বাংলা৭১নিউজ, শেরপুর: শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে চলতি বোরো মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বছর বোরো মৌসুমে উপজেলার ৬৯টি চালকল মালিকের মধ্যে মাত্র ২১ জন চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এ বছর বোর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন। সরকারিভাবে বোরো সংগ্রহ অভিযানে সাড়া না দেওয়া ও সরকারের আপদকালীন মজুদে সহযোগিতা না করায় এ উপজেলায় চুক্তিবদ্ধের বাহিরে থাকা ৪৮টি চালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২২ মে আনুষ্ঠানিকভাবে এ উপজেলায় চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এ কার্যক্রম।
দু’দফা সময় বাড়িয়ে উপজেলার ৬৯টি চালকলের মধ্যে মাত্র ২১টি চালকলের মালিক সরকারের সঙ্গে চাল দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী এসব চালকল মালিক সরকারি গুদামে ৬’শ ৩১ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করবেন। এতে চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার ব্যাহত হওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত গুদামে চাল সংগ্রহ হয়েছে ৪’শ ৮১ মেট্রিক টন।
উপজেলা চালকল মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সরকার এ বছর বোরো চাল সংগ্রহের মূল্য নির্ধারণ করেছেন কেজি প্রতি ৩৪ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে মোটা চালের দাম প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৩৯ টাকা। অর্থাৎ বাজার মূল্যের চেয়ে সরকারের চাল সংগ্রহ মূল্য কম হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির কারণে চালকল মালিকেরা সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন।
জায়দা চালকলের মালিক মো. শাহিন আলম বলেন, তাদের চালকলের সুনাম ও মর্যাদা রক্ষার জন্য তারা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু এতে লোকসান দিয়ে গুদামে চাল সরবরাহ করতে হচ্ছে। চালের সংগ্রহ মূল্য আরো বাড়ানো প্রয়োজন।
উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম মিয়া বলেন, জনস্বার্থে আপদকালীন মজুদ বাড়াতে লোকসান মেনে নিয়ে তারা সরকারকে সহযোগিতা করছেন। অপরদিকে সরকার-নির্ধারিত ক্রয়মূল্যের সঙ্গে চাল উৎপাদন খরচের মূল্য বেশি হওয়ায় অধিকাংশ চালকল মালিক সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করতে চুক্তিবদ্ধ হননি। অধিকাংশ চালকল চুক্তিবদ্ধ না হওয়ার পেছনে বাজার দরের চেয়ে সরকারি মূল্য কম ও চালের উৎপাদন খরচ না উঠার কারণকে দায়ী করছেন।
এসব বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান খান বলেন, খাদ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, যেসব চালকল আমাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়নি, ওইগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কালো তালিকাভুক্ত চালকলগুলো আগামী দুই বছর সরকারের সঙ্গে চাল সরবরাহের জন্য কোনো চুক্তি করতে পারবেন না বা কোন প্রকার সুবিধা পাবেনা।
বাংলা৭১নিউজ,