সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) লেনদেনের প্রথমদিকে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান প্রবণতা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। মূলত শেষ ৩০ মিনিটের লেনদেনে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় এ পতন হয়েছে।
অবশ্য দরপতনের মধ্যেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বরের পর একদিনে এতো লেনদেন ডিএসইতে আর দেখা যায়নি। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বাজারটিতে দুই হাজার ৮৬৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
এদিন লেনদেনের শুরুতেই বড় লেনদেনের আভাস পাওয়া যায়। লেনদেন শুরুর মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে ডিএসইতে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। একই সঙ্গে উত্থান হয় সবকটি মূল্যসূচকের। শেষ পর্যন্ত লেনদেনের এ ধারা অব্যাহত থাকলেও সূচক উল্টো পথে হেঁটেছে।
ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়ে যায়। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে দিনের লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম সাড়ে ৩ ঘণ্টাজুড়ে ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে সূচক। এতে দুপুর ১টায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় ৭০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
এখান থেকেই বদলে যেতে থাকে বাজারের চিত্র। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে হুড়মুড় করে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে সূচকের বড় উত্থান দেখতে দেখতে ঋণাত্মক হয়ে যায়। লেনদেনের শেষদিকে দেখা দেওয়া এমন ঝড়ে একদিকে যেমন সূচকের পতন হয়েছে, একই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
এতে দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৬টির। আর ১৪৫টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৪২ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ৩২৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৫৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- একমি ল্যাবরেটরিজ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, ইস্টার্ন হাউজিং, শাহজিবাজার পাওয়ার, শাইনপুকুর সিরামিক এবং ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ১০৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ