বাংলা৭১নিউজ, নজরুল ইসলাম, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: ঈদ-উল আযহার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই সময়ে পশুর যতেœ ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজবাড়ীর পশু খামারীরা। ঈদ-উল আযহার জন্য রাজবাড়ীতে এবার ২৭৯ টি খামারে মোটাতাজা করা হচ্ছে ৮৬৪৭ টি বিভিন্ন জাতের গরু, ২৭৫ টি খামারে প্রস্তুুত হচ্ছে ৭৩৩৯ টি ছাগল। এছাড়াও ৭৪ টি খামারে ১২০ টি ভেড়া রয়েছে। এবার পশু খাদ্যের দাম বেশি ও ভারতীয় পশু আমদানির ভয়ে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছে খামারীরা।
জেলা প্রানী সম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে জানা যায়, বরাবরের চেয়ে এ বছর রাজবাড়ীতে প্রায় দুই হাজার বেশি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুুত করা হচ্ছে এর মধ্যে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় প্রস্তুত হচ্ছে ২৩০৯ টি বিভিন্ন প্রজাতির গরু, ১০৪৩ টি ছাগল। পাংষা উপজেলায় প্রস্তুুত হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ১৩৬৯ টি গরু, ১৬২০ টি ছাগল ও ৫৫ টি ভেড়া। বালিয়াকান্দি উপজেলায় প্রস্তুুত হচ্ছে ১৪৫৪ টি গরু, ১১৯৬ টি ছাগল ও ৪৭ টি ভেড়া। গোয়ালন্দ উপজেলায় ১৬২০ টি গরু, ৯৩৬ টি ছাগল, ১৮ টি ভেড়া। কালুখালী উপজেলায় ১৮৯৫ টি গরু, ২৫৪৪ টি ছাগল। সব মিলিয়ে জেলায় এবার ১৬১০৬ টি ঈদুল আযহার জন্য প্রস্তুুত করা হচ্ছে।
রাজবাড়ী জেলা সদরের আলীপুর ইউনিয়নের আহলাদিপুর গ্রামের খামারী আবুল কালাম আজাদ ( কহিনুর ) জানান, প্রায় ১২ বছর পুর্বে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে মাত্র তিনটি গরু নিয়ে একটি খামার গড়ে তোলেন। ওই বছর তার ভাল লাভ হওয়ার কারনে পরের বছর প্রানি সম্পদ কার্যালয় থেকে পরামর্শ নিয়ে গড়ে তোলেন এপিসোড এগ্রো লিমিটেড নামে একটি গরুর খামার। বর্তমানে তার খামারে ২৭৫ টি বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ টি গরু ঈদুল আযহার জন্য প্রস্তত করছেন।
কহিনুর আরো জানান, তার খামারের গরু গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে ফ্রিজিয়ান জাতের গরু। ফ্রিজিয়ান জাতের গরু বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন এই জাতের গুরু ২ বছরের প্রায় ৫০০ কেজি মাস দিয়ে থাকে বাজার মুল্য পাওয়া যায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা যে কারনে তাদের লাভ বেশি হয়।
খামার পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত উজ্জ্বল জানান, প্রতিটি গরুকে প্রতিমাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা চালের গুরা, খর, গুর এবং ঘাস খাওয়াতে হয় যে খরচ আগের বছরগুলো ছিল ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।
গরু মোটা তাজা করনে কোন প্রকার ঔষুধ ব্যাবহার করা হয় কিনা খামার মালিক শাহিনুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তাদের খামারে থাকা গরুগুলোকে চিটাগুর খাওনোর ফলে বেশি মোটা তাজা হচ্ছে কোন প্রকার স্টরওয়েড বা মোটা তাজাকরন ঔষুধ ব্যবহার করা হয় না।
খামার মালিকরা আরো জানান, এবার গরুর খাদ্য দ্রব্যের দাম বেশি, তার উপর যদি ভারত থেকে গরু আমদানি করা হয় তবে তাদের লোকসান গুনতে হবে। সেই সাথে পথে বসবে অনেক খামারী।
রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিন্টু জানান, রাজবাড়ীতে দিনদিন পশুর খামারের সংখ্যা বেড়েই চলছে, এতে বেকারত্ব দুর হচ্ছে। সরকারি যদি সহজ সর্তে ধৃন দেয় তবে এই এলাকার খামারীরা আরো লাভবান হবেন এবং দেশের মাংসের চাহিদা পুরনে ভুমিকা রাখবে।
জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আবু বক্কার সিদ্দিক জানান, জেলা প্রানি সম্পদ অধিদপ্তর থেকে জেলার খামারীদের বিভিন্ন প্রকার প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়েছে। গরুর খাদ্যের জন্য নেপিয়ার এবং জাম্বু ঘাসের চাষ পদ্ধতি শিখানো হয়েছে। বেশি লাভ পাওয়ায় রাজবাড়ীতে ব্রাহামান এবং ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর চাহিদা বেশি। এই দুই জাতের গরু অল্প সময়ে বেশি হৃষ্ট পুষ্ট হয়। এছারাও গবাদী পশুর রোগ নির্নয়সহ পশুর চিকিৎসা দেওয়া হয় প্রানি সম্পদ কার্যালয় থেকে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস