আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও (১৭ মে) দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার। এতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। সূচকের পতনের সঙ্গে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
ডিএসইর পাশাপাশি দেশের অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচকেরও পতন হয়েছে। সেইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পারিমাণ। পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের ১০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এরপরেই বদলে যায় বাজারের চিত্র। বাছ-বিচারহীনভাবে দাম কমতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের। ফলে দেখতে দেখতে বড় পতন হয় মূল্যসূচকের।
দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ১১২ পয়েন্ট পড়ে যায়। এসময় এক ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। অর্থাৎ ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। তবে লেনদেনের শেষ আধাঘণ্টায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার হার কমে। এতে বড় পতন থেকে রক্ষা পায় সূচক।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৪০৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার। এ পাঁচদিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ২৯৫ পয়েন্ট। এমন টানা পতনের কারণে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচকটি গত বছরের ২৭ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৫টির। আর ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ২৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সেই হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৪৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিনপুকুর সিরামিকের ৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্যালভো কেমিক্যাল, ফু-ওয়াং সিরামিক, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ফার্মা, ফরচুন সুজ, এসিআই ফরমুলেশন এবং ইউনিক হোটেল।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৯৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৬টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ