সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে টানা বেড়ে চলার পর জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গত জুলাই মাসে বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীন ও জাপানে শিল্পোৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে তেলের চাহিদা কমেছে। অদূর ভবিষ্যতে চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা কম থাকায়ই জ্বালানি তেলের দাম কমেছে বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকরা।
বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকসের হিসাবে গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাব্লিউটিআই অপরিশোধিত (ক্রুড) তেলের দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল হয় ৯৩.৩০ ডলার।
এর পাশাপাশি লন্ডনের ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ৪ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল হয় ১০০.১৫ ডলার।
চলতি সপ্তাহেই বিশ্বের তেল রপ্তানিকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপেক ও অন্য বড় তেল উৎপাদনকারী দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বিনিয়োগকারীরা। বৈঠকে তেলের সরবরাহে সামঞ্জস্য আনা নিয়ে আলোচনা হবে। এর আগে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমল।
বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ চীনে গত জুনে উৎপাদনের গতি বেড়েছিল। কিন্তু দেশটিতে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় লকডাউন ঘোষণা করায় জুলাইয়ে প্রত্যাশিত উৎপাদন হয়নি। উল্লেখ্য, চীন করোনা নিয়ন্ত্রণে ‘শূন্য সংক্রমণ’ নীতি অনুসরণ করে আসছে।
যুক্তরাজ্যের আর্থিক তথ্য ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মার্কিটের ম্যানুফ্যাকচারিং ম্যানেজারস ইনডেক্সে (পিএমআই) গত জুনে চীনের পয়েন্ট ছিল ৫১.৭। গত ১৩ মাসের মধ্যে জুনে উৎপাদন ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু জুলাইয়ে এই সূচক কমে হয় ৫০.৪, যা প্রত্যাশার চেয়ে বেশ কম। জাপানেও উৎপাদন কমেছে। গতকাল প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, জাপানে গত ১০ মাসের মধ্যে জুলাইয়ে সবচেয়ে কম উৎপাদন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষক টিনা টেং জানান, তেলের দাম কমার প্রথম ও মূল কারণ চীনের উৎপাদন হতাশাজনকভাবে কমে যাওয়া। তিনি বলেন, ‘তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, চীনের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আশ্চর্যজনকভাবে সংকুচিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, লকডাউন থেকে চীনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম প্রত্যাশা অনুযায়ী ইতিবাচক না-ও হতে পারে। এতে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা কমেছে। ’
সূত্র : রয়টার্স
বাংলা৭১নিউজ/এমকে