসেন জানান, ঠান্ডার কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের না হওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে খুবই বিপাকে আছি। কৃষক আব্দুল জলিল ও রহিম বলেন, শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জমিতে হালচাষ করতে পারছি না।

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) : উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী, চরমোহনা, উত্তর আবাবিল, দক্ষিণ চরআবাবিল ইউনিয়নের এই চরগুলোতে প্রায় অর্ধলাখ মানুষের বসবাস। মেঘনার ভাঙনের শিকার হাজারো পরিবার অস্থায়ীভাবে ঘর তৈরি করে কোনো রকম বসবাস করছেন চরে। চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া এলাকার বাসিন্দা খোকন মাঝি বলেন, চরের বেশিরভাগ মানুষ জেলে, দিনমজুর ও রিকশাচালক। শীতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা।

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) : উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান খান জানান, শীতে শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসক-নার্সরা সার্বক্ষণিক গুরুত্বসহকারে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। ডায়রিয়া রোগীর জন্য পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন ও ওষুধ মজুত রয়েছে।

শেরপুর : হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার খাইরুল কবির সুমন জানান, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমেনিয়াসহ নানা রোগে ৮০ জন শিশুসহ প্রায় ২শ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বাংলা৭১নিউজ/আরএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com