বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
যাত্রাবাড়ীতে বিপন্ন প্রজাতির হনুমান পাচারের সময় গ্রেপ্তার ২ ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করিয়েছিলেন টিউলিপ: রিপোর্ট কামরুল-পলকসহ ৫ জন নতুন মামলায় গ্রেফতার বেনজীরের স্ত্রী ও মেয়ের আয়কর নথি জব্দের আদেশ ভৈরব থানার লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার অবশেষে মায়ের বুকে ছেলে পোষ্য কোটা বাতিলসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন বাঘাবাড়ী নৌবন্দর নাব্য সংকট, ভিড়তে পারছে না জাহাজ নিয়োগ দুর্নীতি : ওয়াসার তাকসিমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচন সংস্কারে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের ১১ প্রস্তাব লন্ডনে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া ট্রাম্পের মানচিত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অঙ্গরাজ্য কানাডা ২০২৪ সালে সড়কে নিহত ৭ হাজারের বেশি : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযানের হুমকি তুরস্কের টিসিবির নতুন চেয়ারম্যান ব্রি. জেনারেল ফয়সাল আজাদ একনেকে ৪ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন ঢাকায় ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেন ডিএমপি কমিশনার বিডিআরের নিরপরাধ সদস্যদের মুক্তির দাবিতে পদযাত্রায় পুলিশের বাধা রায়েরবাজারে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার ফেলানীর পরিবারের দায়িত্ব নিলেন আসিফ মাহমুদ

অসহায় নারীদের আশ্রয় ছিলেন যে রাজকুমারী

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

রাজকুমারী তিজকার খাতুন ছিলেন সুলতান রোকনুদ্দিন বাইবার্সের কন্যা এবং মিসরের ইতিহাসে একজন অনন্য সাধারণ মুসলিম নারী। যিনি তাঁর ধন-সম্পদ সাধারণ মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করেছিলেন। বিশেষত তিনি শিক্ষা, নারী শিক্ষা, অসহায় নারীদের আশ্রয় দান ও চিকিৎসাকেন্দ্র নির্মাণে বিশেষ অবদান রাখেন।

তাঁর পিতা সুলতান মালিক জহির রোকনুদ্দিন বাইবার্স ছিলেন ইতিহাসের অন্যতম সফল মুসলিম শাসক ও সাহসী বীর সেনাপতি।

তিনি সপ্তম ক্রুসেড যুদ্ধে ইউরোপের সম্মিলিত বাহিনীকে এবং আইনে জালুতের যুদ্ধে মোঙ্গলীয় বাহিনীকে পরাজিত করেন। উভয় যুদ্ধে তাঁর বিজয় ইতিহাসের বাঁক বদলে দিয়েছিল। যদিও তিনি চতুর্থ মামলুক শাসক ছিলেন, তবু তাকেই মামলুক সাম্রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।

নারী আশ্রয়কেন্দ্র : ৬৮৪ হিজরিতে সুলতান বাইবার্স ইন্তেকাল করার পর রাজকুমারী তিজকার খাতুন জনকল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর জনকল্যাণমূলক কাজগুলোর শীর্ষে ছিল নিরাশ্রয়, অসহায় ও বৃদ্ধা নারীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা। তারা তালাকপ্রাপ্তা হওয়া, অভিভাবক বা স্বামীর নিরুদ্দেশ ও মৃত্যু—যে কারণে পরিবারহীন হোক না কেন এই আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পেত। তাঁর এই আশ্রয়কেন্দ্র অসহায় ও বৃদ্ধা নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

আশ্রয় পেত সবাই : ঐতিহাসিকরা তাঁর আশ্রয়কেন্দ্রকে ‘রিবাত’ নামে উল্লেখ করেছেন। রিবাত অর্থ ঘাঁটি। রিবাত উত্তর আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোর সীমান্তবর্তী এমন ঘাঁটিকে বলা হতো, যেখানে একই সঙ্গে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জ্ঞানচর্চা করত, পীর ও তার মুরিদরা আধ্যাত্মিক সাধনা করত এবং সৈনিক সামরিক অনুশীলন করত। সম্ভবত নারী আশ্রয়কেন্দ্রে সব ধরনের নারীদের আশ্রয় মেলায় এটাকে রিবাত নাম দেওয়া হয়েছিল। একবার আশ্রয় পাওয়ার পর বিয়ে, সক্ষমতা লাভ বা মৃত্যু পর্যন্ত নারীরা রিবাতে অবস্থান করতে পারত।

সম্পদ ওয়াকফ করা : নারীদের আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার জন্য বিপুল পরিমাণ সম্পদ ওয়াকফ করেন তিজকার খাতুন। আর তিনি তা করেছিলেন যেন তাঁর মৃত্যুর পরও আশ্রয়কেন্দ্রটি যথানিয়মে পরিচালিত হয় এবং আশ্রয় নেওয়া নারীরা আশ্রয়হীন হয়ে না পড়ে। ঐতিহাসিকরা বলেন, তিনি এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ ওয়াকফ করেছিলেন যে তাঁর মৃত্যুর পর বহু আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয়।

আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠদান : আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া নারীদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে শাহজাদি তিজকার খাতুন সময়ের শ্রেষ্ঠ বিদ্যান নারীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। নারীরা এখানে কোরআন, হাদিস ও ফিকহের (ইসলামী আইন) উচ্চতর জ্ঞান লাভ করত। এমনকি তারা চাইলে পবিত্র কোরআন হিফজ করার সুযোগ পেত। পাঠদানকারী নারীদের মধ্যে সর্বপ্রথম ছিলেন জয়নব বিনতে আবিল বারাকাত বাগদাদিয়া (রহ.)। ৭৯৬ হিজরিতে ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তিনি এখানে পাঠদান করেন।

পাঠদানকারী নারীদের মধ্যে পাণ্ডিত্যের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন ফাতিমা বিনতে আব্বাস বাগদাদিয়া (রহ.)। জ্ঞানে-গুণে অগ্রণী এই নারী আধ্যাত্মিক সাধনায়ও সাফল্য অর্জন করেন। ইমাম জাহাবি (রহ.) একবার রিবাতে এসে ফাতিমা বিনতে আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং আল্লামা ইবনে তাইমিয়া (রহ.) এই নারীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

আল্লাহ এই মহীয়সী নারীর কবরকে শীতল করুন। আমিন

ইসলাম হিস্টোরি ডটকম অবলম্বনে

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com