বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
মালয়েশিয়ায় সড়কে প্রাণ গেলো বাংলাদেশির আজই কারামুক্ত হবেন ডেসটিনির রফিকুল আমীন-হোসেন, আশা আইনজীবীর ট্রাম্পকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাড়ে ৫ কোটি লিটার ভোজ্যতেল কিনছে সরকার টিউলিপ ও পুতুলের বিরুদ্ধে আরও দুর্নীতির অনুসন্ধান নির্বাচনের আগে ট্রায়াল কোর্টে বিচারের আশা আসিফ নজরুলের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য মাসে ৩ হাজার টাকা দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সামনে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিশন গঠন ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংস্কার প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা গাজীপুরে দিনব্যাপী ‘মার্সেল ডিস্ট্রিবিউটর সামিট-২০২৫’ মারা গেছেন সাবেক আইজিপি আজিজুল ৩ কোটি টাকা মূল্যের শো-রুমের গাড়ি নিয়ে লাপাত্তা : গ্রেপ্তার ৫ দেশের ইতিহাসে প্রথম গোয়েন্দা জাহাজ উন্মোচন করল ইরান প্রাথমিকে শিক্ষক বদলি শুরু, চলবে মার্চ পর্যন্ত ক্যান্সার আক্রান্ত গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নেওয়ার বিধান বাতিলের প্রস্তাব ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু তাবলিগ জামাতের সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা বান্দরবানে ৭ শ্রমিককে অপহরণ

‘আত্মীয়-স্বজনরা ভাত দিলে খাই না দিলে খেতে পাইনা’

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০১৭
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, রবিউল কবির মনু, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ আমরা মাছ ধরতে যেতে পারছি না। আমরা এখন সবাই বসে সময় কাটাই। সকালে মুড়ি খেয়েছি, চিড়া ভিজিয়ে খেয়েছি। রাত্রে রুটি খেয়েছি। আত্মীয়-স্বজনরা ভাত দিয়ে গেলে তাই খাই, না দিলে খেতে পাইনা্। আমাদের এই কষ্ট আর সহ্য হচ্ছে না। কথাগুলো বললেন, গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (৪৫) ও রতন চন্দ্র দাস (৩৫)।

গত ১২ জুলাই দিবাগত গভীর রাতে নদীর ধারে বেঁধে রাখা তাদের মাছ ধরার দুইটি শ্যালোইঞ্জিনচালিত নৌকায় মাটি ধসে পড়ে নদীতে ডুবে যায়। নৌকায় মাছ ধরার দুইটি বেড় জালও ছিল। নৌকা দুইটির সাথে মাছ ধরায় সহযোগিতা করতো আরও ১২জন জেলে। এসব পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় ৬৫জন। ফলে এসব পরিবারের সদস্যরা এখন খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

নৌকা দুইটির অবস্থান শনাক্ত করা গেলেও টাকা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অভাবে তীরে টেনে তুলতে পারছেন না তারা। বেশি দেরী হলে নৌকা দুইটি নদীর গভীরে হারাতে পারে ও নৌকা দুইটির ক্ষতি হওয়ার আশংকা করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রক্ষপুত্র নদের পানি বাড়ার সাথে সাথে গ্রামটিতে ভাঙ্গন শুরু হয়। এতে করে একটি স্কুলসহ অনেক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ও রতন চন্দ্র দাসের স্ত্রীরা ও ছেলেমেয়েরা বাড়ির উঠোনে বসে আছে। তাদেরও বসতবাড়ির জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর তারা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে। সেই ঘরের কাছেও এখন ভাঙ্গন এসে পড়েছে।

রতন চন্দ্র দাস বলেন, নদীতে মাছ ধরতে যেতে না পেরে আমাদের ২১টি পরিবারের প্রায় ১০০জন মানুষ কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। একদিকে নদী ভাঙ্গন অন্যদিকে বেকার বসে আছি সবাই। দোকানে বাকী ও ঋণ করে চলছি। এখন কি করবো তা ভেবে পাচ্ছি না।

কৃষ্ণ চন্দ্র দাস বলেন, নদীতে নৌকা দুইটি ডুবে গিয়ে আমাদের প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। নৌকা দুইটির অবস্থান শনাক্ত করতে পেরেছি। কিন্তু টাকা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অভাবে তীরে টেনে তুলতে পারছি না। বেশি দেরী করলে হয়তো নৌকা দুইটি নদীর বেশি গভীর চলে যাবে। তখন খুঁজে পাওয়া যাবে না।

কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের সাথে নদীতে মাছ ধরেন রনজিত কুমার দাস (৪৫)। তিনি বলেন, নৌকা ডুবে যাওয়ার পর থেকে মাছ ধরতে যেতে পারছি না। এখন মা, ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কোন সহযোগিতাও পাইনি কারও কাছ থেকে। সুকুমার চন্দ্র দাস (৩৫) বলেন, জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন ওই নৌকা ও বেড় জাল ছিল। সেটাও মাটি ধসে নদীতে ডুবে গেল। এখন কোন কাজ করতে পারছি না। বাবা-মা, ভাই-বোনদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি।

এ ছাড়া ওই একই দিন রাতে নদীর ধারে রাখা লাল মোহন দাসের মাছ ধরার বেড় জাল মাটি ধসে নদীর ¯্রােতে ভেসে যায়। তার সাথেও কাজ করতো আরও ৬ জন জেলে। তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যাও প্রায় ৩৫ জন। তারাও মাছ ধরতে যেতে না পেরে খেয়ে না খেয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে।

কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মতিয়ার রহমান বলেন, নদীর পাড়ে রাখা নৌকা দুইটির উপরে মাটি ধসে পড়ে ডুবে গেছে। নৌকা দুইটি উদ্ধারে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলবো।

কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জাকির মুঠোফানে বলেন, নৌকা দুইটি ডুবে যাওয়ার কথা শুনেছি। এসব পরিবারের কয়েকজনকে ১০ কেজি করে চাল ও নগদ ১ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। আমি ওই গ্রামে যাচ্ছি, নৌকা দুইটি উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।

গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম সরকার মুঠোফানে বলেন, নৌকা দুইটি নিখোঁজ থাকলে তবে ডুবুরি দিয়ে খুঁজে দেওয়া হতো। কিন্তু তীরে টেনে তুলে আনার কোন সরঞ্জামাদি আমাদের নেই।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com