ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং ধেঁয়ে আসার খবরে বাগেরহাটের উপকূলবর্তী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জেলার শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় মাইকিং করে দুর্গত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে বলা হচ্ছে। জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৪৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে দুই লাখ আট হাজার ৪৩০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।
একই সাথে মানুষ তাদের গবাদী পশুও আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারবেন।
বাগেরহাটে এখন মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে দমকা বাতাস হচ্ছে। আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টায় ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করেছে মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে। বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্মঞ্চলে এরমধ্যে পানি জমতে শুরু করেছে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের দুবলারচর এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করেছে। মোংলা বন্দরে জাহাজে মালামাল উঠানামার কাজ বন্ধ রয়েছে। বন্দরের সব ধরনের নৌযান নিরাপদে রাখা হয়েছে।
এদিকে বাগেরহাটে নদী পাড়ের ৩০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন এলাকায় নদী পাড়ের ১০০ কিলোমিটার বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হানলে এবং জলোচ্ছাস হলে বাগেরহাটে সাদাসোনা খ্যাত চিংড়ি, আমন ধান, বিভিন্ন ফসল, এবং ভেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্ষতির আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, ঘুর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর মোংলা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করায় জেলার উপকূলবর্তী ৪টি উপজেলায় মাইকিং করে দুর্গত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য বলা হচ্ছে। বিকালের মধ্যে দুর্গত এলাকার সব মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে। শুকনা খাবার প্রস্তুত, মেডিকেল টিম গঠন, উদ্ধারকারি টিমসহ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মূসা জানান, বন্দরে জাহাজে মালামাল উঠানামার কাজ বন্ধ রয়েছে। বন্দরের সব নৌযান নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে।
সুন্দরবনের দুবলা ফরেস্ট ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলিপ কুমার মজুমদার জানান, বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের মধ্যে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ